Thursday, March 19, 2015

খলীফা হওয়ার শর্তাবলী

খলীফা হওয়ার শর্তাবলী

source: returnofislam.blogspot.com
(নিম্নোক্ত প্রবন্ধটি বিশ্বখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেম শাইখ আতা ইবনু খলীল আল-রাশতা কর্তৃক লিখিত 
‘আজহিজাতু দাওলিাতিল খিলাফাহ - ফিল হুকমি ওয়াল ইদারাহ’ বইটির বাংলা অনুবাদ এর একাংশ হতে গৃহীত)

একজন ব্যক্তিকে খলীফা পদের জন্য এবং বাই'য়াতের জন্য বৈধভাবে উপযুক্ত হতে হলে তাকে সাতটি শর্ত পূর্ণ
করতে হবে। এ সাতটি শর্ত অবশ্যই পূরণীয়। যদি এদের মধ্যে কোন একটির ব্যত্যয় ঘটে, তাহলে তিনি খলীফার পদের
জন্য অনুপযুক্ত হবেন।

অবশ্য পূরণীয় শর্ত সমূহ:

প্রথমত: খলীফা অবশ্যই মুসলিম হবেন।

কাফেরদের জন্য এ পদ সংরক্ষিত নয় এবং তাকে মানতেও মুসলিমরা বাধ্য নয়। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন:

"আর মুসলিমদের উপর কাফেরদের কর্তৃত্ব করার কোন পথই আল্লাহ অবশিষ্ট রাখেননি।" [সূরা আন-নিসা: ১৪১]

শাসন করা হল শাসিতের উপর শাসকের শক্তিশালী অবস্থান। সে কারণে ‘লান’ (কখনওই না) শব্দটি দিয়ে মুসলিমদের
উপর কাফিরদের কর্তৃত্ব করবার (খলীফা বা অন্য কোন শাসন সংক্রান্ত পদ) ব্যাপারটি সন্দেহাতীত ভাবে
নিষিদ্ধ (categorical prohibition) হিসেবে দেখানো হয়েছে। এ কারণে কাফেরদের শাসন মেনে নেয়া মুসলিমদের জন্য
হারাম।

যেহেতু খলীফা একজন কর্তৃত্বশীল ব্যক্তি এবং আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাকে মুসলিমদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল
করেছেন সেহেতু তাকে মুসলিম হতে হবে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন,

"হে ঈমানদারগণ; আলাহ্‌'র নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা 
কর্তৃত্বশীল (উলীল আমর) তাদের" [সূরা আন-নিসা: ৫৯]

তিনি (আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা) আরও বলেন,

"তারা যখনই কোন প্রকার জননিরাপত্তা সংক্রান্ত কিংবা ভীতিকর খবর শুনতে পায়, তখনি তা সর্বত্র 
প্রচার করে দেয় অথচ তারা যদি তা রাসূল ও তাদের উপর কর্তৃত্বশীল ব্যক্তিদের (উলীল আমর) কাছে 
পৌছে দিত।" [সূরা আন-নিসা: ৮৩]

উলীল আমর শব্দ দুটি সব সময় মুসলিমদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন অর্থে এদের ব্যবহার করা হয়নি।
এটা প্রমাণ করে যে, তাদেরকে (কর্ততৃশীল বা উলীল আমর)) সব সময় মুসলিম হতে হবে। যেহেতু খলীফা পদ হচ্ছে সর্বোচ্চ
কর্তৃত্বশীল পদ এবং তিনিই অন্যান্যদের কর্তৃত্বশীল পদে নিযুক্ত করবেন, যেমন: তার সহকারীগণ, ওয়ালী, আমীল প্রমুখ,
সেহেতু তাকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে।

দ্বিতীয়ত: খলীফাকে অবশ্যই পুরুষ হতে হবে।

মহিলাদের খলীফা হবার কোন বিধান নেই অর্থাৎ কোন নারী খলীফা হতে পারবেন না। বুখারী থেকে বর্ণিত যে, রাসূল
(সা) যখন শুনলেন পারস্যের জনগণ কিসরার কন্যাকে তাদের রাণী হিসেবে নিযুক্ত করেছে, তখন তিনি (সা) বললেন,

"যারা নারীদেরকে শাসক হিসেবে নিযুক্ত করে তারা কখনওই সফল হবে না।"

যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সা) এই হাদীসে যারা তাদের বিষয়সমূহ নিষ্পত্তির জন্য নারীদের শাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে
তাদের সফল না হবার ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, সেহেতু তিনি এ ব্যাপারটি নিষিদ্ধ করেছেন। অর্থাৎ যারা নারীদের
তাদের বিষয়াবলী নিষ্পত্তির জন্য শাসক হিসেবে নিযুক্ত করবে তাদেরকে সাফল্য পরিত্যাগ করবে এবং এখানে 'সাফল্য
পরিত্যাগ করবে' শব্দের ব্যবহার হবার কারণে এ নিষেধাজ্ঞাটি অকাট্য (Decisive) বলে গণ্য হবে, অর্থাৎ একজন
মহিলাকে ওয়ালী হিসেবে নিয়োগ দান হারাম। সে কারণে নারীদের জন্য যে কোন শাসকের পদ অলংকৃত করা সেটি
খলীফা কিংবা অন্য কিছু হোক সেটা হারাম। এর কারণ হচ্ছে হাদীসের বিষয়বস্তু শুধুমাত্র কিসরার কন্যার রাণী হওয়ার
মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি শাসনের সাথে বিজড়িত। আবার হাদীসটি সব বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় যেমন বিচারব্যবস্থা,
শূরা কাউন্সিল, শাসকদের জবাবদিহি করা কিংবা নির্বাচনে ভোট দিতে পারা ইত্যাদি। বরং এসবই নারীদের জন্য
বৈধ, যা পরবর্তীতে আলোচিত হবে।

তৃতীয়ত: খলীফাকে অবশ্যই বালেগ হতে হবে।

নাবালেগ কাউকে খলীফা হিসেবে নিযুক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আবু দাউদ, আলী (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা)
বলেন:

"জবাবদিহিতা তিন ব্যক্তির জন্য নয়: ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জেগে উঠে, বালক যতক্ষণ না প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং 
উম্মাদ ব্যক্তি যতক্ষণ না সে মানসিকভাবে সুস্থ হয়।"

আলী (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

"তিন ব্যক্তির আমল নামায় কিছুই লেখা হয় না: উম্মাদ ব্যক্তি যতক্ষন না সে সুস্থ হয়, ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষন না সে জেগে 
উঠে এবং নাবালেগ যতক্ষন না সে বালেগ হয়।"

অর্থাৎ যার উপর থেকে বিচারের কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে সে তার কাজের জন্য দায়ী হবে না। তার কোন শরীয়াগত
দায়দায়িত্ব নেই। যে ব্যক্তি নিজের কর্মকান্ডের জন্য দায়িত্বশীল নয় তাকে সে কারণে খলীফাও বানানো যাবে না।
এ ব্যাপারে আরও দলিল পাওয়া যায় বুখারীর কাছ থেকে যিনি বর্ণনা করেছেন আবু আকীল জাহারা ইবনে মা'বাদ থেকে;
তিনি বর্ণনা করেছেন তার দাদা আবদুলাহ ইবনে হিশাম থেকে যিনি রাসূল (সা:) এর সময় জীবিত ছিলেন। ইবনে হিশামের
মা তাঁকে রাসূলুলাহ (সা:) এর কাছে নিয়ে গেলেন এবং বললেন, 'হে আল্লাহর রাসূল! তাঁর কাছ থেকে বাই'য়াত গ্রহণ করুন।'
 তখন রাসূল (সা:) বললেন, 'সে তো ছোট'। অতঃপর তিনি (সা:) আবদুল্লাহ ইবনে হিশামের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এবং
তার জন্য দোয়া করলেন। সুতরাং নাবালেগের বাই'য়াত যেহেতু গ্রহণযোগ্য নয় সেহেতু তার পক্ষে খলীফা হওয়াও সম্ভবপর নয়।

চতুর্থত: খলীফাকে সুস্থ মস্তিষ্কের হতে হবে।

অসুস্থ মস্তিষ্কের কোন ব্যক্তি খলীফা হতে পারবে না। কারণ রাসূল (সা) বলেন:

"তিন ব্যক্তির আমল নামায় কিছুই লেখা হয় না: উম্মাদ ব্যক্তি যতক্ষন না সে সুস্থ হয়..." বলতে বুঝানো হয়েছে অপ্রকৃতস্থ
ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত জবাবদিহিতার আওতায় আসবে না যতক্ষন সে মানসিকভাবে সুস্থ হয়। কারণ মানসিক সুস্থতা যে
কোন দায়িত্ব অনুভব করবার জন্য একান্ত প্রয়োজন। খলীফা আইন গ্রহণ করেন এবং বাস্তবায়ন করেন। সে কারণে একজন
অপ্রকৃতস্থ খলীফা থাকা বৈধ নয়, কারণ যে ব্যক্তি নিজের ব্যাপারে দায়িত্বশীল নয় সে ব্যক্তি কি করে উম্মাহ্‌র ব্যাপারে
দায়িত্বশীল হবেন?

পঞ্চমত: খলীফা ন্যায়পরায়ণ হবেন।

কোন ফাসিক ব্যক্তি - যিনি নির্ভরযোগ্য নন তিনি খলীফা হতে পারবেন না। খলীফা নিয়োগ ও এর ধারাবাহিকতার
জন্য সততা একটি আবশ্যিক গুণ। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেছেন, সাক্ষ্যদানকারী গন অবশ্যই ন্যায়পরায়ণ হবেন।
তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা'আলা) বলেন:

"আর এমন দু'জন লোককে সাক্ষী বানাবে যারা তোমাদের মাঝে সুবিচারবাদী হবে।" [সূরা আত-তালাক: ২]

যেহেতু সাক্ষ্য দানকারীদের সততার কথা বলা হয়েছে সেহেতু যিনি ঐসব সাক্ষ্য দানকারীর শাসক ও উচ্চপদস্থ হবেন তাকে
তো অবশ্যই সৎ হতে হবে।

ষষ্ঠত: খলীফা অবশ্যই আযাদ বা মুক্ত হবেন।

যেহেতু একজন দাস তার ব্যাপারে স্বাধীন নয়, সে তার প্রভূর নিয়ন্ত্রনাধীন, সেহেতু জনগণের বিষয়াবলী দেখা ও তাদের
শাসন করা তার পক্ষে সম্ভবপর নয়।

সপ্তমত: খিলাফতের দায়িত্ব পালনে খলীফাকে অবশ্যই পারঙ্গম হতে হবে।

কারণ এটি বাই'য়াতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে ব্যক্তি দায়িত্ব পালনে অক্ষম সে কীভাবে বাই'য়াত অনুসারে মানুষের
সমস্যাবলী নিরসন করবে এবং আল্লাহ্‌'র কিতাব ও রাসূল (সা:) এর সুন্নাহ্‌ দিয়ে শাসন করবে? মাযালিম আদালত
(The Court of Unjust Act) এর ক্ষমতা রয়েছে একজন খলীফার কী ধরণের অযোগ্যতা থাকতে পারবে না
সে বিষয়সমূহ নির্ধারণ করবার।

পছন্দনীয় শর্তাবলী:

উপরে উল্লেখিত শর্তাবলী একজন খলীফা নিযুক্ত হবার জন্য আবশ্যিক গুনাবলী। এ সাতটি বাদে বাকী কোন শর্তই খলীফা
নিযুক্ত হবার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। আর কিছু শর্তাবলী রয়েছে যেগুলো সহীহ দলিল প্রমাণের মাধ্যমে যদি জরুরী প্রমাণিত
হয় তাহলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে, তবে সেগুলো হবে পছন্দনীয় শর্তাবলী। যদি কোন
নির্দেশ অকাট্য (Decisive) বলে প্রমাণিত হয় তাহলে সেটাকে আবশ্যিক শর্তাবলীর আওতায় নেয়া হবে। আর যদি
দলিলের ভিত্তিতে সেটি অকাট্য বা চূড়ান্ত (Decisive) বলে প্রমাণিত না হয় তাহলে সে শর্তটি পছন্দনীয় বলে পরিগণিত
হবে। এখন পর্যন্ত উল্লেখিত সাতটি আবশ্যিক শর্তাবলী ব্যতীত দলিল প্রমাণের ভিত্তিতে আর কোন গুনাবলী আবশ্যিক
বলে পরিগণিত হয়নি। সে কারণে এই সাতটিই খলীফা নিয়োগের জন্য আবশ্যিক শর্তাবলী হিসেবে বিবেচিত। পছন্দনীয়
শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে, যেমন:খলীফা হবেন কুরাই'শ, মুজতাহিদ কিংবা অস্ত্র চালনায় পারদর্শী - যেগুলোর ব্যাপারে অকাট্য
দলীল নেই।

পরবতী অংশ: খলীফা নিয়োগ করার প্রক্রিয়া

1 comment:

  1. খলিফাহকে অতিরিক্ত কিছু শর্ত আরোপ করাঃ
    বায়া’হ যেহেতু একধরণের চুক্তি, এতে অতিরিক্ত কিছু শর্তও সংযোজন করা যায়, এবং খলিফাহ শর্তগুলো মানতে বাধ্য, তবে অতিরিক্ত শর্তগুলো বায়া’হর মৌলিক ৭টি শর্তকে কোনভাবে ব্যাঘাত করতে পারবে না। কাজেই খলিফাহকে সাংবিধানিক পদ্ধতিতে কিছু শর্ত দ্বারা সীমাবদ্ধ করা যায়, যেমনঃ মাজলিস-উল-উম্মাহ (জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী পরামর্শ সভা) ও বিচারপতিগন কে ক্ষমতায়ন করে খলিফাহর শাসনকার্য পরিচালনাকে ভারসাম্য করা।

    অতিরিক্ত কিছু শর্ত আরোপের ব্যাপারে যে দলিল পাওয়া যায় তা হল – উসমান বিন আফফান (রাঃ) রাজি হয়েছিলেন যখন তাঁকে শাসনকার্যে আবু বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) এর পথ অনুসরণ করার জন্য বায়া’হতে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। এটি ইজমা আস সাহাবা দ্বারা স্বীকৃত কারন এ ঘটনা সাহাবাদের সামনেই হয়েছিল কোন ধরনের প্রতিবাদ ছাড়াই। পুরো ঘটনাটি নিম্নরূপঃ
    আব্দুর রাহমান (রাঃ) মদিনার বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের মতামত অন্বেষণ করছিলেন, মদিনার প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারীকে এক এক করে তিনি জিজ্ঞাসা করছিলেন, তিনি একজনকেও বাদ দেন নি যাকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন নি যে কাকে তারা খলিফাহ হিসেবে দেখতে চান উসমান এবং আলি’র মধ্য থেকে। কিছু লোক উসমানকে পছন্দ করলো, আর কিছু লোক আলীকে পছন্দ করলো। আব্দুর রাহমান (রাঃ) দেখলেন উসমান এবং আলী উভয়ের পক্ষে মধ্যে মতামত মোটামোটি সমান। আব্দুর রাহমান পুরুষ-নারীদের সাথে পরামর্শ করে মসজিদে মুসলিমদের তলব করলেন এবং তিনি মিম্বারে তার তোলওয়ার নিয়ে এবং “আম্মা” (এক ধরনের কাপড় যেটা রসুল্লাল্লাহ (সাঃ) তাঁকে দিয়েছিলেন) পড়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর বললেন- “হে মুসলিমরা, আমি তোমাদের প্রকাশ্যে ও গোপনে তোমাদের ইমাম প্রসঙ্গে এবং তোমরা এ দুই ব্যাক্তির (উসমান এবং আলি) সমপর্যায়ে কাওকে অবস্থান দিতে পার নি”। তারপর তিনি আলি (রা:) এর দিকে তাকিয়ে তাঁকে ডাকলেন ও বললেন “ও আলি, আমার দিকে আসো”। আলি (রাঃ) উঠে মিম্বারের কাছে আসলেন, আব্দুর রাহমান (রাঃ) আলি (রাঃ) এর হাত নিলেন এবং বললেন, “তুমি কি আল্লাহ’র কিতাব, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ, আবু বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) এর পথে তোমার বায়াহ আমাকে দিবে”...? আলি (রাঃ) উত্তর দিলেন, “আল্লাহর কসম, না...! বরং আল্লাহ’র কিতাব, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ ও এ পথে আমার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও হিকমা দিয়ে আমি তোমাকে আমার বায়া’হ দিব; আবু বকর এবং উমর এর কার্যকলাপ প্রসঙ্গে বলবো আমি নিজেকে তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করবো না, বরং নিজের মতামত দেওয়ার চেষ্টা করবো”। আব্দুর রাহমান (রাঃ) তখন তার হাত ছেঁড়ে এবং উসমান (রাঃ) কে ডাকলেন, “ও উসমান, আমার দিকে আসো”; অতঃপর আলি (রাঃ) যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে উসমান (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং আব্দুর রাহমান (রাঃ) তাঁর হাত ধরে একই প্রশ্ন করলেন, উসমান (রাঃ) প্রত্যুত্তরে বললেন, “আল্লাহর কসম, হ্যাঁ”। তখন আব্দুর রাহমান (রাঃ) উসমান (রাঃ) এর হাত শক্ত করে ধরে মসজিদের ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “ও আল্লাহ, শুন এবং দেখ; ও আল্লাহ, আমি আমার উপরে যে দায়িত্ব ছিল, সেটি উসমানের উপর অর্পণ করলাম”। তারপর, সবাই উসমানের কাঁধে বায়া’হ দিতে উদ্যত হলেন, আলি (রাঃ)ও সবাইকে ঠেলে উসমানের কাঁধে বায়া’হ দিলেন। এভাবে উসমানকে বায়া’হ দেওয়া সম্পন্ন হল।
    শেখ তাকিউদ্দিন আন-নাবাহানি, The rulling system of islam থেকে নেওয়া।

    ReplyDelete