Tuesday, September 29, 2015

হুজুর ছেলের কাছে বিয়ে বসব না

এখন অধিকাংশ শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিক মেয়েদের মুখেই এধরণের কথা শোনা যাচ্ছে। এর রহস্যটা কী? এর কারণ হচ্ছে বর্তমান কালের মেয়েরা বেড়ে উঠছে ছেলেদের সাথে অবাধ মেলামেশার মধ্যে। অর্থাৎ তাদের চলাফেরা, পড়াশুনা, আচার-অনুষ্ঠান সর্বক্ষেত্রেই তারা ছেলেদের সংস্পর্শে এসে করে থাকে। তারা সবসময় আনন্দ-ফুর্তি, দুষ্টুমি করে তাদের সময় কাটাচ্ছে। এমতাবস্থায় তারা ‍যদি কোন হুজুর ছেলেকে বিয়ে করে তবে তাদের এই সকল উশৃঙ্খলা থেমে যাবে, অর্থাৎ তাদের এই ধরণের জীবনধারা পরিবর্তণ হয়ে যাবে। যেটা তারা কল্পনাই করতে পারে না। কারণ হুজুরদের তারা ভয় করে। হুজুর-স্বামী বিয়ের পর তাকে বলবে বোরকা পড়, হাতমোজা-পামোজা ব্যবহার কর। মার্কেটে যাওয়া যাবেনা। পরপুরুষের সাথে বাক্যালাপ করা যাবে না। পাতলা ওড়না ব্যবহার করা যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি বলে তার কান ঝালা-পালা করে দেবে। এটাই হল বর্তমান অধিকাংশ মেয়েদের ধারণা এবং বিশ্বাস একজন হুজুর ছেলে সম্পর্কে। এবার আসুন গোমর ফাঁস করি কেন মেয়েরা হুজুর ছেলে পছন্দ করেনা। মূলত যারা হুজুর ছেলেদের পছন্দ করেনা তারা মূলত ইসলামের প্রকৃত অনুসারী না। তারা সালাত বা নামাজ আদায় করেনা। রমজানে রোজা রাখেনা, রাখলেও সবাই রাখে তাই সেও রাখে, পর্দা করেনা, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি বিভিন্ন অশ্লীলতা ইত্যাদির সাথে তারা জড়িত থাকে। তারা স্বাধীনতার নামে মূলত বিভিন্ন ইসলাম বিরোধী কাজে জড়িত থাকে। এর ফল কী হয়? এর ফল খুবই মারাত্মক। ধরা যাক, ঐ মেয়ের যার সাথে বিয়ে হয় সেও যদি তার মতই হয় (অর্থাৎ বেনামাজী) তাহলে সাংসারিক জীবনে তারা কতটুকু সুখী হয়?পরিপূর্ণ ‍ইমান না থাকার কারণে সেই মেয়েটি বিভিন্ন ছেলেদের সাথে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, হাসি-তামাশা ইত্যাদি বিভিন্ন মন্দ কর্মে  জড়িত থাকে। সে যদি শিক্ষিত হয় বা স্টুডেন্ট হয়, তবে পড়াশুনার নামে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়ায়। আর ওদিকে তার স্বামী বেচারা ইমানের ঘাটতির কারণে কর্মস্থলে বা উপযুক্ত যে কোন স্থানে অন্য নারীর সাথে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, হাসি-তামাশা, ভ্রমন ইত্যাদির নামে নানা অশ্লীলতায় নিয়োজিত থাকে। এভাবে চলতে থাকলে কী হয়? একটা সময় পরে তাদের (স্বামী-স্ত্রীর) মধ্যে অবিশ্বাস, সন্দেহ দানা বাঁধে। ঝগড়া, মনোমালিন্য ইত্যাদি তাদের সংসারে আর সুখ ফিরিয়ে আনতে পারেনা। পরিনাম: “অসুখী জীবন”। তখন দুজনের চির স্বরণীয় বানী হয়: “তোমাকে বিয়ে করে জীবনে কিছুই পেলাম না”।
এবার আসুন হুজুর ছেলের বৃত্তান্ত তুলে ধরি। একজন হুজুর ছেলে ছাত্র জীবন থেকেই আল্লাহ ভীরু হন। তিনি তার দৃষ্টিকে হেফাজতে রাখেন। সিনেমা, নাটক দেখেননা। যাবতীয় অশ্লীলতা থেকে যতদূর সম্ভব দূরে থাকেন। উপার্জনের একটা ব্যবস্থা হলে তিনি একজন নামাযী, পর্দানশীল, তাকওয়াসম্পন্ন, অশ্লীলতা থেকে মুক্ত একজন মেয়ে খুঁজেন বিয়ে করার জন্য। সে রকম মেয়ে পেলে তিনে যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করেন। তিনি মেয়েকে দেন-মোহর নগদ পরিশোধ করেন। সেই হুজুর ছেলে নিজের যত কামনা-বাসনা, কল্পনা-যল্পনা, হাসি-তামাশা, মজা ইত্যাদি সব কিছুই তার স্ত্রীর জন্য রক্ষণাবেক্ষন করেন। যতক্ষন বাইরে থাকেন তার সবটুকু আদর, ভালবাসা তার স্ত্রীর জন্য জমিয়ে রাখেন আর চিন্তা করেন কখন বাসায় ফিরে যাবেন। অপর দিকে তিনি যাকে বিয়ে করেছেন, তিনিও বাসায় বা অফিসে যেখানেই থাকুননা কেন তার আদর, ভালবাসা ইত্যাদি শুধুই তার স্বামীর জন্যই সংরক্ষণ করেন।এরকম অবস্থা যদি তৈরী হয় কোন সংসারে, তবে তাদের সংসারটা কতটা সুখের হতে পারে? যেখানে নেই কোন অবিশ্বাস, সন্দেহ, সংশয় সেখানে কতইনা সুখের পরিবেশ তৈরী হয়! আরেকটা কথা বলে রাখা ভাল, “হুজুর ছেলেরা তাদের স্ত্রীদের দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ মনে করে থাকেন। তাহলে বঝুন তারা তাদের স্ত্রীদের কতটা মূল্য দিয়ে থাকেন।
অতএব, যারা হুজুর ছেলেদের বিয়ে করতে চাননা তারা মনে করবেন না যে, এটা আপনাদের ক্রেডিট বরং হুজুর ছেলেরাই আপনাদের “খোসা বিহীন কলা, মানে ছোলা কলা” মনে করে থাকেন। যেগুলো মাগনা দিলেও কেও বাজার থেকে নিবে না। অতএব, অহংকার ছাড়ুন ইসলাম পরিপূর্ণভাবে মানুন। বিয়ে করার জন্য পরিবারকে “উপযুক্ত” হুজুর ছেলে খুঁজতে বলুন।
পরিশিষ্ট-১: “হুজুর ছেলে” বলতে ইসলামের বিধি নিষেধ মেনে চলেন এমন “মুসলিম” ছেলেকে বুঝানো হয়েছে।শুধু মুখে কতগুলো ‘দাড়ি’ থাকলেই ভাল “মুসলিম” পুরুষ হওয়া যায় না।

আবুল বাশার
শিক্ষক
টাঙ্গাইল রেসিডেনসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ



Tuesday, September 15, 2015

পবিত্র ঈদুল আযহা : মুসলামনদের জন্য করণীয় ও বর্জণীয়

Somewhereinblog.net
আর মাত্র কয়েক রজনী পরেই মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা । বিশ্বের প্রায় ১৫৫ কোটি মুসলাম ব্যাপক ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে পালন করবে তাদের এ পবিত্র অনুষ্ঠানটি । আল্লাহর অপার কৃপায় আমরাও ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ার কারনে এ আনন্দ থেকে বাদ যাব না । আমরা মুসলমান পিতার মাতার সন্তান হওয়ার কারনে অনেকেই হয়ত ছোটবেলায় মা বাবার মূখে হযরত ইব্রাহীম ও ইসমাঈল অথবা ইসহাক (আঃ) এর মধ্যে সংগঠিত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ইব্রাহীম (আঃ) কে চরম পরীক্ষার কথা এবং স্রষ্টা কর্তৃক তার প্রিয় বান্দাহদেরকে রক্ষা করার কাহিনী শুনে থাকব । আজ ছোটবেলায় শোনা কুরবানীর সে কাহীনীকে আবারও একবার স্মরন করে নিই । সময়টা ছিল মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর নবুয়ত কাল । আল্লাহ তায়াল হয়রত ইব্রাহীম (আঃ) কে আদেশ করলেন তার প্রিয় জিনিস আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার জন্য । হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তার প্রিয় অনেক জিনিস আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার পর যখন বুঝতে পারলেন যে আল্লাহর তায়ালা তার সম্পদ কুরবানী চান না তিনি তার সন্তানকে কুরবানী চান । হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তার বার্ধক্যের অবলম্বন হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী দেয়ার জন্য নিয়ে চললেন । অবশ্য ইসলামের ইতিহাসে কুরবানী কি হযরত ইসমাঈলের সাথে জড়িত নাকি হযরত ইসহাকের সাথে জড়িত সে ব্যাপারে কিছুটা মত পার্থক্য আছে । তবে জমহুর আলেমগন হযরত ইসমাইল (আঃ) এর ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছে । যখন হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কুরবানী করার উদ্দেশ্যে শোয়াল তখন পিতৃত্বের স্নেহ তার মনে জেগে উঠতে পারে সেই ভয়ে হযরত ইসমাঈল (আঃ) তার পিতার চোখে একখানা কাপড় বেঁধে নেয়ার পরামর্শ দিল । এ ভাবে যখন ইব্রাহীম (আঃ) কুরবানী দিতে আরম্ভ করল তখন আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা জান্নাত থেকে একটি দুম্ভা নিয়ে এসে ইসমাঈল (আঃ) উঠিয়ে সেখানে শুয়ায়ে দিল । আল্লাহর অপার মহিমায় সেটাই কুরবানী হয়ে গেল । আর সেদিন থেকেই শুরু হল কুরবানীর ইতিহাস । আল্লাহ চাহেতো কুরবানী বিষয়ক যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ধারাবাহিক ভাবে পেশ করা হবে 


আভিধানিক ও পারিভাষক অর্থে কুরবানী : কুরবানী শব্দের শাব্দিক অর্থ হল উৎসর্গ বা ত্যাগ । ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জিলহাজ্ব মাসের ১০,১১ ও ১২ তারিখে নির্দিষ্ট জন্তুকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে জবেহ করাকে কুরবানী বলা হয় । কুরবানী মুসলমানদের জন্য আল্লাহর প্রতি অগাধ প্রেম ও অনুপম আনুগত্যের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত । 

কুরবানীর হুকুম এবং শর্ত : কুরবানী করা ওয়াজিব । তবে শর্ত সাপেক্ষে । ঢালাও ভাবে সকলের উপর ওয়াজিব নয় । যার কাছে মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ন্য অথবা সমপরিমান অর্থ সম্পদ আছে তার উপরেই কুরবানী ওয়াজিব । যাকাতের ন্যায় কুরবানীতে সম্পদের বর্ষপূর্তি শর্ত নয় । বরং ফিতরার হুকুমের ন্যায় । ঈদের দিন যেমন কারো কাছে নেসাব পরিমান সম্পদ থাকলেই তার উপর ঈদুল ফিতর আদায় করতে হয় তেমনি ঈদুল আযহার দিন কারো কাছে নেসাব পরিমান সম্পদ আসলেই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব । শরীয়ত যার ‍উপর কুরবানী ওয়াজিব করেনি , এমন কোন ব্যক্তি যদি কুরবানীর দিন জবেহ করার ইচ্ছায় পশু ক্রয় করে তবে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়ে যায় । এছাড়াও কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য কুরবানী দাতার আরও কতিপয় শর্ত পূরণ হওয়া দরকার । সেগুলো হল –সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী হওয়া , প্রাপ্ত বয়স্ক এবং বাড়িতে অবস্থানকারী (মুকিম) হওয়া । 

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার পরে তা আদায় না করলে তার হুকুম : সকল শর্ত পূর্ণ হয়ে কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও যদি কোন অভাগা কুরবানী না দেয় তবে সে মারাত্মক অপরাধী হিসেবে সাব্যস্থ হবে । এ প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সঃ) হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন , সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করল না ,সে যেন আমার ঈদগাহের কাছেও না আসে । প্রিয় ভাইয়েরা আসুন, পবিত্র কুরবানী ও ঈদের নামাজ যথাযথ ভাবে আদায় করার জন্য মজবুত ইচ্ছা পোষণ করি । 

ঈদুল আযহার সুন্নতসমূহ : 
• ঈদুল আযহার রাত্রিতে সওয়াবের উদ্দেশ্যে জেগে আল্লাহর ইবাদাতা বান্দেগী করা । 
• যে ব্যক্তি কুরবানী করবে তার জন্য নামাজের পূর্বে কিছু পানাহার না করা এবং নামাজের পর কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত ।
• যে ব্যক্তি কুরবানী করবে তার জন্য জিলহজ্জের চাঁদ দেথার পর থেকে কুরবানী না করা পর‌্যন্ত গোঁফ ও নখ না কাটা মুস্তাহাব ।
• ঈদাগাহে যাওয়ার সময় যে রাস্তা দিয়ে যাবে ফেরার সময় সে রাস্তা ব্যবহার না করা সুন্নত । 
• যাওয়ার সময় তাকবীরে তাশরীক উচ্চস্বরে বলা সুন্নত ।
• ঈদুল ফিতর অপেক্ষা ঈদুল আযহার নামাজ সকালে পড়া সুন্নত । 

কুরবানীর পশু যে রকম হওয়া দরকার : ভেড়া, গরু, ছাগল,ভেড়া,দুম্বা,মহিষ,উট, এই ছয় প্রকার জন্তু দ্বারা কুরবানীর দিতে হবে । ছাগল ,ভেড়া,ও দুম্বা ‍একজনের পক্ষ থেকে এবং গরু,মহিষ এবং উট সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া যাবে । 

কোরবানীর পশু যে রকম হবে : ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ, উট এই ছয় প্রকার জন্তু দ্বারা কোরবানী দিতে হবে। প্রথম তিন প্রকার জন্তু দিয়ে কেবল একজনের পক্ষ থেকে এবং শেষের তিন প্রকার জন্তু দিয়ে ৭জনের পক্ষ থেকে কোরবানী দেয়া যায়। ছাগল পূর্ণ এক বছর হতে হবে। ভেড়া ও দুম্বা যদি এতটুকু মোটাতাজা হয় যে এক বছর বয়সী ভেড়া দুম্বার মত, তবে তা দিয়ে কোরবানী করা জায়েজ আছে। গরু ও মহিষ দুই বছর বয়সী এবং উট পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে। এখানে প্রসঙ্গত বিক্রেতা যদি পশু পরিণত বয়সের বলে কিন্তু বাস্তবে তা পরিলক্ষিত না হয়, তবে বিক্রেতার কথার উপর নির্ভর করে এ পশু দ্বারা কোরবানী বৈধ হবে।
কোরবানীর পশু মোটা তাজা হওয়া বাঞ্চনীয়। সকল পশু সমান নয়, পশুর মধ্যে খুঁত থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু নিখুঁত পশু দ্বারা কোরবানী দেয়া উত্তম ।

যে সকল পশু দ্বারা কুরবানী দেয়া উচিত নহে : যে ছয় ধরনের পশু দ্বারা কুরবানী করা জায়েজ আছে সেই সকল পশুর মধ্যে যদি শরীয়ত নির্ধারিত কোন ধরনের ত্রুটি পাওয়া যায় তবে সে পশুগুলো দ্বারা কুরবানী করা বৈধ নয় । এখন আমরা দেখব কোন ত্রুটিগুলো কুরবানীর পশুর মধ্যে বিদ্যমান থাকলে তা দ্বারা কুরবানী করা বৈধ নয় ।
* যে পশুর কান কাটা । ইমাম আযম আবু হানীফা (রঃ) এর মতে কানের অর্ধেক বা ততোধিক কাটা হলে সে পশু দ্বারা কুরবানঅ দেয়া উচিত নয় ।
* খোঁড়া ।
* লেজ কাটা ।
* অত্যন্ত দূর্বল ।
* দাঁতহীন । 
* পাগল । তবে নিখুঁত পশু ক্রয় করার পর যদি কুরবানী প্রতিবন্ধক কোন ত্রুটি দেখা দেয় আর ক্রেতা যদি নিসাবের অধিকারী না হন তাহলে তাকে ঐ পশুর বদলে অন্য পশু কুরবানী করতে হবে । 

পশু জবেহ করার নিয়ম : কুরবানীর পশু কুরবানী দাতার নিজ হাতে জবেহ করা উত্তম । আমাদের নবী করীম (সঃ) কুরবানীর পশু নিজ হাতে জবেহ করেছেন । অন্য লোক দ্বারাও জবেহ করানো যায় । তবে তাকে জবেহ সম্মন্ধীয় সকল নিয়ম কানুন জানা থাকতে হবে । অন্যের দ্বারা জবেহ করানোর সময় নিজে উপস্থিত থাকা উত্তম । জবেহ করার সময় মুখে “ বিছমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ” বলতেই হবে । জবেহ করার সময় পশুকে কিবলামূখী করে শুইয়ে দেয়া উত্তম । কুরবানী মেয়াদকাল তিন দিন অর্থ্যাৎ ১০ ই জিলহজ্জ সুর‌্য উদিত হওয়ার পর থেকে ১২ ই জিলহজ্জ সূর‌্য অস্ত যাওয়ার আগ পর‌্যন্ত যখন ইচ্ছা দিনে অথবা রাত্রিকালে ‍কুরবানী করা যেতে পারে । তবে রাত্রিবেলায় জবেহ না করাই ভাল । কারন রাত্রি বেলায় জবেহ করতে গেলে জবেহে ত্রুটি দেখা দিতে পারে । এ কারনে কুরবানীর ফযিলত নষ্ট হয়ে যেতে পারে । 

কুরবানীর গোশত ও চামড়ার হুকুম : আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দেখা যায় একাধিক ব্যক্তির অংশীদারীত্বে কুরবানী দিয়ে ,গোশত সমান ভাগে ভাগ করে নিতে হয় । যদি শরীক দ্বাররা একমত হয়ে কুরবানীর গোশত অনুমান করে ভাগ করে নিতে চান তাও জাযেজ নহে । নিক্তির মাধ্যমে অবশ্যই ওজন করে গোশত ভাগ করে নিতে হবে । কুরবানীতে প্রাপ্ত গোশত তিনভাগ করা উত্তম । তা থেকে এক ভাগ নিজ পরিবার বর্গের জন্য ,একভাগ আত্মীয় স্ব-জন,বন্ধু বান্ধব ও পরিচিতজনদের জন্য,একভাগ গরীব ,অসহায়,অনাথ মিসকিনদের জন্য । তবে পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি অনেক বেশি হয় এবং প্রাপ্ত গোশত বন্টন করলে নিজেদের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য হয় তবে ভাগ না করে সবটাই নিজেরা ভোগ করা যায় । তবে একটা কথা সকল সময় আমাদের মনে রাখা উচিত , ইসলাম সাম্যের ধর্ম । এখানে আপনার উপর আপনার প্রতিবেশী এবং গরীব মিসকীনদের উপর মারাত্মক দাবি রয়েছে । যা কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমানিত । যাদের দ্বারা কুরবানীল পশু কাটানো হয় তাদেরকে পারিশ্রমিক হিসেবে কুরবানীর গোশত দেয়া বৈধ নয় । এটা ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ এবং কঠিন গুনাহের কাজ । এ সকল মজুরদেরকে টাকা পয়সা বা অন্য ‍কিছু দিতে হবে । পশুর চামড়া নিজের ব্যবহারে লাগানো যায় । কুরবানীর চামড়া দিয়ে জায়নামাজ, কিতাবের মলাট , দস্তরখানা ইত্যাদি তৈরি করে নিজে ব্যবহার করা যায় । নিজে যদি ব্যবহার না করে তবে গরীব মিসকিনকে চামড়া দিতে হয় । চামড়া গরীব মিসকীনদের হক । তবে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে কুরবানীর পশুর চামড়া, গোশত বা পশুর অন্য কোন অংশ পরিশ্রমের বিনিময়ে দেয়া যাবে না । না জানার কারনে অথবা জেনেও যদি এ সকল শর্ত ভঙ্গ করা হয় তবে পূনরায় তার মূল্য গরীবদের মাঝে বিলি করি দিতে হবে । 


তাকবীরে তাশরীক : জিলহ্জ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর হতে ১৩ তারিখ আসর পর‌্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে জামাআতে কিবা একাকী ,পুরূষ কিবা মহিলা, মুকিম কিবা মুসাফির সবার উপর একবার তাকবীরে তাশরীক পাফ করা ওয়াজিব । এ সমযের মধ্যে যদি ওজর বশত কোন নামাজ কাযা হয়ে যায় সে কাযা নামাজ আদায়ের পর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব । তবে পুরূষগন উচ্চস্বরে এবং মহিলারা নিম্নস্বরে বা নিরবে তাকবীরে তাশরীরক পাঠ করবেন । জামাতের সাথে নামাজ হলে যদি নামাজ সমাপান্তে ইমাম সাহেব ভূলক্রমে না পড়ে, তবে মুসল্লিদের মধ্য থেকে যে কেউকে উচ্চস্বরে পাঠ করা আবশ্যক । কারন তাকবীরে তাশরীক সবার জন্য পাঠ করা ওয়াজিব । 

তাকবীর ধ্বনিগুলো হল : আল্লাহু আকাবর,আল্লাহু আকবার ,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার ,আল্লাহু আকবার,ওয়ালিল্লাহিল হামদ । 



আল্লাহ তায়ালা আমাদের কুরবানীকে তার হুকুম মত পালন করিবার ক্ষমতা দান করুন আমীন ।

Friday, September 4, 2015

ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রবন্ধ/লেকচার শীট

আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় ভাই ও বোনেরা নিচের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ইসলামিক প্রবন্ধ দেয়া হল। আপনার প্রয়োজনীয় বিষয় এখান থেকে বেছে নিন। পেইজটি ভিজিট করার পর শেয়ার করতে ভুলবেন না। জাজাকুমুল্লাহ খায়ের(আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন, আমীন।)


আল্লাহ কি নিরাকার?

ভয়াবহ গুনাহ “শির্ক”

মুহাররম ও আশুরার ফজীলত

আপনি কি আপনার অজান্তেই আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করছেন?


আর যার কাছেই বসি হুজুর ছেলের কাছে বিয়ে বসব না।

সঠিক নিয়ত-- আবুল বাশার

হাদিসের গল্পঃ ঈমানদার যুবক ও আছহাবুল উখদূদের কাহিনী

ইসলামের পরিচয় --লিখেছেনঃ আবুল বাশার

নাস্তিকের যুক্তি খণ্ডন: আল্লাহ কেন এরকম করলো? আল্লাহ থাকতে এসব হয় কিভাবে? পর্ব ১(আল্লাহ কি আছেন?) নাউজুবিল্লাহ!

নাস্তিকের যুক্তি খণ্ডন: সত্যিই যদি আল্লাহ থাকে তাহলে পৃথিবীতে এতো দুঃখ, কষ্ট কেন? পর্ব ২ (সত্যিই যদি আল্লাহ থাকে তাহলে পৃথিবীতে এতো দুঃখ, কষ্ট কেন?)

ইসলামের বাই'আতের প্রক্রিয়া (আপনি কীভাবে কারো কাছে বাই‘আত করবেন)

ইসলামি খিলাফত ব্যবস্থার রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানসমূহ কেমন হবে? - ভূমিকা


যারা দাওয়াতি কাজ করছেন, তাদের জন্যঃ


ইসলামের দাওয়াত পর্ব ২ --

১ম অধ্যায়: ইসলামী দাওয়াত বহন করার গুরুত্ব

ইসলামের দাওয়াত পর্ব ৩- 

দ্বিতীয় অধ্যায়: দাওয়াত বহন করবার ক্ষেত্রে ঈমানের গুরুত্ব এবং ফরয কাজসমূহের মধ্যে অগ্রাধিকার প্রদান

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ৪--

সৎ কাজের আদেশ প্রদান ও অসৎ কাজের নিষেধ

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ৬-

যে ভাবে দারুল ইসলাম (ইসলামী রাষ্ট্র) প্রতিষ্ঠা করতে হয়

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ৭ -

ইসলামে বিভিন্ন ধরণের তরীকা (পদ্ধতি) ও উসলূব (ধরন)

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ৮--

ইসলামের নামে যেসব দল বা পদ্ধতি শরী'য়া পদ্ধতির সাথে সাংঘর্ষিক

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ৯-

ইসলামের বিভিন্ন আহকাম (হুকুম) বুঝবার জন্য ইসলামের পদ্ধতি 

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ১২- 

 ইসলামি চিন্তা (Thought) ও পদ্ধতি (Method) হিসেবে আদর্শের প্রতি আনুগত্য 

ইসলামের দাওয়াত - পর্ব ১৩- 
মুসলিমগণ কি কুফর শাসনব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারবে?

নাস্তিকদের প্রশ্নের জবাব/ নাস্তিকের যুক্তি খণ্ডনঃ