Tuesday, January 5, 2016

সূরা ইউসুফ বাংলা অনুবাদ

(১২) ইউসুফঃ ১১১
১২.১ ) আলিফ-লা-ম-রা; এগুলো সু¯পষ্ট গ্রন্তে’র আয়াত।
১২.২ ) আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।
১২.৩ ) আমি তোমার নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করেছি, যেমতে আমি এ কোরআন তোমার নিকট অবতীর্ণ করেছি। তুমি এর আগে অবশ্যই এ ব্যাপারে অনবহিতদের অন্তর্ভূক্ত ছিলে।
১২.৪ ) যখন ইউসুফ পিতাকে বলল: পিতা, আমি ¯¦প্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্তদ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি।
১২.৫ ) তিনি বললেন: বৎস, তোমার ভাইদের সামনে এ ¯¦প্ন বর্ণনা করো না। তাহলে তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে। নিশ্চয় শয়তান মানুষের প্রকাশ্য।
১২.৬ ) এমনিভাবে তোমার পালনকর্তা তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে বাণীসমূহের নিগুঢ় তত্ত্ব শিক্ষা দেবেন এবং পূর্ণ করবেন ¯¦ীয় অনুগ্রহ তোমার প্রতি ও ইয়াকুব পরিবার-পরিজনের প্রতি; যেমন ইতিপূর্বে তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি পূর্ণ করেছেন। নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা অত্যন্ত জ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
১২.৭ ) অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
১২.৮ ) যখন তারা বলল: অবশ্যই ইউসুফ ও তাঁর ভাই আমাদের পিতার কাছে আমাদের চাইতে অধিক প্রিয় অথচ আমরা একটা সংহত শক্তি বিশেষ। নিশ্চয় আমাদের পিতা ¯পষ্ট ভ্রান্তিতে রয়েছেন।
১২.৯ ) হত্যা কর ইউসুফকে কিংবা ফেলে আস তাকে অন্য কোন স্থানে। এতে শুধু তোমাদের প্রতিই তোমাদের পিতার মনোযোগ নিবিষ্ট হবে এবং এরপর তোমরা যোগ্য বিবেচিত হয়ে থাকবে।
১২.১০ ) তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, তোমরা ইউসুফ কে হত্যা করো না, বরং ফেলে দাও তাকে অন্ধকূপে যাতে কোন পথিক তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়, যদি তোমাদের কিছু করতেই হয়।
১২.১১ ) তারা বলল: পিতা: ব্যাপার কি, আপনি ইউসুফের ব্যাপারে আমাদেরকে বিশ্বাস করেন না ? আমরা তো তার হিতাকাংখী।
১২.১২ ) আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন-তৃপ্তিসহ খাবে এবং খেলাধুলা করবে এবং আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষন করব।
১২.১৩ ) তিনি বললেন: আমার দুশ্চিন্তা হয় যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি আশঙ্কা করি যে, ব্যাঘ্র তাঁকে খেয়ে ফেলবে এবং তোমরা তার দিক থেকে গাফেল থাকবে।
১২.১৪ ) তারা বলল: আমরা একটি ভারী দল থাকা সত্ত্বেও যদি ব্যাঘ্র তাকে খেয়ে ফেলে, তবে আমরা সবই হারালাম।
১২.১৫ ) অত:পর তারা যখন তাকে নিয়ে চলল এবং অন্ধকূপে নিক্ষেপ করতে একমত হল এবং আমি তাকে ইঙ্গিত করলাম যে, তুমি তাদেরকে তাদের এ কাজের কথা বলবে এমতাবস্থায় যে, তারা তোমাকে চিনবে না।
১২.১৬ ) তারা রাতের বেলায় কাঁদতে কাঁদতে পিতার কাছে এল।
১২.১৭ ) তারা বলল: পিতা: আমরা দৌÍড় প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছিলাম এবং ইউসুফকে আসবাব-পত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম। অত:পর তাকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে। আপনি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী।
১২.১৮ ) এবং তারা তার জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে আনল। বললেন: এটা কখনই নয়; বরং তোমাদের মন তোমাদেরকে একটা কথা সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং এখন ছবর করাই শ্রেয়। তোমরা যা বর্ণনা করছ, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ্ই আমার সাহায্য স্থল।
১২.১৯ ) এবং একটি কাফেলা এল। অত:পর তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল। সে বালতি ফেলল। বলল: কি আনন্তেদর কথা। এ তো একটি কিশোর তারা তাকে পন্যদ্রব্য গণ্য করে গোপন করে ফেলল। আল্লাহ্ খুব জানেন যা কিছু তারা করেছিল।
১২.২০ ) ওরা তাকে কম মূল্যে বিক্রি করে দিল গনাগুণতি কয়েক দেরহাম এবং তাঁর ব্যাপারে নিরাসক্ত ছিল।
১২.২১ ) মিসরে যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করল, সে তার স্ত্রীকে বলল: একে স¤মানে রাখ। সম্ভবত: সে আমাদের কাছে আসবে অথবা আমরা তাকে পুত্ররূপে গ্রহণ করে নেব। এমনিভাবে আমি ইউসুফকে এদেশে প্রতিন্ঠিত করলাম এবং এ জন্যে যে তাকে বাক্যাদির পূর্ণ মর্ম অনুধাবনের পদ্ধতি বিষয়ে শিক্ষা দেই। আল্লাহ্ নিজ কাজে প্রবল থাকেন, কিন্তূ অধিকাংশ লোক তা জানে না।
১২.২২ ) যখন সে পূর্ণ যৌÍবনে পৌÍছে গেল, তখন তাকে প্রজ্ঞা ও ব্যুৎপত্তি দান করলাম। এমননিভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে প্রতিদান দেই।
১২.২৩ ) আর সে যে মহিলার ঘরে ছিল, ঐ মহিলা তাকে ফুসলাতে লাগল এবং দরজাসমূহ বন্ধ করে দিল। সে মহিলা বলল: শুন! তোমাকে বলছি, এদিকে আস, সে বলল: আল্লাহ্ রক্ষা করুন; তোমার ¯¦ামী আমার মালিক। তিনি আমাকে সযতেœ থাকতে দিয়েছেন। নিশ্চয় সীমা লংঘনকারীগণ সফল হয় না।
১২.২৪ ) নিশ্চয় মহিলা তার বিষয়ে চিন্তা করেছিল এবং সেও মহিলার বিষয়ে চিন্তা করত। যদি না সে ¯¦ীয় পালনকর্তার মহিমা অবলোকন করত। এমনিবাবে হয়েছে, যাতে আমি তার কাছ থেকে মন্তদ বিষয় ও নিলজ্জ বিষয় সরিয়ে দেই। নিশ্চয় সে আমার মনোনীত বান্তদাদের একজন।
১২.২৫ ) তারা উভয়ে ছুটে দরজার দিকে গেল এবং মহিলা ইউসুফের জামা পিছন দিক থেকে ছিঁড়ে ফেলল। উভয়ে মহিলার ¯¦ামীকে দরজার কাছে পেল। মহিলা বলল: যে ব্যক্তি তোমার পরিজনের সাথে কুকর্মের ইচছা করে, তাকে কারাগারে পাঠানো অথবা অন্য কোন যন্ত¿ণাদায়ক শাস্তি দেয়া ছাড়া তার আর কি শাস্তি হতে পারে?
১২.২৬ ) ইউসুফ (আ:) বললেন: সেই-আমাকে আতœসংবরণ না করতে ফুসলিয়েছে। মহিলার পরিবারে জনৈক সাক্ষী দিল যে, যদি তার জামা সামনের দিক থেকে ছিন্ন থাকে, তবে মহিলা সত্যবাদিনী এবং সে মিথ্যাবাদি।
১২.২৭ ) এবং যদি তার জামা পেছনের দিক থেকে ছিন্ন থাকে, তবে মহিলা মিথ্যাবাদিনী এবং সে সত্যবাদী।
১২.২৮ ) অত:পর গৃহ¯¦ামী যখন দেখল যে, তার জামা পেছন দিক থেকে ছিন্ন, তখন সে বলল: নিশ্চয় এটা তোমাদের ছলনা। নি:সন্তেদহে তোমাদের ছলনা খুবই মারাতœক।
১২.২৯ ) ইউসুফ এ প্রসঙগ ছাড়! আর হে নারী, এ পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর নি:সন্তেদহে তুমি-ই পাপাচারিনী।
১২.৩০ ) নগরে মহিলারা বলাবলি করতে লাগল যে, আযীযের স্ত্রী ¯¦ীয় গোলামকে কুমতলব চরিতার্থ করার জন্য ফুসলায়। সে তার প্রেমে উ¤মত্ত হয়ে গেছে। আমরা তো তাকে প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে দেখতে পাচিছ।
১২.৩১ ) যখন সে তাদের চক্রান্ত শুনল, তখন তাদেরকে ডেকে পাঠাল এবং তাদের জন্যে একটি ভোজ সভার আয়োজন করল। সে তাদের প্রত্যেককে একটি ছুরি দিয়ে বলল: ইউসুফ এদের সামনে চলে এস। যখন তারা তাকে দেখল, হতভ¤¦ হয়ে গেল এবং আপন হাত কেটে ফেলল। তারা বলল: কখনই নয় এ ব্যক্তি মানব নয়। এ তো কোন মহান ফেরেশতা।
১২.৩২ ) মহিলা বলল: এ ঐ ব্যক্তি, যার জন্যে তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করছিলে। আমি ওরই মন জয় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তূ সে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে। আর আমি যা আদেশ দেই, সে যদি তা না করে, তবে অবশ্যই সে কারাগারে প্রেরিত হবে এবং লাঞ্চিত হবে।
১২.৩৩ ) ইউসুফ বলল: হে পালনকর্তা তারা আমাকে যে কাজের দিকে আহবান করে, তার চাইতে আমি কারাগারই পছন্তদ করি। যদি আপনি তাদের চক্রান্ত আমার উপর থেকে প্রতিহত না করেন, তবে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাব।
১২.৩৪ ) অত:পর তার পালনকর্তা তার দোয়া কবুল করে নিলেন। অত:পর তাদের চক্রান্ত প্রতিহত করলেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।
১২.৩৫ ) অত:পর এসব নিদর্শন দেখার পর তারা তাকে কিছুদিন কারাগারে রাখা সমীচীন মনে করল।
১২.৩৬ ) তাঁর সাথে কারাগারে দুজন যুবক প্রবেশ করল। তাদের একজন বলল: আমি ¯¦প্নে দেখলাম যে, আমি মদ নিঙড়াচিছ। অপরজন বলল: আমি দেখলাম যে, নিজ মাথায় রুটি বহন করছি। তা থেকে পাখী ঠুকরিয়ে খাচেছ। আমাদের কে এর ব্যাখ্যা বলুন। আমরা আপনাকে সৎকর্মশীল দেখতে পাচিছ।
১২.৩৭ ) তিনি বললেন: তোমাদেরকে প্রত্যহ যে খাদ্য দেয়া হয়, তা তোমাদের কাছে আসার আগেই আমি তার ব্যাখ্যা বলে দেব। এ জ্ঞান আমার পালনকর্তা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। আমি ঐসব লোকের ধর্ম পরিত্যাগ করেছি যারা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে না এবং পরকালে অবিশ্বাসী।
১২.৩৮ ) আমি আপন পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের ধর্ম অনুসরণ করছি। আমাদের জন্য শোভা পায় না যে, কোন বস্তূকে আল্লাহ্র অংশীদার করি। এটা আমাদের প্রতি এবং অন্য সব লোকের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ। কিন্ত অধিকাংশ লোক অনুগ্রহ ¯¦ীকার করে না।
১২.৩৯ ) হে কারাগারের সঙ্গীরা! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ্?
১২.৪০ ) তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের এবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছে। আল্লাহ্ এদের কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। আল্লাহ্ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তূ অধিকাংশ লোক তা জানে না।
১২.৪১ ) হে কারাগারের সঙ্গীরা! তোমাদের একজন আপন প্রভুকে মদ্যপান করাবে এবং দ্বিতীয়জন, তাকে শুলে চড়ানো হবে। অত:পর তার মস্তক থেকে পাখী আহার করবে। তোমরা যে, বিষয়ে জানার আগ্রহী তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।
১২.৪২ ) যে ব্যক্তি স¤পর্কে ধারণা ছিল যে, সে মুক্তি পাবে, তাকে ইউসুফ বলে দিল: আপন প্রভুর কাছে আমার আলোচনা করবে। অত:পর শয়তান তাকে প্রভুর কাছে আলোচনার কথা ভুলিয়ে দিল। ফলে তাঁকে কয়েক বছর কারাগারে থাকতে হল।
১২.৪৩ ) বাদশাহ বলল: আমি ¯¦প্নে দেখলাম, সাতটি মোটাতাজা গাভী-এদেরকে সাতটি শীর্ণ গাভী খেয়ে যাচেছ এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অন্যগুলো শু®ক। হে পরিষদবর্গ! তোমরা আমাকে আমার ¯¦প্নের ব্যাখ্যা বল, যদি তোমরা ¯¦প্নের ব্যাখ্যায় পারদর্শী হয়ে থাক।
১২.৪৪ ) তারা বলল: এটা কল্পনাপ্রসূত ¯¦প্ন। এরূপ ¯¦প্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।
১২.৪৫ ) দু'জন কারারুদ্ধের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পর স¥রণ হলে, সে বলল, আমি তোমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলছি। তোমরা আমাকে প্রেরণ কর।
১২.৪৬ ) সে তথায় পৌঁÍছে বলল: হে ইউসুফ! হে সত্যবাদী! সাতটি মোটাতাজা গাভী-তাদেরকে খাচেছ সাতটি শীর্ণ গাভী এবং সাতটি সবুজ শীর্ষ ও অন্যগুলো শু®ক; আপনি আমাদেরকে এ ¯¦প্ন স¤পর্কে পথনির্দেশ প্রদান করুন: যাতে আমি তাদের কাছে ফিরে গিয়ে তাদের অবগত করাতে পারি।
১২.৪৭ ) বলল: তোমরা সাত বছর উত্তম রূপে চাষাবাদ করবে। অত:পর যা কাটবে, তার মধ্যে যে সামান্য পরিমাণ তোমরা খাবে তা ছাড়া অবশিষ্ট শস্য শীষ সমেত রেখে দেবে।
১২.৪৮ ) এবং এরপরে আসবে দূর্ভিক্ষের সাত বছর; তোমরা এ দিনের জন্যে যা রেখেছিলে, তা খেয়ে যাবে, কিন্তূ অল্প পরিমাণ ব্যতীত, যা তোমরা তুলে রাখবে।
১২.৪৯ ) এর পরেই আসবে একবছর-এতে মানুষের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হবে এবং এতে তারা রস নিঙড়াবে।
১২.৫০ ) বাদশাহ্ বলল: ফিরে যাও তোমাদের প্রভুর কাছে এবং জিজ্ঞেস কর তাকে ঐ মহিলার ¯¦রূপ কি, যারা ¯¦ীয় হস্ত কর্তন করেছিল! আমার পালনকর্তা তো তাদের ছলনা সবই জানেন।
১২.৫১ ) বাদশাহ মহিলাদেরকে বললেন: তোমাদের হাল-হাকিকত কি, যখন তোমরা ইউসুফকে আত্মসংবরণ থেকে ফুসলিয়েছিলে? তারা বলল: আল্লাহ্ মহান, আমরা তার স¤পর্কে মন্তদ কিছু জানি না। আযীয-পত্মি বলল: এখন সত্য কথা প্রকাশ হয়ে গেছে। আমিই তাকে আত্মসংবরণ থেকে ফুসলিয়েছিলাম এবং সে সত্যবাদী।
১২.৫২ ) ইউসুফ বললেন: এটা এজন্য, যাতে আযীয জেনে নেয় যে, আমি গোপনে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। আরও এই যে, আল্লাহ্ বিশ্বাসঘাতকদের প্রতারণাকে এগুতে দেন না।
১২.৫৩ ) আমি নিজেকে নির্দোষ বলি না। নিশ্চয় মানুষের মন মন্তদ কর্মপ্রবণ কিন্তূ সে নয়-আমার পালনকর্তা যার প্রতি অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয় আমার পালনকর্তা ক্ষমাশীল, দয়ালু।
১২.৫৪ ) বাদশাহ বলল: তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো। আমি তাকে নিজের বিশ্বস্ত সহচর করে রাখব। অত:পর যখন তার সাথে মতবিনিময় করল, তখন বলল: নিশ্চয়ই আপনি আমার কাছে আজ থেকে বিশ্বস্ত হিসাবে মর্যাদার স্থান লাভ করেছেন।
১২.৫৫ ) ইউসুফ বলল: আমাকে দেশের ধন-ভান্ডারে নিযুক্ত করুন। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও অধিক জ্ঞানবান।
১২.৫৬ ) এমনিভাবে আমি ইউসুফকে সে দেশের বুকে প্রতিন্ঠা দান করেছি। সে তথায় যেখানে ইচছা স্থান করে নিতে পারত। আমি ¯¦ীয় রহমত যাকে ইচছা পৌÍছে দেই এবং আমি পূণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করি না।
১২.৫৭ ) এবং ঐ লোকদের জন্য পরকালে প্রতিদান উত্তম যারা ঈমান এনেছে ্ও সতর্কতা অবল¤¦ন করে।
১২.৫৮ ) ইউসুফের ভ্রাতারা আগমন করল, অত:পর তার কাছে উপস্থিত হল। সে তাদেরকে চিনল এবং তারা তাকে চিনল না।
১২.৫৯ ) এবং সে যখন তাদেরকে তাদের রসদ প্রস্তূত করে দিল, তখন সে বলল: তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে আমার কাছে নিয়ে এসো। তোমরা কি দেখ না যে, আমি পুরা মাপ দেই এবং মেহমানদেরকে উত্তম সমাদার করি?
১২.৬০ ) অত:পর যদি তাকে আমার কাছে না আন, তবে আমার কাছে তোমাদের কোন বরাদ্ধ নেই এবং তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে না।
১২.৬১ ) তারা বলল: আমরা তার স¤পর্কে তার পিতাকে স¤মত করার চেষ্টা করব এবং আমাদেরকে একাজ করতেই হবে।
১২.৬২ ) এবং সে ভৃত্যদেরকে বলল: তাদের পণ্যমূল্য তাদের রসদ-পত্রের মধ্যে রেখে দাও-সম্ভবত: তারা গৃহে পৌঁÍছে তা বুঝতে পারবে, সম্ভবত: তারা পুনর্বার আসবে।
১২.৬৩ ) তারা যখন তাদের পিতার কাছে ফিরে এল তখন বলল: হে আমাদের পিতা, আমাদের জন্যে খাদ্য শস্যের বরাদ্দ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অতএব আপনি আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন; যাতে আমরা খাদ্য শস্যের বরাদ্দ আনতে পারি এবং আমরা অবশ্যই তার পুরোপুরি হেফাযত করব।
১২.৬৪ ) বললেন, আমি তার স¤পর্কে তোমাদেরকে কি সেরূপ বিশ্বাস করব, যেমন ইতিপূর্বে তার ভাই স¤পর্কে বিশ্বাস করেছিলাম? অতএব আল্লাহ্ উত্তম হেফাযতকারী এবং তিনিই সর্বাধিক দয়ালু।
১২.৬৫ ) এবং যখন তারা আসবাবপত্র খুলল, তখন দেখতে পেল যে, তাদেরকে তাদের পন্যমুল্য ফেরত দেয়া হয়েছে। তারা বলল: হে আমাদের পিতা, আমরা আর কি চাইতে পারি। এই আমাদের প্রদত্ত পন্যমূল্য, আমাদেরকে ফেরত দেয়া হয়েছে। এখন আমরা আবার আমাদের পরিবারবর্গের জন্যে রসদ আনব এবং আমাদের ভাইয়ের দেখাশোনা করব এবং এক এক উটের বরাদ্দ খাদ্যশস্য আমরা অতিরিক্ত আনব। ঐ বরাদ্দ সহজ।
১২.৬৬ ) বললেন, তাকে ততক্ষণ তোমাদের সাথে পাঠাব না, যতক্ষণ তোমরা আমাকে আল্লাহ্র নামে অঙ্গীকার না দাও যে, তাকে অবশ্যই আমার কাছে পৌঁÍছে দেবে; কিন্তূ যদি তোমরা সবাই একান্তই অসহায় না হয়ে যাও। অত:পর যখন সবাই তাঁকে অঙ্গীকার দিল, তখন তিনি বললেন: আমাদের মধ্যে যা কথাবার্তা হলো সে ব্যাপারে আল্লাহ্ই মধ্যস্থ রইলেন।
১২.৬৭ ) ইয়াকুব বললেন: হে আমার বৎসগণ! সবাই একই প্রবেশদ্বার দিয়ে যেয়ো না, বরং পৃথক পৃথক দরজা দিয়ে প্রবেশ করো। আল্লাহ্র কোন বিধান থেকে আমি তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারি না। নির্দেশ আল্লাহ্রই চলে। তাঁরই উপর আমি ভরসা করি এবং তাঁরই উপর ভরসা করা উচিত ভরসাকারীদের।
১২.৬৮ ) তারা যখন পিতার কথামত প্রবেশ করল, তখন আল্লাহ্র বিধানের বিরুদ্ধে তা তাদের বাঁচাতে পারল না। কিন্তূ ইয়াকুবের সিদ্ধান্তে তাঁর মনের একটি বাসনা ছিল, যা তিনি পূর্ণ করেছেন। এবং তিনি তো আমার শেখানো বিষয় অবগত ছিলেন। কিন্তূ অনেক মানুষ অবগত নয়।
১২.৬৯ ) যখন তারা ইউসুফের কাছে উপস্থিত হল, তখন সে আপন ভ্রাতাকে নিজের কাছে রাখল। বলল: নিশ্চই আমি তোমার সহোদর। অতএব তাদের কৃতকর্মের জন্যে দু:খ করো না।
১২.৭০ ) অত:পর যখন ইউসুফ তাদের রসদপত্র প্রস্তূত করে দিল, তখন পানপাত্র আপন ভাইয়ের রসদের মধ্যে রেখে দিল। অত:পর একজন ঘোষক ডেকে বলল: হে কাফেলার লোকজন, তোমরা অবশ্যই চোর।
১২.৭১ ) তারা ওদের দিকে মুখ করে বলল: তোমাদের কি হারিয়েছে?
১২.৭২ ) তারা বলল: আমরা বাদশাহর পানপাত্র হারিয়েছি এবং যে কেউ এটা এনে দেবে সে এক উটের বোঝা পরিমাণ মাল পাবে এবং আমি এর যামিন।
১২.৭৩ ) তারা বলল: আল্লাহ্র কসম, তোমরা তো জান, আমরা অনর্থ ঘটাতে এদেশে আসিনি এবং আমরা কখনও চোর ছিলাম না।
১২.৭৪ ) তারা বলল: যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও, তবে যে, চুরি করেছে তার কি শাস্তি?
১২.৭৫ ) তারা বলল: এর শাস্তি এই যে, যার রসদপত্র থেকে তা পাওয়া যাবে, এর প্রতিদানে সে দাসত্বে যাবে। আমরা যালেমদেরকে এভাবেই শাস্তি দেই।
১২.৭৬ ) অত:পর ইউসুফ আপন ভাইদের থলের পূর্বে তাদের থলে তল্লাশী শুরু করলেন। অবশেষে সেই পাত্র আপন ভাইয়ের থলের মধ্য থেকে বের করলেন। এমনিভাবে আমি ইউসুফকে কৌÍশল শিক্ষা দিয়েছিলাম। সে বাদশাহর আইনে আপন ভাইকে কখনও দাসত্বে দিতে পারত না, কিন্তু— আল্লাহ যদি ইচছা করেন। আমি যাকে ইচছা, মর্যাদায় উন্নীত করি এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছে অধিকতর এক জ্ঞানীজন।
১২.৭৭ ) তারা বলতে লাগল: যদি সে চুরি করে থাকে, তবে তার এক ভাইও ইতিপূর্বে চুরি করেছিল। তখন ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে রাখলেন এবং তাদেরকে জানালেন না। মনে মনে বললেন: তোমরা লোক হিসাবে নিতান্ত মন্তদ এবং আল্লাহ্ খুব জ্ঞাত রয়েছেন, যা তোমরা বর্ণনা করছ;
১২.৭৮ ) তারা বলতে লাগল: হে আযীয, তার পিতা আছেন, যিনি খুবই বৃৃদ্ধ বয়স্ক। সুতরাং আপনি আমাদের একজনকে তার বদলে রেখে দিন। আমরা আপনাকে অনুগ্রহশীল ব্যক্তিদের একজন দেখতে পাচিছ।
১২.৭৯ ) তিনি বললেন: যার কাছে আমরা আমাদের মাল পেয়েছি, তাকে ছাড়া আর কাউকে গ্রেফতার করা থেকে আল্লাহ্ আমাদের রক্ষা করুন। তা হলে তো আমরা নিশ্চিতই অন্যায়কারী হয়ে যাব।
১২.৮০ ) অত:পর যখন তারা তাঁর কাছ থেকে নিরাশ হয়ে গেল, তখন পরামর্শের জন্যে এখানে বসল। তাদের জ্যেন্ঠ ভাই বলল: তোমরা কি জান না যে, পিতা তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহ্র নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং পূর্বে ইউসুফের ব্যাপারেও তোমরা অন্যায় করেছো? অতএব আমি তো কিছুতেই এদেশ ত্যাগ করব না, যে পর্যন্ত না পিতা আমাকে আদেশ দেন অথবা আল্লাহ্ আমার পক্ষে কোন ব্যবস্থা করে দেন। তিনিই সর্বোত্তম ব্যবস্থাপক।
১২.৮১ ) তোমরা তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও এবং বল: পিতা আপনার ছেলে চুরি করেছে। আমরা তাই বলে দিলাম, যা আমাদের জানা ছিল এবং অদৃশ্য বিষয়ের প্রতি আমাদের লক্ষ্য ছিল না।
১২.৮২ ) জিজ্ঞেস করুন ঐ জনপদের লোকদেরকে যেখানে আমরা ছিলাম এবং ঐ কাফেলাকে, যাদের সাথে আমরা এসেছি। নিশ্চিতই আমরা সত্য বলছি।
১২.৮৩ ) তিনি বললেন: কিছুই না, তোমরা মনগড়া একটি কথা নিয়েই এসেছ। এখন ধৈর্যধারণই উত্তম। সম্ভবত: আল্লাহ্ তাদের সবাইকে একসঙ্গে আমার কাছে নিয়ে আসবেন তিনি সুবিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
১২.৮৪ ) এবং তাদের দিক থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন: হায় আফসোস ইউসুফের জন্যে। এবং দু:খে তাঁর চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গেল। এবং অসহনীয় মনস্তাপে তিনি ছিলেন ক্লিষ্ট।
১২.৮৫ ) তারা বলতে লাগল: আল্লাহ্র কসম আপনি তো ইউসুফের স¥রণ থেকে নিবৃত হবেন না, যে পর্যন্ত মরণপ›¥ না হয়ে যান কিংবা মৃতবরণ না করেন
১২.৮৬ ) তিনি বললেন: আমি তো আমার দু:খ ও অস্থিরতা আল্লাহ্র সমীপেই নিবেদন করছি এবং আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আমি যা জানি, তা তোমরা জান না।
১২.৮৭ ) বৎসগণ! যাও, ইউসুফ ও তার ভাইকে তালাশ কর এবং আল্লাহ্র রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ্র রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না।
১২.৮৮ ) অত:পর যখন তারা ইউসুফের কাছে পৌঁÍছল তখন বলল: হে আযীয, আমরা ও আমাদের পরিবারবর্গ কষ্টের স¤মুখীন হয়ে পড়েছি এবং আমরা অপর্যাপ্ত পুঁজি নিয়ে এসেছি। অতএব আপনি আমাদের পুরোপুরি বরাদ্দ দিন এবং আমাদের কে দান করুন। আল্লাহ্ দাতাদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকেন।
১২.৮৯ ) ইউসুফ বললেন: তোমাদের জানা আছে কি, যা তোমরা ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সাথে করেছ, যখন তোমরা অপরিণামদর্শী ছিলে?
১২.৯০ ) তারা বলল, তবে কি তুমিই ইউসুফ! বললেন: আমিই ইউসুফ এবং এ হল আমার সহোদর ভাই। আল্লাহ্ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। নিশ্চয় যে তাকওয়া অবল¤¦ন করে এবং সবর করে, আল্লাহ এহেন সৎকর্মশীলদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না।
১২.৯১ ) তারা বললঃ আল্লাহর কসম, আমাদের চাইতে আল্লাহ তোমাকে পছন্দ করেছেন এবং আমরা অবশ্যই অপরাধী ছিলাম।
১২.৯২ ) বললেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। তিনি সব মেহেরবানদের চাইতে অধিক মেহেরবান।
১২.৯৩ ) তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও। এটি আমার পিতার মুখন্ডলের উপর রেখে দিও, এতে তার দৃষ্টি শক্তি ফিরে আসবে। আর তোমাদের পরিবারবর্গের সবাইকে আমার কাছে নিয়ে এস।
১২.৯৪ ) যখন কাফেলা রওয়ানা হল, তখন তাদের পিতা বললেনঃ যদি তোমরা আমাকে অপ্রকৃতিস্থ না বল, তবে বলিঃ আমি নিশ্চিতরূপেই ইউসুফের গন্ধ পাচ্ছি।
১২.৯৫ ) লোকেরা বললঃ আল্লাহর কসম, আপনি তো সেই পুরানো ভ্রান্তিÍতেই পড়ে আছেন।
১২.৯৬ ) অতঃপর যখন সুসংবাদদাতা পৌঁÍছাল, সে জামাটি তার মুখে রাখল। অমনি তিনি দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেলেন। বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে যা জানি তোমরা তা জান না?
১২.৯৭ ) তারা বললঃ পিতা আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আমরা অপরাধী ছিলাম।
১২.৯৮ ) বললেন, সত্ত্বরই আমি পালনকর্তার কাছে তোমাদের জন্য ক্ষমা চাইব। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালূ।
১২.৯৯ ) অতঃপর যখন তারা ইউসুফের কাছে পৌঁÍছাল, তখন ইউসুফ পিতা-মাতাকে নিজের কাছে জায়গা দিলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ চাহেন তো শান্তিÍ চিত্তে মিসরে প্রবেশ করুন।
১২.১০০ ) এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর বসালেন এবং তারা সবাই তার সামনে সেজদানত হল। তিনি বললেনঃ পিতা এ হচ্ছে আমার ইতিপূর্বেকার স্বপ্নের বর্ণনা আমার পালনকর্তা একে সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমার প্রতি অণুগ্রহ করেছেন। আমাকে জেল থেকে বের করেছেন এবং আমানাদেরকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন, শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করে দেয়ার পর। আমার পালনকতা যা চান, কৌÍশলে সম্পন্ন করেন। নিশ্চয় তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
১২.১০১ ) হে পালনকর্তা আপনি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতাও দান করেছেন এবং আমাকে বিভিন্ন স্বপ্ন তাৎপর্য সহ ব্যাখ্যা কারার বিদ্যা শিখিয়ে দিয়েছেন। হে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা, আপনিই আমার কার্যনির্বাহী ইহকাল ও পরকালে। আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যুদান করুন এবং আমাকে স্বজনদের সাথে মিলিত করুন।
১২.১০২ ) এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরন করি। আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল এবং চক্রান্তÍ করছিল।
১২.১০৩ ) আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয়।
১২.১০৪ ) আপনি এর জন্য তাদের কাছে কোন বিনিময় চান না। এটা তো সারা বিশ্বের জন্য উপদেশ বৈ নয়।
১২.১০৫ ) অনেক নিদের্শন রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যেগুলোর উপর দিয়ে তারা পথ অতিক্রম করে এবং তারা এসবের দিকে মনোনিবেশ করে  না।
১২.১০৬ ) অনেক মানুষ আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্ত‘ সাথে সাথে শিরকও করে।
১২.১০৭ ) তারা কি নির্ভীক হয়ে গেছে এ বিষয়ে যে, আল্লাহর আযাবের কোন বিপদ তাদেরকে আবৃত করে ফেলবে অথবা তাদের কাছে হঠাৎ কেয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা টেরও পাবে না?
১২.১০৮ ) বলে দিনঃ এই আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে বুঝে সুঝে দাওয়াত দেই। আমি এবং আমার অনুসারীরা আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আমি অংশীবাদীদের অন্তÍর্ভুক্ত নই।
১২.১০৯ ) আপনার পূর্বে আমি যতজনকে রাসূল করে পাঠিয়েছি, তারা সবাই পুরুষই ছিল জনপদবাসীদের মধ্য থেকে। আমি তাদের কাছে ওহী প্রেরন করতাম। তারা কি দেশ-বিদেশ ভ্রমন করে না, যাতে দেখে নিত কিরূপ পরিণতি হয়েছে তাদের যারা পূর্বে ছিল? সংযমকারীদের জন্যে পরকালের আবাসই উত্তম। তারা কি এখনও বোঝে না?
১২.১১০ ) এমনকি যখন পযগম্বরগণ নৈরাশ্যে পতিত হয়ে যেতেন, এমনকি এরূপ ধারণা করতে শুরু করতেন যে, তাদের অণুমান বুঝি মিথ্যায় পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তখন তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁÍছে। অতঃপর আমি যাদের চেয়েছি তারা উদ্ধার পেয়েছে। আমার শাস্তি অপরাধী সম্প্রদায় থেকে প্রতিহত হয় না।
১২.১১১ ) তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য প্রচুর শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে, এটা মনগড়া কথা নয়, কিন্তÍু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন এবং প্রত্যেক বস্তুর বিবরন রহমত ও হেদায়েত।

No comments:

Post a Comment