Tuesday, January 5, 2016

সূরা হূদ বাংলা অনুবাদ

(১১) হূদঃ ১২৩
১১.১ ) আলিফ, লা-ম, রা; এটি এমন এক কিতাব, যার আয়াত সমূহ সুপ্রতিন্ঠিত অত:পর সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ হতে।
১১.২ ) যেন তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো বন্তেদগী না কর। নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি তাঁরই পক্ষ হতে সতর্ককারী ও সুসংবাদ দাতা।
১১.৩ ) আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তা সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অনন্তর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর। তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করবেন এবং অধিক আমলকারীকে বেশী করে দেবেন্ আর যদি তোমরা বিমুখ হতে থাক, তবে আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের আশঙ্কা করছি।
১১.৪ ) আল্লাহ্র সান্নিধ্যেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
১১.৫ ) জেনে রাখ, নিশ্চয়ই তারা নিজেদের বক্ষদেশ ঘুরিয়ে দেয় যেন আল্লাহ্র নিকট হতে লুকাতে পারে। শুন, তারা তখন কাপড়ে নিজেদেরকে আচছাদিত করে, তিনি তখনও জানেন যা কিছু তারা চুপিসারে বলে আর প্রকাশ্যভাবে বলে। নিশ্চয় তিনি জানেন যা কিছু অন্তর সমূহে নিহিত রয়েছে।
১১.৬ ) আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ্ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে।
১১.৭ ) তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেন, তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে, তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে, তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে, ্ৗÍ৮২২০;নিশ্চয় তোমাদেরকে মৃত্যুর পরে জীবিত ওঠানো হবে, তখন কাফেরেরা অবশ্য বলে এটা তো ¯পষ্ট যাদু!্ৗÍ৮২২১;
১১.৮ ) আর যদি আমি এক নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত তাদের আযাব স্থগিত রাখি, তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে কোন জিনিসে আযাব ঠেকিয়ে রাখছে? শুনে রাখ, যেদিন তাদের উপর আযাব এসে পড়বে, সেদিন কিন্তূ তা ফিরে যাওয়ার নয়; তারা যে ব্যাপারে উপহাস করত তাই তাদেরকে ঘিরে ফেলবে।
১১.৯ ) আর অবশ্যই যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আ¯¦াদ গ্রহণ করতে দেই, অত:পর তা তার থেকে ছিনিয়ে নেই; তাহলে সে হতাশ ও কৃতঘœ হয়।
১১.১০ ) আর যদি তার উপর আপতিত দু:খ কষ্টের পরে তাকে সুখভোগ করতে দেই, তবে সে বলতে থাকে যে, আমার অমঙ্গল দূর হয়ে গেছে, আর সে আনন্তেদ আতœহারা হয়, অহঙ্কারে উদ্দত হয়ে পড়ে।
১১.১১ ) তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে।
১১.১২ ) আর সম্ভবত: ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট পাঠানো হয়, তার কিছু অংশ বর্জন করবে? এবং এতে মন ছোট করে বসবে? তাদের এ কথায় যে, তাঁর উপর কোন ধন-ভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নি? অথবা তাঁর সাথে কোন ফেরেশতা আসেনি কেন? তুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুরই দায়িত্বভার তো আল্লাহ্ই নিয়েছেন।
১১.১৩ ) তারা কি বলে? কোরআন তুমি তৈরী করেছ? তুমি বল, তবে তোমরাও অনুরূপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ্ ছাড়া যাকে পার ডেকে নাও, যদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে।
১১.১৪ ) অত:পর তারা যদি তোমাদের কথা পুরণ করতে অপারগ হয়; তবে জেনে রাখ, এটি আল্লাহ্র এলম দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে; আরো একীন করে নাও যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। অতএব, এখন কি তোমরা আতœসমর্পন করবে?
১১.১৫ ) যে ব্যক্তি পার্থিবজীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে, হয় আমি তাদের দুুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হয় না।
১১.১৬ ) এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ করেছে; আর যা কিছু উপার্জন করেছিল, সবই বিনষ্ট হল।
১১.১৭ ) আচছা বল তো, যে ব্যক্তি তার প্রভুর সু¯পষ্ট পথে রয়েছে, আর সাথে সাথে আল্লাহ্র তরফ থেকে একটি সাক্ষীও বর্তমান রয়েছে এবং তার পূর্ববর্তী মূসা (আ:) এর কিতাবও সাক্ষী যা ছিল পথনির্দেশক ও রহমত ¯¦রূপ, (তিনি কি অন্যান্যের সমান) অতএব তাঁরা কোরআনের প্রতি ঈমান আনেন। আর ঐসব দলগুলি যে কেউ তা অ¯¦ীকার করে, দোযখই হবে তার ঠিকানা। অতএব, আপনি তাতে কোন সন্তেদহে থাকবেন না। নি:সন্তেদহে তা আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে ধ্রুব সত্য; তথাপি অনেকেই তা বিশ্বাস করে না।
১১.১৮ ) আর তাদের চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারে, যারা আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যারোপ করে। এসব লোককে তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত স¤মূখীন করা হবে আর সাক্ষিগণ বলতে থাকবে, এরাই ঐসব লোক, যারা তাদের পালনকর্তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। শুনে রাখ, যালেমদের উপর আল্লাহ্র অভিস¤পাত রয়েছে।
১১.১৯ ) যারা আল্লাহর পথে বাধা দেয়, আর তাতে বক্রতা খুজে বেড়ায়, এরাই আখরাতকে অ¯¦ীকার করে।
১১.২০ ) তারা পৃথিবীতেও আল্লাহ্কে অপারগ করতে পারবে না এবং আল্লাহ্্ ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই, তাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি রয়েছে; তারা শুনতে পারত না এবং দেখতেও পেত না।
১১.২১ ) এরা সে লোক, যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আর এরা যা কিছু মিথ্যা মা'বুদ সাব্যস্ত করেছিল, তা সবই তাদের থেকে হারিয়ে গেছে।
১১.২২ ) আখেরাতে এরাই হবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ কোন সন্তেদহ নেই।
১১.২৩ ) নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে এবং ¯¦ীয় পালনকর্তার সমীপে বিনতি প্রকাশ করেছে তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।
১১.২৪ ) উভয় পক্ষের দৃষ্টান্ত হচেছ যেমন অন্ধ ও বধির এবং যে দেখতে পায় ও শুনতে পায় উভয়ের অবস্থা কি এক সমান? তবুও তোমরা কি ভেবে দেখ না?
১১.২৫ ) আর অবশ্যই আমি নূহ (আ:) কে তাঁর জাতির প্রতি প্রেরণ করেছি, (তিনি বললেন) নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য প্রকাশ্য সতর্ককারী।
১১.২৬ ) তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত কারো এবাদত করবে না। নিশ্চয় আমি তোমাদের ব্যাপারে এক যন্ত¿ণাদায়ক দিনের আযাবের ভয় করছি।
১১.২৭ ) তখন তাঁর কওমের কাফের প্রধানরা বলল আমরা তো আপনাকে আমাদের মত একজন মানুষ ব্যতীত আর কিছু মনে করি না; আর আমাদের মধ্যে যারা ইতর ও স্থুল-বুদ্ধিস¤পন্ন তারা ব্যতীত কাউকে তো আপনার আনুগত্য করতে দেখি না এবং আমাদের উপর আপনাদের কেন প্রাধান্য দেখি না, বরং আপনারা সবাই মিথ্যাবাদী বলে আমারা মনে করি।
১১.২৮ ) নূহ (আ:) বললেন-হে আমার জাতি! দেখ তো আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে ¯পষ্ট দলীলের উপর থাক, আর তিনি যদি তাঁর পক্ষ হতে আমাকে রহমত দান করে থাকেন, তারপরেও তা তোমাদের চোখে না পড়ে, তাহলে আমি কি উহা তোমাদের উপর তোমাদের ইচছার বিরুদ্ধেই চাপিয়ে দিতে পারি ?
১১.২৯ ) আর হে আমার জাতি! আমি তো এজন্য তোমাদের কাছে কোন অর্থ চাই না; আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্র জি¤মায় রয়েছে। আমি কিন্তূ ঈমানদারদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত লাভ করবে। বরঞ্চ তোমাদেরই আমি অজ্ঞ সম্প্রদায় দেখছি।
১১.৩০ ) আর হে আমার জাতি! আমি যদি তাদের তাড়িয়ে দেই তাহলে আমাকে আল্লাহ্ হতে রেহাই দেবে কে? তোমরা কি চিন্তা করে দেখ না?
১১.৩১ ) আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহ্র ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্চিত আল্লাহ্ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ্ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব।
১১.৩২ ) তারা বলল-হে নুহ! আমাদের সাথে আপনি তর্ক করেছেন এবং অনেক কলহ করেছেন। এখন আপনার সেই আযাব নিয়ে আসুন, যে স¤পর্কে আপনি আমাদিগকে সতর্ক করেছেন, যদি আপনি সত্যবাদী হয়ে থাকেন।
১১.৩৩ ) তিনি বলেন, উহা তোমাদের কাছে আল্লাহ্ই আনবেন, যদি তিনি ইচছা করেন তখন তোমরা পালিয়ে তাঁকে অপারগ করতে পারবে না।
১১.৩৪ ) আর আমি তোমাদের নসীহত করতে চাইলেও তা তোমাদের জন্য ফল্প্রসূ হবে না, যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে গোমরাহ করতে চান; তিনিই তোমাদের পালনকর্তা এবং তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
১১.৩৫ ) তারা কি বলে? আপনি কোরআন রচনা করে এনেছেন? আপনি বলে দিন আমি যদি রচনা করে এনে থাকি, তবে সে অপরাধ আমার, আর তোমরা যেসব অপরাধ কর তার সাথে আমার কোন স¤পর্ক নেই।
১১.৩৬ ) আর নুহ (আ:) এর প্রতি ওহী প্রেরণ করা হলো যে, যারা ইতিমধ্যেই ঈমান এনেছে তাদের ছাড়া আপনার জাতির অন্য কেউ ঈমান আনবেনা এতএব তাদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হবেন না।
১১.৩৭ ) আর আপনি আমার স¤মুখে আমারই নির্দেশ মোতাবেক একটি নৌÍকা তৈরী করুন এবং পাপিন্ঠদের ব্যাপারে আমাকে কোন কথা বলবেন না। অবশ্যই তারা ডুবে মরবে।
১১.৩৮ ) তিনি নৌÍকা তৈরী করতে লাগলেন, আর তাঁর কওমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা যখন পার্শ্ব দিয়ে যেত, তখন তাঁকে বিদ্রুপ করত। তিনি বললেন, তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে তোমরা যেমন উপহাস করছ আমরাও ত™্রুপ তোমাদের উপহাস করছি।
১১.৩৯ ) অত:পর অচিরেই জানতে পারবে-লাঞ্জনাজনক আযাব কার উপর আসে এবং চিরস্থায়ী আযাব কার উপর অবতরণ করে।
১১.৪০ ) অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁÍছাল এবং ভুপৃন্ঠ উচছসিত হয়ে উঠল, আমি বললাম: সর্বপ্রকার জোড়ার দুটি করে এবং যাদের উপরে পূর্বহেƒই হুকুম হয়ে গেছে তাদের বাদি দিয়ে, আপনার পরিজনবর্গ ও সকল ঈমানদারগণকে নৌÍকায় তুলে নিন। বলাবাহুল্য অতি অল্পসংখ্যক লোকই তাঁর সাথে ঈমান এনেছিল।
১১.৪১ ) আর তিনি বললেন, তোমরা এতে আরোহন কর। আল্লাহ্র নামেই এর গতি ও স্থিতি। আমার পালনকর্তা অতি ক্ষমাপরায়ন, মেহেরবান।
১১.৪২ ) আর নৌÍকাখানি তাদের বহন করে চলল পর্বত প্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝে, আর নূহ (আ:) তাঁর পুত্রকে ডাক দিলেন আর সে সরে রয়েছিল, তিনি বললেন, প্রিয় বৎস! আমাদের সাথে আরোহন কর এবং ্ কাফেরদের সাথে থেকো না।
১১.৪৩ ) সে বলল, আমি অচিরেই কোন পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে। নূহ (আ:) বল্লেন আজকের দিনে আল্লাহ্র হুকুম থেকে কোন রক্ষাকারী নেই। একমাত্র তিনি যাকে দয়া করবেন। এমন সময় উভয়ের মাঝে তরঙ্গ আড়াল হয়ে দাঁড়াল, ফলে সে নিমজ্জিত হল।
১১.৪৪ ) আর নির্দেশ দেয়া হল-হে পৃথিবী! তোমার পানি গিলে ফেল, আর হে আকাশ, ক্ষান্ত হও। আর পানি হ্রাস করা হল এবং কাজ শেষ হয়ে গেল, আর জুদী পর্বতে নৌÍকা ভিড়ল এবং ঘোষনা করা হল, দুরাতœা কাফেররা নিপাত যাক।
১১.৪৫ ) আর নূহ (আ:) তাঁর পালনকর্তাকে ডেকে বললেন-হে পরওয়ারদেগার, আমার পুত্র তো আমার পরিজনদের অন্তর্ভুক্ত; আর আপনার ওয়াদাও নি:সন্তেদহে সত্য আর আপনিই সর্বাপেক্ষা বিজ্ঞ ফয়সালাকারী।
১১.৪৬ ) আল্লাহ্ বলেন-হে নূহ! নিশ্চয় সে আপনার পরিবারভুক্ত নয়। নিশ্চই সে দুরাচার! সুতরাং আমার কাছে এমন দরখাস্ত করবেন না, যার খবর আপনি জানেন না। আমি আপনাকে উপপদেশ দিচিছ যে, আপনি অজ্ঞদের দলভুক্ত হবেন না।
১১.৪৭ ) নূহ (আ:) বলেন-হে আমার পালনকর্তা আমার যা জানা নেই এমন কোন দরখাস্ত করা হতে আমি আপনার কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন, দয়া না করেন, তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব।
১১.৪৮ ) হুকুম হল-হে নূহ (আ:)! আমার পক্ষ হতে নিরাপত্তা এবং আপনার নিজের ও সঙ্গীয় সম্প্রদায়গুলির উপর বরকত সহকারে অবতরণ করুণ। আর অন্যান্য যেসব সম্প্রদায় রয়েছে আমি তাদের কেও উপকৃত হতে দেব। অত:পর তাদের উপর আমার দরুন আযাব আপতিত হবে।
১১.৪৯ ) এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন করছি। ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না। আপনি ধৈর্যধারণ করুন। যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল, সন্তেদহ নেই।
১১.৫০ ) আর আদ জাতির প্রতি আমি তাদের ভাই হুদকে প্রেরণ করেছি; তিনি বলেন-হে আমার জাতি, আল্লাহ্র বন্তেদগী কর, তিনি ভিন্ন তোমাদের কোন মাবুদ নেই, তোমরা সবাই মিথ্যা আরোপ করছ।
১১.৫১ ) হে আমার জাতি! আমি এজন্য তোমাদের কাছে কোন মজুরী চাই না; আমার মজুরী তাঁরই কাছে যিনি আমাকে পয়দা করেছেন; তবু তোমরা কেন বোঝ না?
১১.৫২ ) আর হে আমার কওম! তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অত:পর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন, তোমরা কিন্তূ অপরাধীদের মত বিমুখ হয়ো না।
১১.৫৩ ) তারা বলল-হে হুদ, তুমি আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে আস নাই, আমরা তোমার কথায় আামাদের দেব-দেবীদের বর্জন করতে পারি না আর আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনয়নকারীও নই।
১১.৫৪ ) বরং আমরাও তো বলি যে, আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে। হুদ বললেন-আমি আল্লাহকে সাক্ষী করেছি আর তোমাও সাক্ষী থাক যে, আমার কোন স¤পর্ক নাই তাঁদের সাথে যাদের কে তোমরা শরিক করছ;
১১.৫৫ ) তাকে ছাড়া, তোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাও, অত:পর আমাকে কোন অবকাশ দিও না।
১১.৫৬ ) আমি আল্লাহ্র উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নাই যা তাঁর র্পূণ আয়ত্তাধীন নয়। আমার পালকর্তার সরল পথে সন্তেদহ নেই।
১১.৫৭ ) তথাপি যদি তোমরা মুখ ফেরাও, তবে আমি তোমাদেরকে তা পৌÍছিয়েছি যা আমার কাছে তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছে; আর আমার পালনকর্তা অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, আর তোমরা তাঁর কিছুই বিগড়াতে পারবে না; নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগারই প্রতিটি বস্তূুর হেফাজতকারী।
১১.৫৮ ) আর আমার আদেশ যখন উপস্থিত হল, তখন আমি নিজ রহমতে হুদ এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে পরিত্রাণ করি এবং তাদেরকে এক কঠিন শাস্তি থেকে রক্ষা করি।
১১.৫৯ ) এ ছিল আদ জাতি, যারা তাদের পালনকর্তার আয়াতকে অমান্য করেছে, আর তদীয় রসূলগণের অবাধ্যতা করেছে এবং প্রত্যেক উদ্ধত বিরোধীদের আদেশ পালন করেছে।
১১.৬০ ) এ দুনিয়ায় তাদের পিছনে পিছনে লা'নত রয়েছে এবং কেয়ামতের দিনেও; জেনে রাখ, আদ জাতি তাদের পালনকর্তাকে অ¯¦ীকার করেছে, হুদের জ্ঞাতি আদ জাতির প্রতি অভিস¤পাত রয়েছে জেনে রাখ।
১১.৬১ ) আর সামুদ জাতি প্রতি তাদের ভাই সালেহ কে প্রেরণ করি; তিনি বললেন-হে আমার জাতি। আল্লাাহর বন্তেদগী কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন উপাস্য নাই। তিনিই যমীন হতে তোমাদেরকে পয়দা করেছেন, তন্মধ্যে তোমাদেরকে বসতি দান করেছেন। অতএব; তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর অত:পর তাঁরই দিকে ফিরে চল আমার পালনকর্তা নিকটেই আছেন, কবুল করে থাকেন; সন্তেদহ নেই।
১১.৬২ ) তারা বলল-হে সালেহ, ইতিপূর্বে তোমার কাছে আমাদের বড় আশা ছিল। আমাদের বাপ-দাদা যা পূজা করত তুমি কি আমাদেরকে তার পূজা করতে নিষেধ কর? কিন্তূ যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচছ আমাদের তাতে এমন সন্তেদহ রয়েছে যে, মন মোটেই সায় দিচেছ না।
১১.৬৩ ) সালেহ বললেন-হে আমার জাতি! তোমরা কি মনে কর, আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে বুদ্ধি বিবেচনা লাভ করে থাকি আর তিনি যদি আমাকে নিজের তরফ হতে রহমত দান করে থাকেন, অত:পর আমি যদি তাঁর অবাধ্য হই তবে তার থেকে কে আমায় রক্ষা করবে? তোমরা তো আমার ক্ষতি ছাড়া কিছুই বৃদ্ধি করতে পরবে না
১১.৬৪ ) আর হে আমার জাতি! আল্লাহ্র এ উষ্ট্রীটি তোমাদের জন্য নিদর্শন, অতএব তাকে আল্লাহ্র যমীনে বিচরণ করে খেতে দাও, এবং তাকে মন্তদভাবে ¯পর্শও করবে না। নতুবা অতি সতঁর তোমাদেরকে আযাব পাকড়াও করবে।
১১.৬৫ ) তবু তারা উহার পা কেটে দিল। তখন সালেহ বললেন-তোমরা নিজেদের গৃহে তিনটি দিন উপভোগ করে নাও। ইহা এমন ওয়াদা যা মিথ্যা হবে না।
১১.৬৬ ) অত:পর আমার আযাব যখন উপস্থিত হল, তখন আমি সালেহকে ও তদীয় সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে উদ্ধার করি, এবং সেদিনকার অপমান হতে রক্ষা করি। নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা তিনি সর্বশক্তিমান পরাক্রমশালী।
১১.৬৭ ) আর ভয়ঙ্কর গর্জন পাপিন্ঠদের পাকড়াও করল, ফলে ভোর হতে না হতেই তারা নিজ নিজ গৃহসমূহে উপুর হয়ে পড়ে রইল।
১১.৬৮ ) যেন তাঁরা কোনদিনই সেখানে ছিল না। জেনে রাখ, নিশ্চয় সামুদ জাতি তাদের পালনকর্তার প্রতি অ¯¦ীকার করেছিল। আরো শুনে রাখ, সামুদ জাতির জন্য অভিশাপ রয়েছে।
১১.৬৯ ) আর অবশ্যই আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ইব্রাহীমেরে কাছে সুসংবাদ নিয়ে এসেছিল তারা বলল সালাম, তিনিও বললেন-সালাম। অত:পর অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি একটি ভুনা করা বাছুর নিয়ে এলেন!
১১.৭০ ) কিন্তূ যখন দেখলেন যে, আহার্যের দিকে তাদের হস্ত প্রসারিত হচেছ না, তখন তিনি সন্ধ্ৗিÍ৭১০; হলেন এবং মনে মনে তাঁদের স¤পর্কে ভয় অনুভব করতে লাগলেন। তারা বলল-ভয় পাবেন না। আমরা লুতের কওমের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
১১.৭১ ) তাঁর স্ত্রীও নিকটেই দাড়িয়েছিল, সে হেসে ফেলল। অত:পর আমি তাকে ইসহাকের জন্মের সুখবর দিলাম এবং ইসহাকের পরের ইয়াকুবেরও।
১১.৭২ ) সে বলল-কি দুর্ভাগ্য আমার! আমি সন্তান প্রসব করব? অথচ আমি বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছি আর আমার ¯¦ামীও বৃদ্ধ, এতো ভারী আশ্চর্য কথা।
১১.৭৩ ) তারা বলল-তুমি আল্লাহ্র হুকুম স¤পর্কে বিস¥য়বোধ করছ? হে গৃহবাসীরা, তোমাদের উপর আল্লাহ্র রহমত ও প্রভুত বরকত রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রশংসিত মহিমাময়।
১১.৭৪ ) অত:পর যখন ইব্রাহীম (আ:) এর আতঙ্ক দূর হল এবং তিনি সুসংবাদ প্রাপ্ত হলেন, তখন তিনি আমার সাথে তর্ক শুরু করলেন কওমে লুত স¤পর্কে।
১১.৭৫ ) ইব্রাহীম (আ:) বড়ই ধৈর্যশীল, কোমল অন্তর, আল্লাহ্্মুখী সন্তেদহ নেই।
১১.৭৬ ) ইব্রাহীম, এহেন ধারণা পরিহার কর; তোমার পালনকর্তার হুকুম এসে গেছে, এবং তাদের উপর সে আযাব অবশ্যই আপতিত হবে, যা কখনো প্রতিহত হবার নয়।
১১.৭৭ ) আর যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লুত (আ:) এর নিকট উপস্থিত হল। তখন তাঁদের আগমনে তিনি দুচিন্তাগ্রস্ত হলেন এবং তিনি বলতে লাগলেন-আজ অত্যন্ত কঠিন দিন।
১১.৭৮ ) আর তাঁর কওমের লোকেরা ¯¦ত:¯ফুর্তভাবে তার (গৃহ) পানে ছুটে আসতে লাগল। পূর্ব থেকেই তারা কু-কর্মে তৎপর ছিল। লূত (আ:) বললেন-হে আমার কওম, এ আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং অতিথিদের ব্যাপারে আমাকে লজ্জিত করো না, তোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নেই।
১১.৭৯ ) তারা বলল ু তুমি তো জানই, তোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই। আর আমরা কি চাই, তাও তুমি অবশ্যই জান।
১১.৮০ ) লূত (আ:) বললেন-হায়, তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা আমি কোন সূদৃঢ় আশ্রয় গ্রহণ করতে সক্ষম হতাম।
১১.৮১ ) মেহমান ফেরেশতাগন বলল-হে লুত (আ:) আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখনো তোমার দিকে পৌঁÍছাতে পারবে না। ব্যস তুমি কিছুটা রাত থাকতে থাকতে নিজের লোকজন নিয়ে বাইরে চলে যাও। আর তোমাদের কেউ যেন পিছনে ফিরে না তাকায়। কিন্তূ তোমার স্ত্রী নিশ্চয় তার উপরও তা আপতিত হবে, যা ওদের উপর আপতিত হবে। ভোর বেলাই তাদের প্রতিশ্রুতির সময়, ভোর কি খুব নিকটে নয়?
১১.৮২ ) অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁÍছাল, তখন আমি উক্ত জনপদকে উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর-পাথর বর্ষণ করলাম।
১১.৮৩ ) যার প্রতিটি তোমার পালনকর্তার নিকট চিহিƒত ছিল। আর সেই পাপিন্ঠদের থেকে খুব দূরেও নয়।
১১.৮৪ ) আর মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শোয়ায়েব (আ:) কে প্রেরণ করেছি। তিনি বললেন-হে আমার কওম! আল্লাহ্র বন্তেদগী কর, তিনি ছাড়া আমাদের কোন মাবুদ নাই। আর পরিমাপে ও ওজনে কম দিও না, আজ আমি তোমাদেরকে ভাল অবস্থায়ই দেখছি, কিন্তূ আমি তোমাদের উপর এমন একদিনের আযাবের আশঙ্কা করছি যেদিনটি পরিবেষ্টনকারী।
১১.৮৫ ) আর হে আমার জাতি, ন্যায়নিন্ঠার সাথে ঠিকভাবে পরিমাপ কর ও ওজন দাও এবং লোকদের জিনিসপত্রে কোনরূপ ক্ষতি করো না, আর পৃথিবীতে ফাসাদ করে বেড়াবে না।
১১.৮৬ ) আল্লাহ্ প্রদত্ত উদ্ধৃত্ত তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা ঈমানদার হও, আর আমি তো তোমাদের উপর সদা পর্যবেক্ষণকারী নই।
১১.৮৭ ) তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আ:) আপনার নামায কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-স¤পদে ইচছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক।
১১.৮৮ ) শোয়ায়েব (আ:) বললেন-হে দেশবাসী, তোমরা কি মনে কর! আমি যদি আমার পরওয়ারদেগারের পক্ষ হতে সু¯পষ্ট দলীলের উপর কায়েম থাকি আর তিনি যদি নিজের তরফ হতে আমাকে উত্তম রিযিক দান করে থাকেন, (তবে কি আমি তাঁর হুকুম অমান্য করতে পারি?) আর আমি চাই না যে তোমাদেরকে যা ছাড়াতে চাই পরে নিজেই সে কাজে লিপ্ত হব, আমি তো যথাসাধ্য শোধরাতে চাই। আল্লাহ্র মদদ দ্বারাই কিন্তূ কাজ হয়ে থাকে, আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে যাই।
১১.৮৯ ) আর হে আমার জাতি! আমার সাথে জিদ করে তোমরা নূহ বা হুদ অথবা সালেহ (আ:) এর কওমের মত নিজেদের উপর আযাব ডেকে আনবে না। আর লুতের জাতি তো তোমাদের থেকে খুব দূরে নয়।
১১.৯০ ) আর তোমাদের পালনকর্তার কাছে মার্জনা চাও এবং তাঁরই পানে ফিরে এসো নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগার খুবই মেহেরবান অতিস্নেহময়।
১১.৯১ ) তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আ:) আপনি যা বলেছেন তার অনেক কথাই আমরা বুঝি নাই, আমারা তো আপনাকে আমাদের মধ্যে দূর্বল ব্যক্তি রূপে মনে করি। আপনার ভাই বন্ধুরা না থাকলে আমরা আপনাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতাম। আমাদের দৃষ্টিতে আপনি কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি নন।
১১.৯২ ) শোয়ায়েব (আ:) বলেন-হে আমার জাতি, আমার ভাই বন্ধুরা কি তোমাদের কাছে আল্লাহ্র চেয়ে প্রভাবশালী? আর তোমরা তাকে বিস¥ৃত হয়ে পেছনে ফেলে রেখেছ, নিশ্চয় তোমাদের কার্যকলাপ আমার পালনকর্তার আয়ত্তে রয়েছে।
১১.৯৩ ) আর হে আমার জাতি, তোমরা নিজ স্থানে কাজ করে যাও, আমিও কাজ করছি, অচিরেই জানতে পারবে কার উপর অপমানকর আযাব আসে আর কে মিথ্যাবাদী? আর তোমরাও অপেক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম।
১১.৯৪ ) আর আমার হুকুম যখন এল, আমি শোয়ায়েব (আ:) ও তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে রক্ষা করি আর পাপিন্ঠদের উপর বিকট গর্জন পতিত হলো। ফলে ভোর না হতেই তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।
১১.৯৫ ) যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করে নাই। জেনে রাখ, সামুদের প্রতি অভিস¤পাতের মত মাদইয়ানবাসীর উপরেও অভিস¤পাত।
১১.৯৬ ) আর আমি মূসা (আ:) কে প্রেরণ করি আমার নিদর্শনাদি ও সু¯পষ্ট সনদসহ;
১১.৯৭ ) ফেরাউন ও তার পারিষদবর্গের কাছে, তবুও তারা ফেরাউনের হুকুমে চলতে থাকে, অথচ ফেরাউনের কোন কথা ন্যায় সঙ্গত ছিল না।
১১.৯৮ ) কেয়ামতের দিন সে তার জাতির লোকদের আগে আগে থাকবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পৌঁÍছে দিবে। আর সেটা অতীব নিকৃষ্ট স্থান, সেখানে তারা পৌÍঁছেছে।।
১১.৯৯ ) আর এ জগতেও তাদের পেছনে লানত রয়েছে এবং কিয়ামতের দিনেও; অত্যন্ত জঘন্য প্রতিফল, যা তারা পেয়েছে।
১১.১০০ ) এ হচেছ কয়েকটি জনপদের সামান্য ইতবৃত্ত, যা আমি আপনাকে শোনাচিছ। তন্মধ্যে কোন কোনটি এখনও বর্তমান আছে আর কোন কোনটির শিকড় কেটে দেয়া হয়েছে।
১১.১০১ ) আমি কিন্তূ তাদের প্রতি জুলুম করি নাই বরং তারা নিজেরাই নিজের উপর অবিচার করেছে। ফলে আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তারা যেসব মাবুদকে ডাকতো আপনার পালনকর্তার হুকুম যখন এসে পড়ল, তখন কেউ কোন কাজে আসল না। তারা শুধু বিপর্যয়ই বৃদ্ধি করল।
১১.১০২ ) আর তোমার পরওয়ারদেগার যখন কোন পাপপূর্ণ জনপদকে ধরেন, তখন এমনিভাবেই ধরে থাকেন। নিশ্চয় তাঁর পাকড়াও খুবই মারাতœক, বড়ই কঠোর।
১১.১০৩ ) নিশ্চয় ইহার মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন প্রতিটি মানুষের জন্য যে আখেরাতের আযাবকে ভয় করে। উহা এমন একদিন, যে দিন সব মানুষেই সমবেত হবে, সেদিনটি যে হাযিরের দিন।
১১.১০৪ ) আর আমি যে উহা বিল¤ি¦ত করি, তা শুধু একটি ওয়াদার কারণে যা নির্ধারিত রয়েছে।
১১.১০৫ ) যেদিন তা আসবে সেদিন আল্লাহ্র অনুমতি ছাড়া কেউ কোন কথা বলতে পারে না। অত:পর কিছু লোক হবে হতভাগ্য আর কিছু লোক সৌÍভাগ্যবান।
১১.১০৬ ) অতএব যারা হতভাগ্য তারা দোযখে যাবে, সেখানে তারা আর্তনাদ ও চিৎকার করতে থাকবে।
১১.১০৭ ) তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রতিপালক অন্য কিছু ইচছা করলে ভিন্ন কথা। নিশ্চয় তোমার পরওয়ারদেগার যা ইচছা করতে পারেন।
১১.১০৮ ) আর যারা সৌÍভাগ্যবান তারা বেহেশতের মাঝে, সেখানেই চিরদিন থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রভু অন্য কিছু ইচছা করলে ভিন্ন কথা। এ দানের ধারাবাহিকতা কখনো ছি›¥ হওয়ার নয়।
১১.১০৯ ) অতএব, তারা যেসবের উপাসনা করে তুমি সে ব্যাপারে কোনরূপ ধোঁকায় পড়বে না। তাদের পূর্ববর্তী বাপ-দাদারা যেমন পূজা উপাসনা করত, এরাও তেমন করছে। আর নিশ্চয় আমি তাদেরকে আযাবের ভাগ কিছু মাত্রও কম না করেই পুরোপুরি দান করবো।
১১.১১০ ) আর আমি মূসা (আ:)-কে অবশ্যই কিতাব দিয়েছিলাম অত:পর তাতে বিরোধ সৃষ্টি হল; বলাবাহুল্য তোমার পালনকর্তার পক্ষ হতে, একটি কথা যদি আগেই বলা না হত, তাহলে তাদের মধ্যে চুড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যেত তারা এ ব্যাপারে এমনই সন্তেদহ প্রবণ যে, কিছুতেই নিশ্চিত হতে পারছে না।
১১.১১১ ) আর যত লোকই হোক না কেন, যখন সময় হবে, তোমার প্রভু তাদের সকলেরই আমলের প্রতিদান পুরোপুরি দান করবেন। নিশ্চয় তিনি তাদের যাবতীয় কার্যকলাপের খবর রাখেন।
১১.১১২ ) অতএব, তুমি এবং তোমার সাথে যারা তওবা করেছে সবাই সোজা পথে চলে যাও-যেমন তোমায় হুকুম দেয়া হয়েছে এবং সীমা লঘন করবে না, তোমরা যা কিছু করছ, নিশ্চয় তিনি তার প্রতি দৃষ্টি রাখেন।
১১.১১৩ ) আর পাপিন্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই। অতএব কোথাও সাহায্য পাবে না।
১১৪ ) আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতের প্রান্তভাগে পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স¥রণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স¥ারক।
১১.১১৫ ) আর ধৈর্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পূণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না।
১১.১১৬ ) কাজেই, তোমাদের পূর্ববতী জাতি গুলির মধ্যে এমন সৎকর্মশীল কেন রইল না, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে বাধা দিত; তবে মুষ্টিমেয় লোক ছিল যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রক্ষা করেছি। আর পাপিন্ঠরা তো ভোগ বিলাসে মত্ত ছিল যার সামগ্রী তাদেরকে যথেষ্ট দেয়া হয়েছিল। আসলে তারা ছিল মহা অপরাধী।
১১.১১৭ ) আর তোমার পালনকর্তা এমন নন যে, জনবসতিগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন, সেখানকার লোকেরা সৎকর্মশীল হওয়া সত্ত্বেও।
১১.১১৮ ) আর তোমার পালনকর্তা যদি ইচছা করতেন, তবে অবশ্যই সব মানুষকে একই জাতিসত্তায় পরিনত করতে পারতেন আর তারা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হতো না।
১১.১১৯ ) তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা ব্যতীত সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমার আল্লাহ্র কথাই পূর্ণ হল যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বার একযোগে ভর্তি করব।
১১.১২০ ) আর আমি রসূলগণের সব বৃত্তান্তই তোমাকে বলছি, যদ্দ¡ারা তোমার অন্তরকে মজবুত করছি। আর এভাবে তোমার নিকট মহাসত্য এবং ঈমানদারদের জন্য নসীহত ও ¯¦রণীয় বিষয়বস্তূ এসেছে।
১১.১২১ ) আর যারা ঈমান আনে না, তাদেরকে বলে দাও যে, তোমরা নিজ নিজ অবস্থায় কাজ করে যাও আমরাও কাজ করে যাই।
১১.১২২ ) এবং তোমরাও অপেক্ষা করে থাক, আমরাও অপেক্ষায় রইলাম।
১১.১২৩ ) আর আল্লাহ্র কাছেই আছে আসমান ও যমীনের গোপন তথ্য; আর সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে; অতএব, তাঁরই বন্তেদগী কর এবং তাঁর উপর ভরসা রাখ, আর তোমাদের কার্যকলাপ স¤¦ন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তূ বে-খবর নন।

No comments:

Post a Comment