(২২)
হাজ্জঃ ৭৮
২২.১ ) হে লোক সকল! তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। নিশ্চয়
কেয়ামতের প্রক¤পন একটি ভয়ংকর ব্যাপার।
২২.২ ) যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন প্রত্যেক স্তন্যধাত্রী তার দুধের শিশুকে বি¯মৃত হবে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করবে এবং মানুষকে তুমি দেখবে মাতাল; অথচ তারা মাতাল নয় বস্তূত: আল্লাহ্র আযাব সুকঠিন।
২২.৩ ) কতক মানুষ অজ্ঞানতাবশত: আল্লাহ্ স¤পর্কে বিতর্ক করে এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে।
২২.৪ ) শয়তান স¤পর্কে লিখে দেয়া হয়েছে যে, যে কেউ তার সাথী হবে, সে তাকে বিভ্রান্ত করবে এবং দোযখের আযাবের দিকে পরিচালিত করবে।
২২.৫ ) হে লোকসকল! যদি তোরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্তিদ্ৗÍ৭১০; হও, তবে (ভেবে দেখ-) আমি তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি। এরপর
বীর্য থেকে, এরপর জমাট রক্ত থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংসপিন্ড থেকে, তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে। আর
আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচছা রেখে দেই, এরপর আমি তোমাদেরকে শিশু অবস্থায় বের করি; তারপর যাতে তোমরা যৌÍবনে পদার্পণ কর। তোমাদের
মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে নি®কর্মা বয়স পর্যন্ত পৌÍছানো হয়, যাতে সে জানার পর জ্ঞাত বিষয় স¤পর্কে সজ্ঞান থাকে না। তুমি
ভূমিকে পতিত দেখতে পাও, অত:পর আমি যখন তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা সতেজ ও ¯ফীত হয়ে যায় এবং সর্বপ্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ উৎপন্ন করে।
২২.৬ ) এগুলো এ কারণে যে, আল্লাহ্ সত্য এবং তিনি মৃতকে জীবিত করেন এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
২২.৭ ) এবং এ কারণে যে, কেয়ামত অবশ্যম্ভাবী, এতে সন্তেদহ নেই এবং এ কারণে যে, কবরে যারা আছে, আল্লাহ্ তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন।
২২.৮ ) কতক মানুষ জ্ঞান; প্রমাণ ও উজ্জ্বল কিতাব ছাড়াই আল্লাহ্ স¤পর্কে বিতর্ক করে।
২২.৯ ) সে পার্শ্ব পরিবর্তন করে বিতর্ক করে, যাতে আল্লাহ্র পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দেয়। তার
জন্যে দুনিয়াতে লাঞ্চনা আছে এবং কেয়ামতের দিন আমি তাকে দহন-যন্ত¿ণা আ¯¦াদন করাব।
২২.১০ ) এটা তোমার দুই হাতের কর্মের কারণে, আল্লাহ্ বান্তদাদের প্রতি জুলুম করেন না।
২২.১১ ) মানুষের মধ্যে কেউ কেউ দ্বিধা-দ্বন্তেদ্ব জড়িত হয়ে আল্লাহ্র এবাদত করে। যদি
সে কল্যাণ প্রাপ্ত হয়, তবে এবাদতের উপর কায়েম থাকে এবং যদি কোন পরীক্ষায় পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। সে
ইহকালে ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত। এটাই
প্রকাশ্য ক্ষতি
২২.১২ ) সে আল্লাহ্র পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যে তার অপকার করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। এটাই
চরম পথভ্রষ্টতা।
২২.১৩ ) সে এমন কিছুকে ডাকে, যার অপকার উপকারের আগে পৌÍছে। কত
মন্তদ এই বন্ধু এবং কত মন্তদ এই সঙ্গী।
২২.১৪ ) যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম স¤পাদন করে, আল্লাহ্ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ্
যা ইচছা তাই করেন।
২২.১৫ ) সে ধারণা করে যে, আল্লাহ্ কখনই ইহকালে ও পরকালে রাসূলকে সাহায্য করবেন না, সে একটি রশি আকাশ পর্যন্ত ঝুলিয়ে নিক; এরপর কেটে দিক; অত:পর দেখুক তার এই কৌÍশল তার আক্রোশ দূর করে কিনা।
২২.১৬ ) এমনিভাবে আমি সু¯পষ্ট আয়াত রূপে কোরআন নাযিল করেছি এবং আল্লাহ্-ই যাকে ইচছা হেদায়েত করেন।
২২.১৭ ) যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, সাবেয়ী, খ্রীষ্টান, অগ্নিপুজক এবং যারা মুশরেক, কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ অবশ্যই তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন। সবকিছুই
আল্লাহ্র দৃষ্টির সামনে।
২২.১৮ ) তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু আছে নভোমন্ডলে, যা কিছু আছে ভুমন্ডলে, সূর্য, চন্তদ্র, তারকারাজি পর্বতরাজি বৃক্ষলতা, জীবজন্তূ এবং অনেক মানুষ। আবার
অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে শাস্তি। আল্লাহ্
যাকে ইচছা লাঞ্চিত করেন, তাকে কেউ সম¥ান দিতে পারে না। আল্লাহ্
যা ইচছা তাই করেন্
২২.১৯ ) এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা স¤পর্কে বিতর্ক করে। অতএব
যারা কাফের, তাদের জন্যে আগুনের পোশাক তৈরী করা হয়েছে। তাদের
মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে।
২২.২০ ) ফলে তাদের পেটে যা আছে, তা এবং চর্ম গলে বের হয়ে যাবে।
২২.২১ ) তাদের জন্যে আছে লোহার হাতুড়ি।
২২.২২ ) তারা যখনই যন্ত¿নায় অতিন্ঠ হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হতে চাইবে, তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে। বলা
হবে: দহন শাস্তি আ¯¦াদন কর।
২২.২৩ ) নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে দাখিল করবেন উদ্যান সমূহে, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হবে। তাদেরকে
তথায় ¯¦র্ণ-কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং তথায় তাদের পোশাক হবে রেশমী।
২২.২৪ ) তারা পথপ্রদর্শিত হয়েছিল সৎবাক্যের দিকে এবং পরিচালিত হয়েছিল প্রশংসিত আল্লাহ্র পথপানে।
২২.২৫ ) যারা কুফর করে ও আল্লাহ্র পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে হারাম থেকে বাধা দেয়, যাকে আমি প্রস্তূত করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত সকল মানুষের জন্যে সমভাব্ েএবং যে মসজিদে হারামে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার ইচছা করে, আমি তাদেরকে যন্ত¿ানাদায়ক শাস্তি আ¯¦াদন করাব।
২২.২৬ ) যখন আমি ইবরাহীমকে বায়তুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়েছিলাম যে, আমার সাথে কাউকে শরীক করো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তাওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দন্ডায়মানদের জন্যে এবং রকু সেজদাকারীদের জন্যে।
২২.২৭ ) এবং মানুষের মধ্যে হজ্বের জন্যে ঘোষণা প্রচার কর। তারা
তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে।
২২.২৮ ) যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থান পর্যন্ত পৌÍছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহ্র নাম স¥রণ করে তাঁর দেয়া চতু¯পদ জন্তূ যবেহ করার সময়। অত:পর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুু:স্থ-অভাবগ্রস্থকে আহার করাও।
২২.২৯ ) এরপর তারা যেন দৈহিক ময়লা দূর করে দেয়, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং এই সুসংরক্ষিত গৃহের তাওয়াফ করে।
২২.৩০ ) এটা শ্রবণযোগ্য। আর
কেউ আল্লাহর স¤মানযোগ্য বিধানাবলীর প্রতি স¤মান প্রদর্শন করলে পালনকর্তার নিকট তা তার জন্যে উত্তম। উল্লেখিত
ব্যতিক্রমগুলো ছাড়া তোমাদের জন্যে চতু¯পদ জন্তূ হালাল করা হয়েছে। সুতরাং
তোমরা মূর্তিদের অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাক এবং মিথ্যা কথন থেকে দূরে সরে থাক;
২২.৩১ ) আল্লাহ্র দিকে একনিষ্ট হয়ে, তাঁর সাথে শরীক না করে; এবং যে কেউ আল্লাহ্র সাথে শরীক করল; সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অত:পর মৃতভোজী পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোন দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল।
২২.৩২ ) এটা শ্রবণযোগ্য কেউ আল্লাহ্র নামযুক্ত বস্তূসমুহের প্রতি স¤মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হƒদয়ের আল্লাহ্ভীতি প্রসূত।
২২.৩৩ ) চতু¯পদ জন্তূসমূহের মধ্যে তোমাদের জন্যে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত উপকার রয়েছে। অত:পর এগুলোকে পৌÍছাতে হবে মুক্ত গৃহ পর্যন্ত।
২২.৩৪ ) আমি প্রত্যেক উ¤মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহ্র দেয়া চতু¯পদ জন্তূ যবেহ কারার সময় আল্লাহ্র নাম উচচারণ করে। অতএব
তোমাদের আল্লাহ্ তো একমাত্র আল্লাহ্ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও;
২২.৩৫ ) যাদের অন্তর আল্লাহ্র নাম স¥রণ করা হলে ভীত হয় এবং যারা তাদের বিপদাপদে ধৈর্যধারণ করে এবং যারা নামায কায়েম করে ও আমি যা দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।
২২.৩৬ ) এবং কা'বার জন্যে উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্যে আল্লাহ্র অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে
তোমাদের জন্যে মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং
সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় তাদের যবেহ করার সময় তোমরা আল্লাহ্র নাম উচচারণ কর। অত:পর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তা থেকে তোমরা আহার কর এবং আহার করাও যে কিছু যাচঞা করে না তাকে এবং যে যাচঞা করে তাকে। এমনিভাবে
আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
২২.৩৭ ) এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহ্র কাছে পৌঁÍছে না, কিন্তূ পৌঁÍছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে
তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আাল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং
সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।
২২.৩৮ ) আল্লাহ্ মুমিনদের থেকে শত্রুদেরকে হটিয়ে দেবেন। আল্লাহ্
কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্তদ করেন না।
২২.৩৯ ) যুদ্ধে অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের সাথে কাফেররা যুদ্ধ করে; কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ্
তাদেরকে সাহায্য করতে অবশ্যই সক্ষম।
২২.৪০ ) যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্। আল্লাহ্
যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের) নির্ঝন গির্জা, এবাদত খানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহ্র নাম অধিক স¥রণ করা হয়। আল্লাহ্
নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহ্র সাহায্য করে। নিশ্চয়ই
আল্লাহ্ পরাক্রমশালী শক্তিধর।
২২.৪১ ) তারা এমন লোক যাদেরকে আমি পৃথিবীতে শক্তি-সামর্থ্য দান করলে তারা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করবে। প্রত্যেক
কর্মের পরিণাম আল্লাহ্র এখতিয়ারভূক্ত।
২২.৪২ ) তারা যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তাদের পূর্বে মিথ্যাবাদী বলেছে কওমে নূহ, আদ, সামুদ,
২২.৪৩ ) ইব্রাহীম ও লূতের সম্প্রদায়ও।
২২.৪৪ ) এবং মাদইয়ানের অধিবাসীরা এবং মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল মূসাকেও। অত:পর আমি কাফেরদেরকে সুযোগ দিয়েছিলাম এরপর তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম্ অতএব কি ভীষণ ছিল আমাকে অ¯¦ীকৃতির পরিণাম।
২২.৪৫ ) আমি কত জনপদ ধ্বংস করেছি এমতাবস্থায় যে, তারা ছিল গোনাহগার। এই
সব জনপদ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং কত কূপ পরিত্যক্ত হয়েছে ও কত সুদৃঢ় প্রাসাদ ধ্বংস হয়েছে।
২২.৪৬ ) তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি স¤পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তূত: চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তূ বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়।
২২.৪৭ ) তারা আপনাকে আযাব ত্বরানি¦ত করতে বলে। অথচ
আল্লাহ্ কখনও তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। আপনার
পালনকর্তার কাছে একদিন তোমাদের গণনার এক হাজার বছরের সমান।
২২.৪৮ ) এবং আমি কত জনপদকে অবকাশ দিয়েছি এমতাবস্থায় যে, তারা গোনাহগার ছিল। এরপর
তাদেরকে পাকড়াও করেছি এবং আমার কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
২২.৪৯ ) বলুন: হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে ¯পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী।
২২.৫০ ) সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং স¤মানজনক রুযী।
২২.৫১ ) এবং যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার জন্যে চেষ্টা করে, তারাই দোযখের অধিবাসী।
২২.৫২ ) আমি আপনার পূর্বে যে সম্স্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অত:পর আল্লাহ্ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর
আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিন্ঠিত করেন এবং আল্লাহ্ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।
২২.৫৩ ) এ কারণে যে, শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষা¯¦রূপ করে দেন, তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহƒদয়। গোনাহগাররা
দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে।
২২.৫৪ ) এবং এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞানদান করা হয়েছে; তারা যেন জানে যে এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য; অত:পর তারা যেন এতে বিশ্বাস স্তাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন এর প্রতি বিজয়ী হয়। আল্লাহ্ই
বিশ্বাস স্থাপনকারীকে সরল পথ প্রদর্শন করেন।
২২.৫৫ ) কাফেররা সর্বদাই সন্তেদহ পোষন করবে যে পর্যন্ত না তাদের কাছে আকসি¥কভাবে কেয়ামত এসে পড়ে অথবা এসে পড়ে তাদের কাছে এমন দিবসের শাস্তি যা থেকে রক্ষার উপায় নেই।
২২.৫৬ ) রাজত্ব সেদিন আল্লাহ্রই; তিনিই তাদের বিচার করবেন। অতএব
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম স¤পাদন করে তারা নেয়ামত পূর্ণ কাননে থাকবে।
২২.৫৭ ) এবং যারা কুফরি করে এবং আমার আয়াত সমূহকে মিথ্যা বলে তাদের জন্যে লাঞ্চনাকর শাস্তি রয়েছে।
২২.৫৮ ) যারা আল্লাহ্র পথে গৃহ ত্যাগ করেছে, এরপর নিহত হয়েছে অথবা মরে গেছে; আল্লাহ্ তাদেরকে অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন এবং আল্লাহ্ সর্বোৎকৃষ্ট রিযিক দাতা।
২২.৫৯ ) তাদেরকে অবশ্যই এমন এক স্থানে পৌÍছাবেন, যাকে তারা পছন্তদ করবে এবং আল্লাহ্ জ্ঞানময়, সহনশীল।
২২.৬০ ) এ তো শুনলে, যে ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে নিপীড়ন পরিমাণে প্রতিশোধ গ্রহণ করে এবং পুনরায় সে নিপীড়িত হয়, আল্লাহ্ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন। নিশ্চয়
আল্লাহ্ মার্জনাকারী ক্ষমাশীল।
২২.৬১ ) এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ্ রাত্রিকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাত্রির মধ্য দাখিল করে দেন এবং আল্লাহ্ সবকিছু শোনেন, দেখেন।
২২.৬২ ) এটা এ কারণেও যে, আল্লাহ্ই সত্য; আর তাঁর পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা অসত্য এবং আল্লাহ্ই সবার উচেচ, মহান।
২২.৬৩ ) তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ্ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অত:পর ভূপৃষ্ট সবুজ-শ্যামল হয়ে উঠে। নিশ্চয়
আল্লাহ্ সুক্ষদর্শী, সর্ববিষয়ে খবরদার।
২২.৬৪ ) নভোমন্ডল ও ভুপৃন্ঠে যা কিছু আছে, সব তাঁরই এবং আল্লাহ্ই অভাবমুক্ত প্রশংসার অধিকারী।
২২.৬৫ ) তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌÍকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ্ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয়। নিশ্চয়
আল্লাহ্ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান।
২২.৬৬ ) তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, অত:পর তিনিই তোমাদেরকে মৃত্যুদান করবেন ও পুনরায় জীবিত করবেন। নিশ্চয়
মানুষ বড় অকৃতজ্ঞ।
২২.৬৭ ) আমি প্রত্যেক উ¤মতের জন্যে এবাদতের একটি নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করে দিয়েছি, যা তারা পালন করে। অতএব
তারা যেন এ ব্যাপারে আপনার সাথে বিতর্ক না করে। আপনি
তাদেরকে পালনকর্তার দিকে আহবান করুন। নিশ্চয়
আপনি সরল পথেই আছেন।
২২.৬৮ ) তারা যদি আপনার সাথে বিতর্ক করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, সে স¤র্পকে আল্লাহ্ অধিক জ্ঞাত।
২২.৬৯ ) তোমরা যে বিষয়ে মতবিরোধ করছ, আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন সেই বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন।
২২.৭০ ) তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্ জানেন যা কিছু আকাশে ও ভুমন্ডলে আছে এসব কিতাবে লিখিত আছে। এটা
আল্লাহ্র কাছে সহজ।
২২.৭১ ) তারা আল্লাহ্র পরিবর্তে এমন কিছুর পূজা করে, যার কোন সনদ নাযিল করা হয়নি এবং সে স¤পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই। বস্তূত:
জালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।
২২.৭২ ) যখন তাদের কাছে আমার সু¯পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হয়, তখন তুমি কাফেরদের চোখে মুখে অসন্তোষের লক্ষণ প্রত্যক্ষ করতে পারবে। যারা
তাদের কাছে আমার আয়াত সমূহ পাঠ করে, তারা তাদের প্রতি মার মুখো হয়ে উঠে। বলুন,
আমি কি তোমাদেরকে তদপেক্ষা মন্তদ কিছুর সংবাদ দেব? তা আগুন; আল্লাহ্ কাফেরদেরকে এর ওয়াদা দিয়েছেন। এটা
কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।
২২.৭৩ ) হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর
মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।
২২.৭৪ ) তারা আল্লাহ্র যথাযোগ্য মর্যাদা বোঝেনি। নিশ্চয়
আল্লাহ্ শক্তিধর, মহাপরাক্রমশীল।
২২.৭৫ ) আল্লাহ্ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। আল্লাহ্
সর্বশ্রোতা, সর্ব দ্রষ্টা!
২২.৭৬ ) তিনি জানেন যা তাদের সামনে আছে এবং যা পশ্চাতে আছে এবং সবকিছু আল্লাহ্র দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।
২২.৭৭ ) হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর এবং সৎকাজ স¤পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
২২.৭৮ ) তোমরা আল্লাহ্র জন্যে শ্রম ¯¦ীকার কর যেভাবে শ্রম ¯¦ীকার করা উচিত। তিনি
তোমাদেরকে পছন্তদ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। তোমরা
তোমাদের পিতা ইবরাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই
তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। সুতরাং
তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহ্কে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই
তোমাদের মালিক। অতএব
তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।
No comments:
Post a Comment