Tuesday, January 5, 2016

সূরা আল ইমরান বাংলা অনুবাদ

৩.১ ) আলিফ লাম মীম।
৩.২ ) আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক।
৩.৩ ) তিনি আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন সত্যতার সাথে; যা সত্যায়ন করে পূর্ববর্তী কিতাবসমুহের।
৩.৪ ) নাযিল করেছেন তাওরাত ও ইঞ্জীল, এ কিতাবের পূর্বে, মানুষের হেদায়েতের জন্যে এবং অবতীর্ণ করেছেন মীমাংসা। নি:সন্তেদহে যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহ অ¯¦ীকার করে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ্্ হচেছন পরাক্রমশীল, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
৩.৫ ) আল্লাহ্র নিকট আসমান ও যমীনের কোন বিষয়ই গোপন নেই।
৩.৬ ) তিনিই সেই আল্লাহ্, যিনি তোমাদের আকৃতি গঠন করেন মায়ের গর্ভে, যেমন তিনি চেয়েছেন। তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। তিনি প্রবল পরাক্রমশীল, প্রজ্ঞাময়।
৩.৭ ) তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সু¯পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ্্ ব্যতীত কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তারা বলেন: আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি। এই সবই আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি স¤প›ে¥রা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না।
৩.৮ ) হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত করোনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা।
৩.৯ ) হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করবে: এতে কোনই সন্তেদহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ্্ তাঁর ওয়াদার অন্যথা করেন না।
৩.১০ ) যারা কুফুরী করে, তাদের ধন-স¤পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ্্র সামনে কখনও কাজে আসবে না। আর তারাই হচেছ দোযখের ইন্ধন।
৩.১১ ) ফেরআউনের সম্প্রদায় এবং তাদের পূর্ববর্তীদের ধারা অনুযায়ীই তারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপ›¥ করেছে। ফলে তাদের পাপের কারণে আল্লাহ্ তাদেরকে পাকড়াও করেছেন আর আল্লাহ্র আযাব অতি কঠিন।
৩.১২ ) কাফেরদিগকে বলে দিন, খুব শিগগীরই তোমরা পরাভূত হয়ে দোযখের দিকে হাঁকিয়ে নীত হবে-সেটা কতই না নিকৃষ্টতম অবস্থান।
৩.১৩ ) নিশ্চয়ই দুটো দলের মোকাবিলার মধ্যে তোমাদের জন্য নিদর্শন ছিল। একটি দল আল্লাহ্্র রাহে যুদ্ধ করে। আর অপর দল ছিল কাফেরদের এরা ¯¦চক্ষে তাদেরকে দ্বিগুন দেখছিল। আর আল্লাহ্্ যাকে নিজের সাহায্যের মাধ্যমে শক্তি দান করেন। এরই মধ্যে শিক্ষনীয় রয়েছে দৃষ্টি স¤প›¥দের জন্য।
৩.১৪ ) মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী, সন্তান-সন্ততি, রাশিকৃত ¯¦র্ণ-রৌÍপ্য, চিহিƒত অশ্ব, গবাদি পশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মত আকর্ষণীয় বস্তূসামগ্রী। এসবই হচেছ পার্থিব জীবনের ভোগ্য বস্তূ। আল্লাহ্র নিকটই হলো উত্তম আশ্রয়।
৩.১৫ ) বলুন, আমি কি তোমাদেরকে এসবের চাইতেও উত্তম বিষয়ের সন্ধান বলবো?-যারা পরহেযগার, আল্লাহ্র নিকট তাদের জন্যে রয়েছে বেহেশত, যার তলদেশে প্রস্রবণ প্রবাহিত-তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আর রয়েছে পরিচছ›¥ সঙ্গিনীগণ এবং আল্লাহ্্র সন্তূষ্টি। আর আল্লাহ্ তাঁর বান্তদাদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখেন।
৩.১৬ ) যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা কর।
৩.১৭ ) তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ স¤পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।
৩.১৮ ) আল্লাহ্্ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। ফেরেশতাগণ এবং ন্যায়নিন্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্ নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৩.১৯ ) নি:সন্তেদহে আল্লাহ্্র নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পর¯পর বিদ্বেষবশত:, যারা আল্লাহ্্র নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ্্ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত ™্রুত।
৩.২০ ) যদি তারা তোমার সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হয় তবে বলে দাও, ্ৗÍ৮২২০;আমি এবং আমার অনুসরণকারীগণ আল্লাহ্্র প্রতি আতসমর্পণ করেছি। ্ৗÍ৮২২১; আর আহলে কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের বলে দাও যে, তোমরাও কি আতসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আতসমর্পণ করেছি। ্ৗÍ৮২২১; আর আহলে কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের বলে দাও যে, তোমরাও কি আতসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আতসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িতঁ হলো শুধু পৌÍছে দেয়া। আর আল্লাহ্র দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্তদা।
৩.২১ ) যারা আল্লাহ্র নিদর্শনাবলীকে অ¯¦ীকার করে এবং পয়গ¤¦রগণকে হত্যা করে অন্যায়ভাবে, আর সেসব লোককে হত্যা করে যারা ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন।
৩.২২ ) এরাই হলো সে লোক যাদের সমগ্র আমল দুনিয়া ও আখেরাত উভয়লোকেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই।
৩.২৩ ) আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা কিতাবের কিছু অংশ পেয়েছে-আল্লাহ্র কিতাবের প্রতি তাদের আহবান করা হয়েছিল যাতে তাদের মধ্যে মীমাংসা করা যায়। অত:পর তাদের মধ্যে একদল তা অমান্য করে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
৩.২৪ ) তা এজন্য যে, তারা বলে থাকে যে, দোযখের আগুন আমাদের ¯পর্শ করবে না; তবে সামান্য হাতে গোনা কয়েকদিনের জন্য ¯পর্শ করতে পারে। নিজেদের উদ্ভাবিত ভিত্তিহীন কথায় তারা ধোকা খেয়েছে।
৩.২৫ ) কিন্তূ তখন কি অবস্থা দাঁড়াবে যখন আমি তাদেরকে একদিন সমবেত করবো যে দিনের আগমনে কোন সন্তেদহ নেই্ আর নিজেদের কৃতকর্ম তাদের প্রত্যেকেই পাবে তাদের প্রাপ্য প্রদান মোটেই অন্যায় করা হবে না।
৩.২৬ ) বলুন ইয়া আল্লাাহ! তুমিই সার্বভৌÍম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ই্চছা স¤মান দান কর আর যাকে ইচছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।
৩.২৭ ) তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন এবং মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। আর তুমিই যাকে ইচছা বেহিসাব রিযিক দান কর।
৩.২৮ ) মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহ্র সাথে তাদের কেন স¤পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর স¤পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।
৩.২৯ ) বলে দিন, তোমরা যদি মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ্ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সেসব ও তিনি জানেন। আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।
৩.৩০ ) সেদিন প্রত্যেকেই যা কিছু সে ভাল কাজ করেছে; চোখের সামনে দেখতে পাবে এবং যা কিছু মন্তদ কাজ করেছে তাও, ওরা তখন কামনা করবে, যদি তার এবং এসব কর্মের মধ্যে ব্যবধান দুরের হতো! আল্লাহ্ তাঁর নিজের স¤পর্কে তোমাদের সাবধান করছেন। আল্লাহ্ তাঁর বান্তদাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। 
৩.৩১ ) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ্ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এব্ং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ্ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।
৩.৩২ ) বলুন, আল্লাহ্ ও রসূলের আনুগত্য প্রকাশ কর। বস্তূত: যদি তারা বিমুখতা অবল¤¦ন করে, তাহলে আল্লাহ্ কাফেরদিগকে ভালবাসেন না।
৩.৩৩ ) নি:সন্তেদহে আল্লাহ্ আদম (আ:) নূহ্ (আ:)- ও ইব্রাহীম (আ:) এর বংশধর এবং এমরানের খান্তদানকে নির্বাচিত করেছেন।
৩.৩৪ ) যারা বংশধর ছিলেন পর¯পরের। আল্লাহ্ শ্রবণকারী ও মহাজ্ঞানী।
৩.৩৫ ) এমরানের স্ত্রী যখন বললো-হে আমার পালনকর্তা! আমার গর্ভে যা রয়েছে আমি তাকে তোমার নামে উৎসর্গ করলাম সবার কাছ থেকে মুক্ত রেখে। আমার পক্ষ থেকে তুমি তাকে কবুল করে নাও, নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞাত।
৩.৩৬ ) অত:পর যখন তাকে প্রসব করলো বলল, হে আমার পালনকর্তা! আমি একে কন্যা প্রসব করেছি। বস্তূত: কি সে প্রসব করেছে আল্লাহ্ তা ভালই জানেন। সেই কন্যার মত কোন পুত্রই যে নেই। আর আমি তার নাম রাখলাম মারইয়াম। আর আমি তাকে ও তার সন্তানদেরকে তোমার আশ্রয়ে সমর্পণ করছি। অভিশপ্ত শয়তানের কবল থেকে।
৩.৩৭ ) অত:পর তাঁর পালনকর্তা তাঁকে উত্তম ভাবে গ্রহণ করে নিলেন এবং তাঁকে প্রবৃদ্ধি দান করলেন-অত্যন্ত সুন্তদর প্রবৃদ্ধি। আর তাঁকে যাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে সমর্পন করলেন। যখনই যাকারিয়া মেহরাবের মধ্যে তার কছে আসতেন তখনই কিছু খাবার দেখতে পেতেন। জিজ্ঞেস করতেন ্ৗÍ৮২১৬;মারইয়াম' কোথা থেকে এসব তোমার কাছে এলো? তিনি বলতেন, ্ৗÍ৮২১৬;এসব আল্লাহ্র নিকট থেকে আসে। আল্লাহ্ যাকে ইচছা বেহিসাব রিযিক দান করেন।
৩.৩৮ ) সেখানেই যাকারিয়া তাঁর পালনকর্তার নিকট প্রার্থনা করলেন। বললেন, হে, আমার পালনকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান কর-নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী।
৩.৩৯ ) যখন তিনি কামরার ভেতরে নামাযে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন ফেরেশতারা তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ্ তোমাকে সুসংবাদ দিচেছন ইয়াহইয়া স¤পর্কে, যিনি সাক্ষ্য দেবেন আল্লাহ্র নির্দেশের সত্যতা স¤পর্কে, যিনি নেতা হবেন এবং নারীেেদর সং¯পর্শে যাবেন না, তিনি অত্যন্ত সৎকর্মশীল নবী হবেন।
৩.৪০ ) তিনি বললেন হে পালনকর্তা! কেমন করে আমার পুত্র সন্তান হবে, আমার যে বার্ধক্য এসে গেছে, আমার স্ত্রীও যে বন্ধ্যা। বললেন, আল্লাহ্ এমনি ভাবেই যা ইচছা করে থাকেন।
৩.৪১ ) তিনি বললেন, হে পালনকর্তা আমার জন্য কিছু নিদর্শন দাও। তিনি বললেন, তোমার জন্য নিদর্শন হলো এই যে, তুমি তিন দিন পর্যন্ত কারও সাথে কথা বলবে না। তবে ইশারা ইঙ্গিতে করতে পারবে এবং তোমার পালনকর্তাকে অধিক পরিমাণে স¥রণ করবে আর সকাল-সন্ধ্যা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করবে।
৩.৪২ ) আর যখন ফেরেশতা বলল হে মারইয়াম!, আল্লাহ্ তোমাকে পছন্তদ করেছেন এবং তোমাকে পবিত্র পরিচছন্ন করে দিয়েছেন। আর তোমাকে বিশ্ব নারী সমাজের উর্ধ্বে মনোনীত করেছেন।
৩.৪৩ ) হে মারইয়াম! তোমার পালনকর্তার উপাসনা কর এবং রুকুকারীদের সাথে সেজদা ও রুকু কর।
৩.৪৪ ) এ হলো গায়েবী সংবাদ, যা আমি আপনাকে পাঠিয়ে থাকি। আর আপনি তো তাদের কাছে ছিলেন না, যখন প্রতিযোগিতা করছিল যে, কে প্রতিপালন করবে মারইয়ামকে এবং আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা ঝগড়া করছিলো।
৩.৪৫ ) যখন ফেরেশতাগণ বললো, হে মারইয়াম আল্লাহ্ তোমাকে তাঁর এক বানীর সুসংবাদ দিচেছন, যার নাম হলো মসীহ-মারইয়াম-তনয় ঈসা, দুনিয়া ও আখেরাতে তিনি মহাস¤মানের অধিকারী এবং আল্লাহ্র ঘনিন্ঠদের অন্তর্ভূক্ত।
৩.৪৬ ) যখন তিনি মায়ের কোলে থাকবেন এবং পূর্ণ বয়স্ক হবেন তখন তিনি মানুষের সাথে কথা বলবেন। আর তিনি সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।
৪৭ ) তিনি বললেন, পরওয়ারদেগার! কেমন করে আমার সন্তান হবে; আমাকে তো কোন মানুষ ¯পর্শ করেনি। বললেন এ ভাবেই আল্লাহ্ যা ইচছা সৃষ্টি করেন। যখন কোন কাজ করার জন্য ইচছা করেন তখন বলেন যে, ্ৗÍ৮২১৬;হয়ে যাও' অমনি তা হয়ে যায়।
৩.৪৮ ) আর তাকে তিনি শিখিয়ে দেবেন কিতাব, হিকমত, তওরাত, ইঞ্জিল।
৩.৪৯ ) আর বণী ইসরাঈলদের জন্যে রসূল হিসেবে তাকে মনোনীত করবেন। তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছি নিদর্শনসমূহ নিয়ে। আমি তোমাদের জন্য মাটির দ্বারা পাখীর আকৃতি তৈরী করে দেই। তারপর তাতে যখন ফুৎকার প্রদান করি, তখন তা উড়ন্ত পাখীতে পরিণত হয়ে যায় আল্লাহ্র হুকুমে। আর আমি সুস্থ করে তুলি জন্মান্ধকে এবং শ্বেত কুন্ঠ রোগীকে। আর আমি জীবিত করে দেই মৃতকে আল্লাহ্র হুকুমে। আর আমি তোমাদেরকে বলে দেই যা তোমরা খেয়ে আস এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আস। এতে প্রকৃষ্ট নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
৩.৫০ ) আর এটি পূর্ববর্তী কিতাব সমুহকে সত্যায়ন করে, যেমন তাওরাত। আর তা এজন্য যাতে তোমাদের জন্য হালাল করে দেই কোন কোন বস্তূ যা তোমাদের জন্য হারাম ছিল। আর আমি তোমাদের নিকট এসেছি তোমাদের পালনকর্তার নিদর্শনসহ। কাজেই আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুসরণ কর।
৩.৫১ ) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা-তাঁর এবাদত কর, এটাই হলো সরল পথ।
৩.৫২ ) অত:পর ঈসা (আ:) যখন বণী ইসরায়ীলের কুফরী স¤পর্কে উপলব্ধি করতে পারলেন, তখন বললেন, কারা আছে আল্লাহ্র পথে আমাকে সাহায্য করবে? সঙ্গী-সাথীরা বললো, আমরা রয়েছি আল্লাহ্র পথে সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান এনেছি। আর তুমি সাক্ষী থাক যে, আমরা হুকুম কবুল করে নিয়েছি।
৩.৫৩ ) হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা সে বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যা তুমি নাযিল করেছ, আমরা রসূলের অনুগত হয়েছি। অতএব, আমাদিগকে মান্যকারীদের তালিকাভুক্ত করে নাও।
৩.৫৪ ) এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহ্ও কৌÍশল অবল¤¦ন করেছেন। বস্তূত: আল্লাহ হচেছন সর্বোত্তম কুশলী।
৩.৫৫ ) আর স¥রণ কর, যখন আল্লাহ্ বলবেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে নিয়ে নেবো এবং তোমাকে নিজের দিকে তুলে নিবো-কাফেরদের থেকে তোমাকে পবিত্র করে দেবো। আর যারা তোমার অনুগত রয়েছে তাদেরকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যারা অ¯¦ীকৃতি জ্ঞাপন করে তাদের উপর জয়ী করে রাখবো। বস্তূত: তোমাদের সবাইকে আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে। তখন যে বিষয়ে তোমরা বিবাদ করতে, আমি তোমাদের মধ্যে তার ফয়সালা করে দেবো।
৩.৫৬ ) অতএব যারা কাফের হয়েছে, তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দেবো দুনিয়াতে এবং আখেরাতে-তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
৩.৫৭ ) পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে। তাদের প্রাপ্য পরিপুর্ণভাবে দেয়া হবে। আর আল্লাহ্ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।
৩.৫৮ ) আমি তোমাদেরকে পড়ে শুনাই এ সমস্ত আয়াত এবং নিশ্চিত বর্ণনা।
৫৯ ) নি:সন্তেদহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচেছ আদমেরই মতো। তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করেছিলেন এবং তারপর তাকে বলেছিলেন হয়ে যাও, সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন।
৩.৬০ ) যা তোমার পালকর্তা বলেন তাই হচেছ যথার্থ সত্য। কাজেই তোমরা সংশয়বাদী হয়ো না।
৩.৬১ ) অত:পর তোমার নিকট সত্য সংবাদ এসে যাওয়ার পর যদি এই কাহিনী স¤পর্কে তোমার সাথে কেউ বিবাদ করে, তাহলে বল-এসো, আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের এবং আমাদের স্ত্রীদের ও তোমাদের স্ত্রীদের এবং আমাদের নিজেদের ও তোমাদের নিজেদের আর তারপর চল আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করি এবং তাদের প্রতি আল্লাহ্র অভিস¤পাত করি যারা মিথ্যাবাদী।
৩.৬২ ) নি:সন্তেদহে এটাই হলো সত্য ভাষণ। আর এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। আর আল্লাহ্; তিনিই হলেন পরাক্রমশালী মহাপ্রাজ্ঞ।
৩.৬৩ ) তারপর যদি তারা গ্রহণ না করে, তাহলে প্রমাদ সৃষ্টিকারীদেরকে আল্লাহ্ জানেন।
৩.৬৪ ) বলুন: ্ৗÍ৮২১৬;হে আহ্লে-কিতাবগণ! একটি বিষয়ের দিকে আস-যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান-যে, আমরা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করব না, তাঁর সাথে কোন শরীক সাব্যস্ত করব না এবং একমাত্র আল্লাহ্কে ছাড়া কাউকে পালনকর্তা বানাব না। তারপর যদি তারা ¯¦ীকার না করে, তাহলে বলে দাও যে, ্ৗÍ৮২১৬;সাক্ষী থাক আমরা তো অনুগত।
৩.৬৫ ) হে আহলে কিতাবগণ! কেন তোমরা ইবরাহীমের বিষয়ে বাদানুবাদ কর? অথচ তওরাত ও ইঞ্জীল তাঁর পরেই নাযিল হয়েছে। তোমরা কি বুঝ না?
৩.৬৬ ) শোন! ইতিপূর্বে তোমরা যে বিষয়ে কিছু জানতে, তাই নিয়ে বিবাদ করতে। এখন আবার যে বিষয়ে তোমরা কিছুই জান না, সে বিষয়ে কেন বিবাদ করছ?
৩.৬৭ ) ইবরাহীম ইহুদী ছিলেন না এবং নাসারাও ছিলেন না, কিক্তু তিনি ছিলেন ্ৗÍ৮২১৬;হানীফ' অর্থাৎ, সব মিথ্যা ধর্মের প্রতি বিমুখ এবং আতসমর্পণকারী, এবং তিনি মুশরিক ছিলেন না।
৩.৬৮ ) মানুষদের মধ্যে যারা ইবরাহীমের অনুসরণ করেছিল, তারা, আর এই নবী এবং যারা এ নবীর প্রতি ঈমান এনেছে তারা ইবরাহীমের ঘনিন্ঠতম-আর আল্লাহ্ হচেছন মুমিনদের বন্ধু।
৩.৬৯ ) কোন কোন আহলে-কিতাবের আকাখা, যাতে তোমাদের গোমরাহ করতে পারে, কিন্তূ তারা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকেই গোমরাহ করে না। অথচ তারা বুঝতে পারে না।
৩.৭০ ) হে আহলে-কিতাবগণ, কেন তোমরা আল্লাহ্র কালামকে অ¯¦ীকার কর, অথচ তোমরাই তাঁর প্রবক্তা?
৩.৭১ ) হে আহলে কিতাবগণ, কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে সংমিশ্রণ করছ এবং সত্যকে গোপন করছ, অথচ তোমরা তা জান।
৩.৭২ ) আর আহলে-কিতাবগণের একদল বললো, মুসলমানগণের উপর যা কিছু অবর্তীণ হয়েছে তাকে দিনের প্রথম ভাগে মেনে নাও, আর দিনের শেষ ভাগে অ¯¦ীকার ক র, হয়তো তারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।
৩.৭৩ ) যারা তোমাদের ধর্মমতে চলবে, তাদের ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করবে না। বলে দিন নি:সন্তেদহে হেদায়েত সেটাই, যে হেদায়েত আল্লাহ্ করেন। আর এসব কিছু এ জন্যে যে, তোমরা যা লাভ করেছিলে তা অন্য কেউ কেন প্রাপ্ত হবে, কিংবা তোমাদের পালনকর্তার সামনে তোমাদের উপর তারা কেন প্রবল হয়ে যাবে! বলে দিন, মর্যাদা আল্লাহ্রই হাতে; তিনি যাকে ইচছা দান করেন এবং আল্লাহ্ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।
৩.৭৪ ) তিনি যাকে ইচছা নিজের বিশেষ অনুগ্রহ দান করেন। আর আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
৩.৭৫ ) কোন কোন আহ্লে কিতাব এমনও রয়েছে, তোমরা যদি তাদের কাছে বহু ধন-স¤পদ আমানত রাখ, তাহলেও তা তোমাদের যথারীতি পরিশোধ করবে। আর তোদের মধ্যে অনেক এমনও রয়েছে যারা একটি দীনার গচিছত রাখলেও ফেরত দেবে না-যে পর্যন্ত না তুমি তার মাথার উপর দাঁড়াতে পারবে। এটা এজন্য যে, তারা বলে রেখেছে যে, উ¤মীদের অধিকার বিনষ্ট করাতে আমাদের কোন পাপ নেই। আর তারা আল্লাহ্ স¤পর্কে জেনে শুনেই মিথ্যা বলে।
৩.৭৬ ) যে লোক নিজ প্রতিজ্ঞা পূর্ন করবে এং পরহেজগার হবে, অবশ্যই আল্লাহ্ পরহেজগারদেরকে ভালবাসেন।
৩.৭৭ ) যারা আল্লাহর নামে কৃত অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য মুল্যে বিক্রয় করে, আখেরাতে তাদের কেন অংশ নেই। আর তাদের সাথে কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ কথা বলবেন না। তাদের প্রতি (করুণার) দৃষ্টিও দেবেন না। আর তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। বস্তূত: তাদের জন্য রয়েছে যন্ত¿ণাদায়ক আযাব।
৩.৭৮ ) আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচচারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা মনে কর যে, তার কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌÍ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহ্র তরফ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহ্র কথা অথচ এসব আল্লাহ্র কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে।
৩.৭৯ ) কোন মানুষকে আল্লাহ কিতাব, হেকমত ও নবুওয়ত দান করার পর সে বলবে যে, ্ৗÍ৮২১৬;তোমরা আল্লাহকে পরিহার করে আমার বান্তদা হয়ে যাও'-এটা সম্ভব নয়। বরং তারা বলবে, ্ৗÍ৮২১৬;তোমরা আল্লাহ্ওয়ালা হয়ে যাও, যেমন, তোমরা কিতাব শিখাতে এবং যেমন তোমরা নিজেরা ও পড়তে।
৩.৮০ ) তাছাড়া তোমাদেরকে একথা বলাও সম্ভব নয় যে, তোমরা ফেরেশতা ও নবীগনকে নিজেদের পালনকর্তা সাব্যস্ত করে নাও। তোমাদের মুসলমান হবার পর তারা কি তোমাদেরকে কুফরী শেখাবে?
৩.৮১ ) আর আল্লাহ্ যখন নবীগনের কাছ থেকে অ¯¦ীকার গ্রহন করলেন যে, আমি যা কিছু তোমাদের দান করেছি কিতাব ও জ্ঞান এবং অত:পর তোমাদের নিকট কোন রসূল আসেন তোমাদের কিতাবকে সত্য বলে দেয়ার জন্য, তখন সে রসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তার সাহায্য করবে। তিনি বললেন, ্ৗÍ৮২১৬;তোমার কি অঙ্গীকার করছো এবং এই শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহণ করে নিয়েছ? তারা বললো, ্ৗÍ৮২১৬;আমরা অঙ্গীকার করেছি'। তিনি বললেন, তাহলে এবার সাক্ষী থাক। আর আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।
৩.৮২ ) অত:পর যে লোক এই ওয়াদা থেকে ফিরে দাঁড়াবে, সেই হবে নাফরমান।
৩.৮৩ ) তারা কি আল্লাহ্র দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে ¯ে¦চছায় হোক বা অনিচছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে।
৩.৮৪ ) বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্র উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত।
৩.৮৫ ) যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কসি¥ণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।
৩.৮৬ ) কেমন করে আল্লাহ্ এমন জাতিকে হেদায়েত দান করবেন, যারা ঈমান আনার পর এবং রসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্য দেয়ার পর এবং তাদের নিকট প্রমাণ এসে যাওয়ার পর কাফের হয়েছে। আর আল্লাহ্ জালেম সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না।
৩.৮৭ ) এমন লোকের শাস্তি হলো আল্লাহ্, ফেরেশতাগণ এবং মানুষ সকলেরই অভিস¤পাত।
৩.৮৮ ) সর্বক্ষণই তারা তাতে থাকবে। তাদের আযাব হালকাও হবে না এবং তার এত অবকাশও পাবে না।
৩.৮৯ ) কিন্তূ যারা অত:পর তওবা করে নেবে এবং সৎকাজ করবে তারা ব্যতীত, নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালূ।
৩.৯০ ) যারা ঈমান আনার পর অ¯¦ীকার করেছে এবং অ¯¦ীকৃতিতে বৃদ্ধি ঘটেছে, কসি¥ণকালেও তাদের তওবা কবুল করা হবে না। আর তারা হলো গোমরাহ।
৩.৯১ ) যদি সারা পৃথিবী পরিমাণ ¯¦র্ণও তার পরিবর্তে দেয়া হয়, তবুও যারা কাফের হয়েছে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে তাদের তওবা কবুল করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত¿ণাদায়ক আযাব! পক্ষান্তরে তাদের কোনই সাহায্যকারী নেই।
৩.৯২ ) কসি¥ণকালেও কল্যাণ লাভ করতে পারবে না, যদি তোমাদের প্রিয় বস্তূ থেকে তোমরা ব্যয় না কর। আর তোমরা যদি কিছু ব্যয় করবে আল্লাহ্ তা জানেন।
৩.৯৩ ) তওরাত নাযিল হওয়ার পূর্বে ইয়াকুব যেগুলো নিজেদের জন্য হারাম করে নিয়েছিলেন, সেগুলো ব্যতীত সমস্ত আহার্য বস্তূই বনী-ইসরায়ীলদের জন্য হালাল ছিল। তুমি বলে দাও, তোমরা যদি সত্যবাদী হয়ে থাক। তাহলে তওরাত নিয়ে এসো এবং তা পাঠ কর।
৩.৯৪ ) অত:পর আল্লাহ্র প্রতি যারা মিথ্যা আরোপ করেছে, তারাই যালেম সীমালংঘনকারী।
৩.৯৫ ) বল, ্ৗÍ৮২১৬;আল্লাহ্ সত্য বলেছেন। এখন সবাই ইব্রাহীমের ধর্মের অনুগত হয়ে যাও, যিনি ছিলেন একনিন্ঠ ভাবে সত্যধর্মের অনুসারী। তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
৩.৯৬ ) নি:সন্তেদহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচেছ এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।
৩.৯৭ ) এতে রয়েছে মকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। আর এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত পৌÍছার। আর যে লোক তা মানে না। আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না।
৩.৯৮ ) বলুন, হে আহলে কিতাবগণ, কেন তোমরা আল্লাহ্র কিতাব অমান্য করছো, অথচ তোমরা যা কিছু কর, তা আল্লাহর সামনেই রয়েছে।
৩.৯৯ ) বলুন, হে আহলে কিতাবগণ! কেন তোমরা আল্লাহর পথে ঈমানদারদিগকে বাধা দান কর-তোমরা তাদের দ্বীনের মধ্যে বক্রতা অনুপ্রবেশ করানোর পন্ত’া অনুসন্ধান কর, অথচ তোমরা এ পথের সত্যতা প্রত্যক্ষ করছ। বস্তূত: আল্লাহ্ তোমাদের কার্যকলাপ স¤পর্কে অনবগত নন।
৩.১০০ ) হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি আহলে কিতাবদের কোন ফেরকার কথা মান, তাহলে ঈমান আনার পর তারা তোমাদিগকে কাফেরে পরিণত করে দেবে।
৩.১০১ ) আর তোমরা কেমন করে কাফের হতে পার, অথচ তোমাদের সামনে পাঠ করা হয় আল্লাহ্র আয়াত সমূহ এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছেন আল্লাহ্র রসূল। আর যারা আল্লাহ্র কথা দৃঢ়ভাবে ধরবে, তারা হেদায়েত প্রাপ্ত হবে সরল পথের।
৩.১০২ ) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।
৩.১০৩ ) আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পর¯পর বিচিছন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স¥রণ কর, যা আল্লাহ্ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পর¯পর শত্রু ছিলে। অত:পর আল্লাহ্ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পর¯পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অত:পর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।
৩.১০৪ ) আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম।
৩.১০৫ ) আর তাদের মত হয়ো না, যারা বিচিছন্ন হয়ে গেছে এবং নিদর্শন সমূহ আসার পরও বিরোধিতা করতে শুরু করেছে-তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ঙ্কর আযাব।
৩.১০৬ ) সেদিন কোন কোন মুখ উজ্জ্বল হবে, আর কোন কোন মুখ হবে কালো। বস্তূত: যাদের মুখ কালো হবে, তাদের বলা হবে, তোমরা কি ঈমান আনার পর কাফের হয়ে গিয়েছিলে? এবার সে কুফরীর বিনিময়ে আযাবের আ¯¦াদ গ্রহণ কর।
৩.১০৭ ) আর যাদের মুখ উজ্জ্বল হবে, তারা থাকবে রহমতের মাঝে। তাতে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে।
৩.১০৮ ) এগুলো হচেছ আল্লাহ্র নির্দেশ, যা তোমাদিগকে যথাযথ পাঠ করে শুনানো হচেছ। আর আল্লাহ্ বিশ্ব জাহানের প্রতি উৎপীড়ন করতে চান না।
৩.১০৯ ) আর যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে সে সবই আল্লাহর এবং আল্লাহ্র প্রতিই সব কিছু প্রত্যাবর্তনশীল।
৩.১১০ ) তোমরাই হলে সর্বোত্তম উ¤মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী।
৩.১১১ ) যৎসামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তারা পশ্চাদপসরণ করবে। অত:পর তাদের সাহায্য করা হবে না।
৩.১১২ ) আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি কিংবা মানুষের প্রতিশ্রুতি ব্যতিত ওরা যেখানেই অবস্থান করেছে সেখানেই তাদের ওপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ওরা উপার্জন করেছে আল্লাহ্র গযব। ওদের উপর চাপানো হয়েছে গলগ্রহতা। তা এজন্যে যে, ওরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অনবরত অ¯¦ীকার করেছে এবং নবীগনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। তার কারণ, ওরা নাফরমানী করেছে এবং সীমা লংঘন করেছে।
৩.১১৩ ) তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে কিছু লোক এমনও আছে যারা অবিচলভাবে আল্লাহ্র আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং রাতের গভীরে তারা সেজদা করে।
৩.১১৪ ) তারা আল্লাহ্র প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এবং কল্যাণকর বিষয়ের নির্দেশ দেয়; অকল্যাণ থেকে বারণ করে এবং সৎকাজের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে থাকে। আর এরাই হল সৎকর্মশীল।
৩.১১৫ ) তারা যেসব সৎকাজ করবে, কোন অবস্থাতেই সেগুলোর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হবে না। আর আল্লাহ্ পরহেযগারদের বিষয়ে অবগত।
৩.১১৬ ) নিশ্চয় যারা কাফের হয়, তাদের ধন স¤পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ্র সামনে কখনও কোন কাজে আসবে না। আর তারাই হলো দোযখের আগুনের অধিবাসী। তারা সে আগুনে চিরকাল থাকবে।
৩.১১৭ ) এ দুনিয়ার জীবনে যা কিছু ব্যয় করা হয়, তার তুলনা হলো ঝড়ো হাওয়ার মতো, যাতে রয়েছে তুষারের শৈত্য, যা সে জাতির শস্যক্ষেত্রে গিয়ে লেগেছে যারা নিজের জন্য মন্তদ করেছে। অত:পর সেগুলোকে নি:শেষ করে দিয়েছে। বস্তূত: আল্লাহ্ তাদের উপর কোন অন্যায় করেননি, কিন্তূ তারা নিজেরাই নিজেদের উপর অত্যাচার করছিল।
৩.১১৮ ) হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্তদ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও।
৩.১১৯ ) দেখ! তোমরাই তাদের ভালবাস, কিন্তূ তারা তোমাদের প্রতি মোটেও সদভাব পোষণ করে না। আর তোমরা সমস্ত কিতাবেই বিশ্বাস কর। অথচ তারা যখন তোমাদের সাথে এসে মিশে, বলে, আমরা ঈমান এনেছি। পক্ষান্তরে তারা যখন পৃথক হয়ে যায়, তখন তোমাদের উপর রোষবশত: আঙ্গুল কামড়াতে থাকে। বলুন, তোমরা আক্রোশে মরতে থাক। আর আল্লাহ্ মনের কথা ভালই জানেন।
৩.১২০ ) তোমাদের যদি কোন মঙ্গল হয়; তাহলে তাদের খারাপ লাগে। আর তোমাদের যদি অমঙ্গল হয় তাহলে আনন্তিদত হয় আর তাতে যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবল¤¦ন কর, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনই ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে সে সমস্তই আল্লাহ্র আয়ত্তে রয়েছে।
৩.১২১ ) আর আপনি যখন পরিজনদের কাছ থেকে সকাল বেলা বেরিয়ে গিয়ে মুমিনগণকে যুদ্ধের অবস্থানে বিন্যস্ত করলেন, আর আল্লাহ্ সব বিষয়েই শোনেন এবং জানেন।
৩.১২২ ) যখন তোমাদের দ'ুটি দল সাহস হারাবার উপক্রম হলো, অথচ আল্লাহ্ তাদের সাহায্যকারী ছিলেন, আর আল্লাহ্র উপরই ভরসা করা মুমিনদের উচিত।
৩.১২৩ ) বস্তূত: আল্লাহ্ বদরের যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছেন, অথচ তোমরা ছিলে দুর্বল। কাজেই আল্লাহ্কে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো।
৩.১২৪ ) আপনি যখন বলতে লাগলেন মুমিনগণকে-তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের সাহায্যার্থে তোমাদের পালনকর্তা আসমান থেকে অবতীর্ণ তিন হাজার ফেরেশ্তা পাঠাবেন।
৩.১২৫ ) অবশ্য তোমরা যদি সবর কর এবং বিরত থাক আর তারা যদি তখনই তোমাদের উপর চড়াও হয়, তাহলে তোমাদের পালনকর্তা চিহিƒত ঘোড়ার উপর পাঁচ হাজার ফেরেশতা তোমাদের সাহায্যে পাঠাতে পারেন।
৩.১২৬ ) বস্তূত: এটা তো আল্লাহ তোমাদের সুসংবাদ দান করলেন, যাতে তোমাদের মনে এতে সান্ত¡না আসতে পারে। আর সাহায্য শুধুমাত্র পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী আল্লাহ্রই পক্ষ থেকে,
৩.১২৭ ) যাতে ধবংস করে দেন কোন কোন কাফেরকে অথবা লাঞ্চিত করে দেন-যেন ওরা বঞ্চিত হয়ে ফিরে যায়।
৩.১২৮ ) হয় আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে আপনার কোন করণীয় নাই। কারণ তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর।
৩.১২৯ ) আর যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে, সেসবই আল্লাহ্র। তিনি যাকে ইচছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচছা আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ্ হচেছন ক্ষমাকারী, করুণাময়।
৩.১৩০ ) হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।
৩.১৩১ ) এবং তোমরা সে আগুন থেকে বেঁচে থাক, যা কাফেরদের জন্য প্রস্তূত করা হয়েছে।
৩.১৩২ ) আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ্ ও রসূলের, যাতে তোমাদের উপর রহমত করা হয়।
৩.১৩৩ ) তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচেছ আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে পরহেযগারদের জন্য।
৩.১৩৪ ) যারা ¯¦চছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তূত: আল্লাহ্ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।
৩.১৩৫ ) তারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্তদ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স¥রণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ্ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে-শুনে তাই করতে থাকে না।
৩.১৩৬ ) তাদেরই জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জা›¥াত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচেছ প্রস্রবণ যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা কাজ করে তাদের জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান।
৩.১৩৭ ) তোমাদের আগে অতীত হয়েছে অনেক ধরনের জীবনাচরণ। তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের পরিণতি কি হয়েছে।
৩.১৩৮ ) এই হলো মানুষের জন্য বর্ণনা। আর যারা ভয় করে তাদের জন্য উপদেশবাণী।
৩.১৩৯ ) আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দু:খ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।
৩.১৪০ ) তোমরা যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ্ জানতে চান কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহীদ হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ্ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।
৩.১৪১ ) আর এ কারণে আল্লাহ্ ঈমানদারদেরকে পাক-সাফ করতে চান এবং কাফেরদেরকে ধবংস করে দিতে চান।
৩.১৪২ ) তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ্ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল।
৩.১৪৩ ) আর তোমরা তো মৃত্যু আসার আগেই মরণ কামনা করতে, কাজেই এখন তো তোমরা তা চোখের সামনে উপস্থিত দেখতে পাচছ।
৩.১৪৪ ) আর মুহা¤মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তূত: কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন।
৩.১৪৫ ) আর আল্লাহ্র হুকুম ছাড়া কেউ মরতে পারে না-সেজন্য একটা সময় নির্ধারিত রয়েছে। বস্তূত: যে লোক দুনিয়ায় বিনিময় কামনা করবে, আমি তাকে তা দুনিয়াতেই দান করব। পক্ষান্তরে-যে লোক আখেরাতে বিনিময় কামনা করবে, তা থেকে আমি তাকে তাই দেবো। আর যারা কৃতজ্ঞ তাদেরকে আমি প্রতিদান দেবো
৩.১৪৬ ) আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তূ আল্লাহ্র রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ্ তাদেরকে ভালবাসেন।
৩.১৪৭ ) তারা আর কিছুই বলেনি-শুধু বলেছে, হে আমাদের পালনকর্তা! মোচন করে দাও আমাদের পাপ এবং যা কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আমাদের কাজে। আর আমাদিগকে দৃঢ় রাখ এবং কাফেরদের উপর আমাদিগকে সাহায্য কর।
৩.১৪৮ ) অত:পর আল্লাহ্ তাদেরকে দুনিয়ার সওয়াব দান করেছেন এবং যথার্থ আখেরাতের সওয়াব। আর যারা সৎকর্মশীল আল্লাহ্ তাদেরকে ভালবাসেন।
৩.১৪৯ ) হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি কাফেরদের কথা শোন, তাহলে ওরা তোমাদেরকে পেছনে ফিরিয়ে দেবে, তাতে তোমরা ক্ষতির স¤মুখীণ হয়ে পড়বে।
৩.১৫০ ) বরং আল্লাহ তোমাদের সাহায্যকারী, আর তাঁর সাহায্যই হচেছ উত্তম সাহায্য।
৩.১৫১ ) খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবো। কারণ, ওরা আল্লাহ্র সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করে যে স¤পর্কে কোন সনদ অবতীর্ণ করা হয়নি। আর ওদের ঠিকানা হলো দোযখের আগুন। বস্তূত: জালেমদের ঠিকানা অত্যন্ত নিকৃষ্ট।
৩.১৫২ ) আর আল্লাহ্ সে ওয়াদাকে সত্যে পরিণত করেছেন, যখন তোমরা তাঁরই নির্দেশে ওদের খতম করছিলে। এমনকি যখন তোমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে ও কর্তব্য স্থির করার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়েছে। আর যা তোমরা চাইতে তা দেখার পর কৃতঘœতা প্রদর্শন করেছ, তাতে তোমাদের কারো কাম্য ছিল দুনিয়া আর কারো বা কাম্য ছিল আখেরাত। অত:পর তোমাদিগকে সরিয়ে দিলেন ওদের উপর থেকে যাতে তোমাদিগকে পরীক্ষা করেন। বস্তূত: তিনি তোমাদিগকে ক্ষমা করেছেন। আর আল্লাহ্র মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল।
৩.১৫৩ ) আর তোমরা উপরে উঠে যাচিছলে এবং পেছন দিকে ফিরে তাকাচিছলে না কারো প্রতি, অথচ রসূল ডাকছিলেন তোমাদিগকে তোমাদের পেছন দিক থেকে। অত:পর তোমাদের উপর এলো শোকের ওপরে শোক, যাতে তোমরা হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া বস্তূর জন্য দু:খ না কর এবং যার স¤মুখীণ হচছ সেজন্য বিমর্ষ না হও। আর আল্লাহ্ তোমাদের কাজের ব্যাপারে অবহিত রয়েছেন।
৩.১৫৪ ) অত:পর তোমাদের উপর শোকের পর শান্তি অবতীর্ণ করলেন, যা ছিল তন্তদ্রার মত। সে তন্তদ্রায় তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ ঝিমোচিছল আর কেউ কেউ প্রাণের ভয়ে ভাবছিল। আল্লাহ্ স¤পর্কে তাদের মিথ্যা ধারণা হচিছল মুর্খদের মত। তারা বলছিল আমাদের হাতে কি কিছুই করার নেই? তুমি বল, সবকিছুই আল্লাহ্র হাতে। তারা যা কিছু মনে লুকিয়ে রাখে-তোমার নিকট প্রকাশ করে না সে সবও। তারা বলে আমাদের হাতে যদি কিছু করার থাকতো, তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না। তুমি বল, তোমরা যদি নিজেদের ঘরেও থাকতে তবুও তারা অবশ্যই বেরিয়ে আসত নিজেদের অবস্থান থেকে যাদের মৃত্যু লিখে দেয়া হয়েছে। তোমাদের বুকে যা রয়েছে তার পরীক্ষা করা ছিল আল্লাহ্র ইচছা, আর তোমাদের অন্তরে যা কিছু রয়েছে তা পরি®কার করা ছিল তাঁর কাম্য। আল্লাহ্ মনের গোপন বিষয় জানেন।
৩.১৫৫ ) তোমাদের যে দুটি দল লড়াইয়ের দিনে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শয়তান তাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিল, তাদেরই পাপের দরুন।
৩.১৫৬ ) হে ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন কোন অভিযানে বের হয় কিংবা জেহাদে যায়, তখন তাদের স¤পর্কে বলে, তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো, তাহলে মরতোও না আহতও হতো না। যাতে তারা এ ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মনে অনুতাপ সৃষ্টি করতে পারে। অথচ আল্লাহই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তোমাদের সমস্তকাজই, তোমরা যা কিছুই কর না কেন, আল্লাহ সবকিছুৃই দেখেন।
৩.১৫৭ ) আর তোমরা যদি আল্লাহ্র পথে নিহত হও কিংবা মৃত্যুবরণ কর, তোমরা যা কিছু সংগ্রহ করে থাক আল্লাহ্ তা'আলার ক্ষমা ও করুণা সে সবকিছুর চেয়ে উত্তম।
৩.১৫৮ ) আর তোমরা মৃত্যুই বরণ কর অথবা নিহতই হও, অবশ্য আল্লাহ্ তা'আলার সামনেই সমবেত হবে।
১৫৯ ) আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হƒদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হƒদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচিছন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অত:পর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ্ তা'আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ্ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন।
৩.১৬০ ) যদি আল্লাহ্ তোমাদের সহায়তা করেন, তাহলে কেউ তোমাদের উপর পরাক্রান্ত হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহ্র ্ওপরই মুসলমানগনের ভরসা করা উচিত।
৩.১৬১ ) আর কোন বিষয় গোপন করে রাখা নবীর কাজ নয়। আর যে লোক গোপন করবে সে কিয়ামতের দিন সেই গোপন বস্তূ নিয়ে আসবে। অত:পর পরিপূর্ণভাবে পাবে প্রত্যেকে, যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোন অন্যায় করা হবে না।
৩.১৬২ ) যে লোক আল্লাহ্র ইচছার অনুগত, সে কি ঐ লোকের সমান হতে পারে, যে আল্লাহ্র রোষ অর্জন করেছে? বস্তূত: তার ঠিকানা হল দোযখ। আর তা কতইনা নিকৃষ্ট অবস্থান!
৩.১৬৩ ) আল্লাহ্র নিকট মানুষের মর্যাদা বিভিন্ন স্তরের আর আল্লাহ্ দেখেন যা কিছু তারা করে।
৩.১৬৪ ) আল্লাহ্ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তূত: তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট।
৩.১৬৫ ) যখন তোমাদের উপর একটি মুসীবত এসে পৌÍছাল, অথচ তোমরা তার পূর্বেই দ্বিগুণ কষ্টে পৌÍছে গিয়েছ, তখন কি তোমরা বলবে, এটা কোথা থেকে এল? তাহলে বলে দাও, এ কষ্ট তোমাদের উপর পৌঁÍছেছে তোমারই পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাশীল।
৩.১৬৬ ) আর যেদিন দু'দল সৈন্যের মোকাবিলা হয়েছে; সেদিন তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তা আল্লাহ্র হুকুমেই হয়েছে এবং তা এজন্য যে, তাতে ঈমানদারদিগকে জানা যায়।
৩.১৬৭ ) এবং তাদেরকে যাতে সনাক্ত করা যায় যারা মুনাফিক ছিল। আর তাদেরকে বলা হল এসো, আল্লাহ্র রাহে লড়াই কর কিংবা শত্রুদিগকে প্রতিহত কর। তারা বলেছিল, আমরা যদি জানতাম যে, লড়াই হবে, তাহলে অবশ্যই তোমাদের সাথে থাকতাম। সে দিন তারা ঈমানের তুলনায় কুফরীর কাছাকাছি ছিল। যা তাদের অন্তÍরে নেই তারা নিজের মুখে সে কথাই বলে বস্তুতঃ আল্লাহ্ ভালভাবে জানেন তারা যা কিছু গোপন করে থাকে।
৩.১৬৮ ) ওরা হলো যে সব লোক, যারা বসে থেকে নিজেদের ভাইদের স¤¦দ্ধে বলে, যদি তারা আমাদের কথা শুনত, তবে নিহত হত না। তাদেরকে বলে দিন, এবার তোমাদের নিজেদের উপর থেকে মৃত্যুকে সরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।
৩.১৬৯ ) আর যারা আল্লাহ্র রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত।
৩.১৭০ ) আল্লাহ্ নিজের অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তার প্রেক্ষিতে তারা আনন্তদ উদযাপন করছে। আর যারা এখনও তাদের কাছে এসে পৌঁÍছেনি তাদের পেছনে তাদের জন্যে আনন্তদ প্রকাশ করে। কারণ, তাদের কোন ভয় ভীতিও নেই এবং কোন চিন্তা ভাবনাও নেই।
৩.১৭১ ) আল্লাহ্র নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তারা আনন্তদ প্রকাশ করে এবং তা এভাবে যে, আল্লাহ্, ঈমানদারদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না।
৩.১৭২ ) যারা আহত হয়ে পড়ার পরেও আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য করেছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ ও পরহেযগার, তাদের জন্য রয়েছে মহান সওয়াব।
৩.১৭৩ ) যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবী দানকারী।
৩.১৭৪ ) অত:পর ফিরে এল মুসলমানরা আল্লাহ্র অনুগ্রহ নিয়ে, তদের কিছুই অনিষ্ট হলো না। তারপর তারা আল্লাহ্র ইচছার অনুগত হল। বস্তূত: আল্লাহ্র অনুগ্রহ অতি বিরাট।
৩.১৭৫ ) এরা যে রয়েছে, এরাই হলে শয়তান, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তবে আমাকে ভয় কর।
৩.১৭৬ ) আর যারা কুফরের দিকে ধাবিত হচেছ তারা যেন তোমাদিগকে চিন্তা¤ি¦ত করে না তোলে। তারা আল্লাহ্ তায়ালার কোন কিছুই অনিষ্ট সাধন করতে পারবে না। আখেরাতে তাদেরকে কোন কল্যাণ দান না করাই আল্লাহ্র ইচছা। বস্তূত: তাদের জন্যে রয়েছে মহা শাস্তি।
৩.১৭৭ ) যারা ঈমানের পরিবর্তে কুফর ক্রয় করে নিয়েছে, তারা আল্লাহ্ তা'আলার কিছুই ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
৩.১৭৮ ) কাফেররা যেন মনে না করে যে আমি যে, অবকাশ দান করি, তা তাদের পক্ষে কল্যাণকর। আমি তো তাদেরকে অবকাশ দেই যাতে করে তারা পাপে উ›¥তি লাভ করতে পারে। বস্তূত: তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্চনাজনক শাস্তি।
৩.১৭৯ ) নাপাককে পাক থেকে পৃথক করে দেয়া পর্যন্ত আল্লাহ এমন নন যে, ঈমানদারগণকে সে অবস্থাতেই রাখবেন যাতে তোমরা রয়েছ, আর আল্লাহ্ এমন নন যে, তোমাদিগকে গায়বের সংবাদ দেবেন। কিন্তূ আল্লাহ্ ¯¦ীয় রসূল গণের মধ্যে যাকে ইচছা বাছাই করে নিয়েছেন। সুতরাং আল্লাহর ওপর এবং তাঁর রসূলগণের ওপর তোমরা প্রত্যয় স্থাপন কর। বস্তূত: তোমরা যদি বিশ্বাস ও পরহেযগারীর ওপর প্রতিন্ঠিত থেকে থাক, তবে তোমাদের জন্যে রয়েছে বিরাট প্রতিদান।
৩.১৮০ ) আল্লাহ্ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে এই কার্পন্য তাদের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে। বরং এটা তাদের পক্ষে একান্তই ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হবে। যাতে তারা কার্পন্য করে সে সমস্ত ধন-স¤পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ী বানিয়ে পরানো হবে। আর আল্লাহ্ হচেছন আসমান ও যমীনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা কিছু তোমরা কর; আল্লাহ্ সে স¤পর্কে জানেন।
৩.১৮১ ) নি:সন্তেদহে আল্লাহ্ তাদের কথা শুনেছেন, যারা বলেছে যে, আল্লাহ্ হচেছন অভাবগ্রস্ত আর আমরা বিত্তবান! এখন আমি তাদের কথা এবং যেসব নবীকে তারা অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে তা লিখে রাখব, অত:পর বলব, আ¯¦াদন কর জ্বলন্ত আগুনের আযাব।
৩.১৮২ ) এ হল তারই প্রতিফল যা তোমরা ইতিপূর্বে নিজের হাতে পাঠিয়েছ। বস্তূত: আল্লাহ্ বান্তদাদের প্রতি অত্যাচার করেন না।
৩.১৮৩ ) সে সমস্ত লোক, যারা বলে যে, আল্লাহ্ আমাদিগকে এমন কোন রসূলের ওপর বিশ্বাস না করতে বলে রেখেছেন যতক্ষণ না তারা আমাদের নিকট এমন কোরবানী নিয়ে আসবেন যাকে আগুন গ্রাস করে নেবে। তুমি তাদের বলে দাও, তোমাদের মাঝে আমার পূর্বে বহু রসূল নিদর্শনসমূহ এবং তোমরা যা আব্দার করেছ তা নিয়ে এসেছিলেন, তখন তোমরা কেন তাদেরকে হত্যা করলে যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক।
৩.১৮৪ ) তাছাড়া এরা যদি তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে তোমার পূর্বেও এরা এমন বহু নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, যারা নিদর্শন সমূহ নিয়ে এসেছিলেন। এবং এনেছিলেন সহীফা ও প্রদীপ্ত গ্রন্ত’।
৩.১৮৫ ) প্রত্যেক প্রাণীকে আ¯¦াদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন স¤পদ নয়।
৩.১৮৬ ) অবশ্য ধন-স¤পদে এবং জনস¤পদে তোমাদের পরীক্ষা হবে এবং অবশ্য তোমরা শুনবে পূর্ববর্তী আহলে কিতাবদের কাছে এবং মুশরেকদের কাছে বহু অশোভন উক্তি। আর যদি তোমরা ধৈর্য্য ধারণ কর এবং পরহেযগারী অবল¤¦ন কর, তবে তা হবে একান্ত সৎসাহসের ব্যাপার।
৩.১৮৭ ) আর আল্লাহ্ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করলেন যে, তা মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং গোপন করবে না, তখন তারা সে প্রতিজ্ঞাকে নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল আর তার কেনা-বেচা করল সামান্য মূল্যের বিনিময়ে। সুতরাং কতই না মন্তদ তাদের এ বেচা-কেনা।
৩.১৮৮ ) তুমি মনে করো না, যারা নিজেদের কৃতকর্মের উপর আনন্তিদত হয় এবং না করা বিষয়ের জন্য প্রশংসা কামনা করে, তারা আমার নিকট থেকে অব্যাহতি লাভ করেছে। বস্তূত: তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
৩.১৮৯ ) আর আল্লাহ্র জন্যই হল আসমান ও যমিনের বাদশাহী। আল্লাহ্ই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতার অধিকারী।
৩.১৯০ ) নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ স¤পন্ন লোকদের জন্যে।
৩.১৯১ ) যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স¥রণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষযে, (তারা বলে) পরওয়ারদেগার! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে তুমি দোযখের শাস্তি থেকে বাঁচাও।
৩.১৯২ ) হে আমাদের পালনকর্তা! নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে নিক্ষেপ করলে তাকে সবসময়ে অপমানিত করলে; আর জালেমদের জন্যে তো সাহায্যকারী নেই।
৩.১৯৩ ) হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিশ্চিতরূপে শুনেছি একজন আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে যে, তোমাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আন; তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের পালনকর্তা! অত:পর আমাদের সকল গোনাহ মাফ কর এবং আমাদের সকল দোষত্রুটি দুর করে দাও, আর আমাদের মৃত্যু দাও নেক লোকদের সাথে।
৩.১৯৪ ) হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে দাও, যা তুমি ওয়াদা করেছ তোমার রসূলগণের মাধ্যমে এবং কিয়ামতের দিন আমাদিগকে তুমি অপমানিত করো না। নিশ্চয় তুমি ওয়াদা খেলাফ করো না।
৩.১৯৫ ) অত:পর তাদের পালনকর্তা তাদের দোয়া (এই বলে) কবুল করে নিলেন যে, আমি তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে পুরুষ হোক কিংবা স্ত্রীলোক। তোমরা পর¯পর এক। তারপর সে সমস্ত লোক যারা হিজরত করেছে, তাদেরকে নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি উৎপীড়ন করা হয়েছে আমার পথে এবং যারা লড়াই করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই আমি তাদের উপর থেকে অকল্যাণকে অপসারিত করব। এবং তাদেরকে প্রবিষ্ট করব জান্নাতে যার তলদেশে নহর সমূহ প্রবাহিত। এই হলো বিনিময় আল্লাহ্র পক্ষ থেকে। আর আল্লাহ্র নিকট রয়েছে উত্তম বিনিময়।
৩.১৯৬ ) নগরীতে কাফেরদের চাল-চলন যেন তোমাদিগকে ধোঁকা না দেয়।
৩.১৯৭ ) এটা হলো সামান্য ফায়দা-এরপর তাদের ঠিকানা হবে দোযখ। আর সেটি হলো অতি নিকৃষ্ট অবস্থান।
৩.১৯৮ ) কিন্তূ যারা ভয় করে নিজেদের পালনকর্তাকে তাদের জন্যে রয়েছে জান্নাত যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে প্রস্রবণ। তাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে সদা আপ্যায়ন চলতে থাকবে। আর যা আল্লাহর নিকট রয়েছে, তা সৎকর্মশীলদের জন্যে একান্তই উত্তম।
৩.১৯৯ ) আর আহলে কিতাবদের মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহ্র উপর ঈমান আনে এবং যা কিছু তোমার উপর অবতীর্ণ হয় আর যা কিছু তাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলোর উপর, আল্লাহ্র সামনে বিনয়াবনত থাকে এবং আল্লার আয়াতসমুহকে ¯¦ল্পমুল্যের বিনিময়ে সওদা করে না, তারাই হলো সে লোক যাদের জন্য পারিশ্রমিক রয়েছে তাদের পালনকর্তার নিকট। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যথাশীঘ্র হিসাব চুকিয়ে দেন।
৩.২০০ ) হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবল¤¦ন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার।

No comments:

Post a Comment