Tuesday, January 5, 2016

সূরা আল মায়িদা বাংলা অনুবাদ

৫.১ ) মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর। তোমাদের জন্য চতু®পদ জন্তূ হালাল করা হয়েছে, যা তোমাদের কাছে বিবৃত হবে তা ব্যতীত। কিন্তূ এহরাম বাধাঁ অবস্থায় শিকারকে হালাল মনে করো না! নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা যা ইচছা করেন, নির্দেশ দেন।
৫.২ ) হে মুমিনগণ! হালাল মনে করো না আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহ এবং স¤মানিত মাসসমূহকে এবং হরমে কুরবানীর জন্যে নির্দিষ্ট জন্তূকে এবং ঐসব জন্তূকে, যাদের গলায় কন্ঠাভরণ রয়েছে এবং ঐসব লোককে যারা স¤মানিত গৃহ অভিমুখে যাচেছ, যারা ¯¦ীয় পালনকর্তার অনুগ্রহ ও সন্তূষ্টি কামনা করে। যখন্ তোমরা এহরাম থেকে বের হয়ে আস, তখন শিকার কর। যারা পবিত্র মসজিদ থেকে তোমাদেরকে বাধা প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের শুত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহ্কে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা কঠোর শাস্তিদাতা।
৫.৩ ) তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গকৃত হয়, যা কন্ঠরোধে মারা যায়, যা আঘাত লেগে মারা যায়, যা উচচ স্থান থেকে পতনের ফলে মারা যা, যা শিং এর আঘাতে মারা যায় এবং যাকে হিংস্র জন্তূ ভক্ষণ করেছে, কিন্তূ যাকে তোমরা যবেহ করেছ। যে জন্তূ যজ্ঞবেদীতে যবেহ করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বন্তটন করা হয়। এসব গোনাহর কাজ। আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীন থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। অতএব তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান স¤পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্তদ করলাম। অতএব যে ব্যাক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে; কিন্তূ কোন গোনাহর প্রতি প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা'আলা ক্ষমাশীল।
৫.৪ ) তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে যে, কি বস্তূ তাদের জন্যে হালাল? বলে দিন: তোমাদের জন্যে পবিত্র বস্তূসমূহ হালাল করা হয়েছে। যেসব শিকারী জন্তূকে তোমরা প্রশিক্ষণ দান কর শিকারের প্রতি প্রেরণের জন্যে এবং ওদেরকে ঐ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দাও, যা আল্লাহ্ তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। এমন শিকারী জন্তূ যে শিকারকে তোমাদের জন্যে ধরে রাখে, তা খাও এবং তার উপর আল্লাহ্র নাম উচচারণ কর। আল্লাহ্কে ভয় করতে থাক। নিশ্চয় আল্লাহ্ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী।
৫.৫ ) আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তূসমূহ হালাল করা হল। আহলে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্যে হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল। তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৫.৬ ) হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন ¯¦ীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌÍত কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অত:পর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়া¤মুম করে নাও-অর্থাৎ, ¯¦ীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ্ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তূ তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি ¯¦ীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।
৫.৭ ) তোমরা আল্লাহ্র নেয়ামতের কথা স¥রণ কর, যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ঐ অঙ্গীকারকেও যা তোমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন, যখন তোমরা বলেছিলে: আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। আল্লাহ্কে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অন্তরের বিষয় স¤পর্কে পুরোপুরি খবর রাখেন।
৫.৮ ) হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহ্কে ভয় কর। তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ্ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।
৫.৯ ) যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, এবং সৎকর্ম স¤পাদন করে, আল্লাহ্ তােেদরকে ক্ষমা ও মহান প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
৫.১০ ) যারা অবিশ্বাস করে এবং আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার দোযখী।
৫.১১ ) হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স¥রণ কর, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের দিকে ¯¦ীয় হস্ত প্রসারিত করতে সচেষ্ট হয়েছিল, তখন তিনি তাদের হস্ত তোমাদের থেকে প্রতিহত করে দিলেন। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং মুমিনদের আল্লাহ্র উপরই ভরসা করা উচিত।
৫.১২ ) আল্লাহ্ বনী-ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন এবং আমি তাদের মধ্য থেকে বার জন সর্দার নিযুক্ত করেছিলাম। আল্লাহ বলে দিলেন: আমি তোমাদের সঙ্গে আছি। যদি তোমরা নামায প্রতিন্ঠিত কর, যাকাত দিতে থাক, আমার পয়গ¤¦রদের প্রতি বিশ্বাস রাখ, তাঁদের সাহায্য কর এবং আল্লাহ্কে উত্তম পন্ত’ায় ঋন দিতে থাক, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের গোনাহ দুর করে দিব এবং অবশ্যই তোমাদেরকে উদ্যান সমূহে প্রবিষ্ট করব, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে নিঝরিনীসমূহ প্রবাহিত হয়। অত:পর তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি এরপরও কাফের হয়, সে নিশ্চিতই সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে।
৫.১৩ ) অতএব, তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের দরুন আমি তাদের উপর অভিস¤পাত করেছি এবং তাদের অন্তরকে কঠোর করে দিয়েছি। তারা কালামকে তার স্থান থেকে বিচ্যুত করে দেয় এবং তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল, তারা তা থেকে উপকার লাভ করার বিষয়টি বি¯মৃত হয়েছে। আপনি সর্বদা তাদের কোন না কোন প্রতারণা স¤পর্কে অবগত হতে থাকেন, তাদের অল্প কয়েকজন ছাড়া। অতএব, আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং মার্জনা করুন। আল্লাহ্ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।
৫.১৪ ) যারা বলে: আমরা নাছারা, আমি তাদের কাছ থেকেও তাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম। অত:পর তারাও যে উপদেশ প্রাপ্ত হয়েছিল, তা থেকে উপকার লাভ করা ভুলে গেল। অত:পর আমি কেয়ামত পর্যন্ত তাদের মধ্যে পার¯পরিক শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিয়েছি। অবশেষে আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম স¤পর্কে অবহিত করবেন।
৫.১৫ ) হে আহলে-কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রাসূল আগমন করেছেন! কিতাবের যেসব বিষয় তোমরা গোপন করতে, তিনি তার মধ্য থেকে অনেক বিষয় প্রকাশ করেন এবং অনেক বিষয় মার্জনা করেন। তোমাদের কাছে একটি উজ্জল জ্যোতি এসেছে এবং একটি সমুজ্জল গ্রন্ত’।
৫.১৬ ) এর দ্বারা আল্লাহ্ যারা তাঁর সন্তূষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন এবং তাদেরকে ¯¦ীয় নির্দেশ দ্বারা অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং সরল পথে পরিচালনা করেন।
৫.১৭ ) নিশ্চয় তারা কাফের, যারা বলে, মসীহ ইবনে মরিয়মই আল্লাহ্। আপনি জিজ্ঞেস করুন, যদি তাই হয়, তবে বল যদি আল্লাহ্ মসীহ ইবনে মরিয়ম, তাঁর জননী এবং ভূমন্ডলে যারা আছে, তাদের সবাইকে ধ্বংস করতে চান, তবে এমন কারও সাধ্য আছে কি যে আল্লাহ্র কাছ থেকে তাদেরকে বিন্তদুমাত্রও বাঁচাতে পারে? নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, সবকিছুর উপর আল্লাহ্ তা'আলার আধিপত্য। তিনি যা ইচছা সৃষ্টি করেন। আল্লাহ্ সবকিছুর উপর শক্তিমান।
৫.১৮ ) ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা বলে, আমরা আল্লাহ্র সন্তান ও তাঁর প্রিয়জন। আপনি বলুন, তবে তিনি তোমাদেরকে পাপের বিনিময়ে কেন শাস্তি দান করবেন? বরং তোমারও অন্যান্য সৃষ্ট মানবের অন্তর্ভুক্ত সাধারণ মানুষ। তিনি যাকে ইচছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচছা শাস্তি প্রদান করেন। নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তাতে আল্লাহ্রই আধিপত্য রয়েছে এবং তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
৫.১৯ ) হে আহলে-কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রসূল আগমণ করেছেন, যিনি পয়গ¤¦রদের বিরতির পর তোমাদের কাছে পুখানুপুখ বর্ণনা করেন-যাতে তোমরা একথা বলতে না পার যে, আমাদের কাছে কোন সুসংবাদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শক আগমন করে নি। অতএব, তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শক আগমন করেননি। অতএব, তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শক এসে গেছেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান।
৫.২০ ) যখন মূসা ¯¦ীয় সম্প্রদায়কে বললেন: হে আমার সম্প্রদায়, তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র নেয়ামত স¥রণ কর, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে পয়গ¤¦র সৃষ্টি করেছেন, তোমাদেরকে রাজ্যাধিপতি করেছেন এবং তোমাদেরকে এমন জিনিস দিয়েছেন, যা বিশ্বজগতের কাউকে দেননি।
৫.২১ ) হে আমার সম্প্রদায়, পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ কর, যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং পেছন দিকে প্রত্যাবর্তন করো না। অন্যথায় তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
৫.২২ ) তারা বলল: হে মূসা, সেখানে একটি প্রবল পরাক্রান্ত জাতি রয়েছে। আমরা কখনও সেখানে যাব না, যে পর্যন্ত না তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়। তারা যদি সেখান থেকে বের হয়ে যায় তবে নিশ্চিতই আমরা প্রবেশ করব।'
৫.২৩ ) খোদাভীরুদের মধ্য থেকে দু'ব্যক্তি বলল, যাদের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন: তোমরা তাদের উপর আক্রমণ করে দরজায় প্রবেশ কর। অত:পর তোমরা যখন তাতে পবেশ করবে, তখন তোমরাই জয়ী হবে। আর আল্লাহ্র উপর ভরসা কর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
৫.২৪ ) তারা বলল: হে মূসা, আমরা জীবনেও কখনো সেখানে যাব না, যতক্ষণ তারা সেখানে থাকবে। অতএব, আপনি ও আপনার পালনকর্তাই যান এবং উভয়ে যুদ্ধ করে নিন। আমরা তো এখানেই বসলাম।
৫.২৫ ) মূসা বলল: হে আমার পালনকর্তা, আমি শুধু নিজের উপর ও নিজের ভাইয়ের উপর ক্ষমতা রাখি। অতএব, আপনি আমাদের মধ্যে ও এ অবাধ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে স¤পর্কচেছদ করুন।
৫.২৬ ) বললেন: এ দেশ চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের জন্যে হারাম করা হল। তারা ভুপৃন্ঠে উদভ্রান্ত হয়ে ফিরবে। অতএব, আপনি অবাধ্য সম্প্রদায়ের জন্যে দু:খ করবেন না।
৫.২৭ ) আপনি তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শুনান। যখন তারা ্ভয়েই কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের একজনের উৎসর্গ গৃহীত হয়েছিল এবং অপরজনের গৃহীত হয়নি। সে বলল: আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। সে বলল: আল্লাহ্ ধর্মভীরুদের পক্ষ থেকেই তো গ্রহণ করেন।
৫.২৮ ) যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে আমার দিকে হস্ত প্রসারিত কর, তবে আমি তোমাকে হত্যা করতে তোমার দিকে হস্ত প্রসারিত করব না। কেননা, আমি বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহ্কে ভয় করি।
৫.২৯ ) আমি চাই যে, আমার পাপ ও তোমার পাপ তুমি নিজের মাথায় চাপিয়ে নাও। অত:পর তুমি দোযখীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও। এটাই অত্যাচারীদের শাস্তি।
৫.৩০ ) অত:পর তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃহত্যায় উদুদ্ধ করল। অনন্তর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
৫.৩১ ) আল্লাহ্ এক কাক প্রেরণ করলেন। সে মাটি খনন করছিল যাতে তাকে শিক্ষা দেয় যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ কিভাবে আবৃত করবে। সে বলল: আফসোস, আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ আবৃত করি। অত:পর সে অনুতাপ করতে লাগল।
৫.৩২ ) এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গ¤¦রগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন। বস্তূত: এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।
৫.৩৩ ) যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচেছ এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহি®কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্চনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
৫.৩৪ ) কিন্তূ যারা তোমাদের গ্রেফতারের পূর্বে তওবা করে; জেনে রাখ, আল্লাহ্ ক্ষমাকারী, দয়ালু।
৫.৩৫ ) হে মুমিনগণ! আল্লাহ্কে ভয় কর, তাঁর নৈকট্য অনে¦ষন কর এবং তাঁর পথে জেহাদ কর যাতে তোমরা সফলকাম হও।
৫.৩৬ ) যারা কাফের, যদি তাদের কাছে পৃথিবীর সমুদয় স¤পদ এবং তৎসহ আরও তদনুরূপ স¤পদ থাকে আর এগুলো বিনিময়ে দিয়ে কিয়ামতের শাস্তি থেকে পরিত্রান পেতে চায়, তবুও তাদের কাছ থেকে তা কবুল করা হবে না। তাদের জন্যে যন্ত¿নাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
৫.৩৭ ) তারা দোযখের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে কিন্তূ তা থেকে বের হতে পারবে না। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে।
৫.৩৮ ) যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসেবে। আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হুশিয়ারী। আল্লাহ্ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়।
৫.৩৯ ) অত:পর যে তওবা করে ¯¦ীয় অত্যাচারের পর এবং সংশোধিত হয়, নিশ্চয় আল্লাহ্ তার তওবা কবুল করেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
৫.৪০ ) তুমি কি জান না যে আল্লাহর নিমিত্তেই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য। তিনি যাকে ইচছা শাস্তি দেন এবং যাকে ইচছা ক্ষমা করেন। আল্লাহ্ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
৫.৪১ ) হে রসূল, তাদের জন্যে দু:খ করবেন না, যারা দৌÍড়ে গিয়ে কুফরে পতিত হয়; যারা মুখে বলে: আমরা মুসলমান, অথচ তাদের অন্তর মুসলমান নয় এবং যারা ইহুদী; মিথ্যাবলার জন্যে তারা গুপ্তচর বৃত্তি করে। তারা অন্যদলের গুপ্তচর, যারা আপনার কাছে আসেনি। তারা বাক্যকে ¯¦স্থান থেকে পরিবর্তন করে। তারা বলে: যদি তোমরা এ নির্দেশ পাও, তবে কবুল করে নিও এবং যদি এ নির্দেশ না পাও, তবে বিরত থেকো। আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান, তার জন্যে আল্লাহর কাছে আপনি কিছু করতে পারবেন না। এরা এমনিই যে, আল্লাহ এদের অন্তরকে পবিত্র করতে চান না। তাদের জন্যে রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্চনা এবং পরকালে বিরাট শাস্তি।
৫.৪২ ) এরা মিথ্যা বলার জন্যে গুপ্তচরবৃত্তি করে, হারাম ভক্ষণ করে। অতএব, তারা যদি আপনার কাছে আসে, তবে হয় তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দিন, না হয় তাদের ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকুন। যদি তাদের থেকে নির্লিপ্ত থাকেন, তবে তাদের সাধ্য নেই যে, আপনার বিন্তদুমাত্র ক্ষতি করতে পারে। যদি ফয়সালা করেন, তবেন্যায় ভাবে ফয়সালা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন।
৫.৪৩ ) তারা আপনাকে কেমন করে বিচারক নিয়োগ করবে অথচ তাদের কাছে তওরাত রয়েছে। তাতে আল্লাহ্র নির্দেশ আছে। অত:পর এরা পেছন দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। তারা কখনও বিশ্বাসী নয়।
৫.৪৪ ) আমি তওরাত অবর্তীর্ন করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। আল্লাহ্র আজ্ঞাবহ পয়গ¤¦র, দরবেশ ও আলেমরা এর মাধ্যমে ইহুদীদেরকে ফয়সালা দিতেন। কেননা, তাদেরকে এ খোদায়ী গ্রন্তে’র দেখাশোনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং তাঁরা এর রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত ছিলেন। অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে ¯¦ল্পমূল্যে গ্রহণ করো না, যেসব লোক আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।
৫.৪৫ ) আমি এ গ্রন্তে’ তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং যখম সমূহের বিনিময়ে সমান যখম। অত:পর যে ক্ষমা করে, সে গোনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। যেসব লোক আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম।
৫.৪৬ ) আমি তাদের পেছনে মরিয়ম তনয় ঈসাকে প্রেরণ করেছি। তিনি পূর্ববর্তী গ্রন্ত’ তওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। আমি তাঁকে ইঞ্জিল প্রদান করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। এটি পূর্ববতী গ্রন্ত’ তওরাতের সত্যায়ন করে পথ প্রদর্শন করে এবং এটি খোদাভীরুদের জন্যে হেদায়েত উপদেশ বানী।
৫.৪৭ ) ইঞ্জিলের অধিকারীদের উচিত, আল্লাহ্ তাতে যা অবতীর্ণ করেছেন। তদানুযায়ী ফয়সালা করা। যারা আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী।
৫.৪৮ ) আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্ত’, যা পূর্ববতী গ্রন্ত’ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তূর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পার¯পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ্ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে এক উ¤মত করে দিতেন, কিন্তূ এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে ধর্ম দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। অতএব, দৌÍড়ে কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন কর। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অত:পর তিনি অবহিত করবেন সে বিষয়, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে।
৫.৪৯ ) আর আমি আদেশ করছি যে, আপনি তাদের পার¯পরিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তদনুযায়ী ফয়সালা করুন; তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না এবং তাদের থেকে সতর্ক থাকুন-যেন তারা আপনাকে এমন কোন নির্দেশ থেকে বিচ্যুত না করে, যা আল্লাহ্ আপনার প্রতি নাযিল করেছেন। অনন্তর যদি তার মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে নিন, আল্লাহ তাদেরকে তাদের গোনাহের কিছু শাস্তি দিতেই চেয়েছেন। মানুষের মধ্যে অনেকেই নাফরমান।
৫.৫০ ) তারা কি জাহেলিয়াত আমলের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ্ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী কে?
৫.৫১ ) হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুতঁ করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
৫.৫২ ) বস্তূত: যাদের অন্তরে রোগ রয়েছে, তাদেরকে আপনি দেখবেন, দৌÍড়ে গিয়ে তাদেরই মধ্যে প্রবেশ করে। তারা বলে: আমরা আশঙ্কা করি, পাছে না আমরা কোন দুর্ঘটনায় পতিত হই। অতএব, সেদিন দুরে নয়, যেদিন আল্লাহ্ তা'আলা বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দেবেন-ফলে তারা ¯¦ীয় গোপন মনোভাবের জন্যে অনুতপ্ত হবে।
৫.৫৩ ) মুসলমানরা বলবে: এরাই কি সেসব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করত যে, আমরা তোমাদের সাথে আছি? তাদের কৃতকর্মসমূহ বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে।
৫.৫৪ ) হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে ¯¦ীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ্ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহ্র পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহ্র অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচছা দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।
৫.৫৫ ) তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ্ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্তদ-যারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র।
৫.৫৬ ) আর যারা আল্লাহ্ তাঁর রসুল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহ্র দল এবং তারাই বিজয়ী।
৫.৫৭ ) হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহ্কে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও।
৫.৫৮ ) আর যখন তোমরা নামাযের জন্যে আহবান কর, তখন তারা একে উপহাস ও খেলা বলে মনে করে। কারণ, তারা নিবোর্ধ।
৫.৫৯ ) বলুন: হে আহলে কিতাবগণ, আমাদের সাথে তোমাদের এছাড়া কি শত্রুতা যে, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি আল্লাহ্র প্রতি, আমাদের উপর অবতীর্ণ গ্রন্তে’র প্রতি এবং পূর্বে অবতীর্ণ গ্রন্তে’র প্রতি। আর তোমাদের অধিকাংশই নাফরমান।
৫.৬০ ) বলুন: আমি তোমাদেরকে বলি, তাদের মধ্যে কার মন্তদ প্রতিফল রয়েছে আল্লাহ্র কাছে? যাদের প্রতি আল্লাহ্ অভিস¤পাত করেছেন, যাদের প্রতি তিনি ক্রোধা¤ি¦ত হয়েছেন, যাদের কতককে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন এবং যারা শয়তানের আরাধনা করেছে, তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সত্যপথ থেকেও অনেক দূরে।
৫.৬১ ) যখন তারা তোমাদের কাছে আসে তখন বলে দাও: আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অথচ তারা কুফর নিয়ে এসেছিল এবং কুফর নিয়েই প্রস্থান করেছে। তারা যা গোপন করত, আল্লাহ্ তা খুব জানেন।
৫.৬২ ) আর আপনি তাদের অনেককে দেখবেন যে, দৌÍড়ে দৌÍড়ে পাপে, সীমালঘনে এবং হারাম ভক্ষনে পতিত হয়। তারা অত্যন্ত মন্তদ কাজ করছে।
৫.৬৩ ) দরবেশ ও আলেমরা কেন তাদেরকে পাপ কথা বলতে এবং হারাম ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? তারা খুবই মন্তদ কাজ করছে।
৫.৬৪ ) আর ইহুদীরা বলে: আল্লাহ্র হাত বন্ধ হয়ে গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ হোক। একথা বলার জন্যে তাদের প্রতি অভিস¤পাত। বরং তাঁর উভয় হস্ত উ¤মুক্ত। তিনি যেরূপ ইচছা ব্যয় করেন। আপনার প্রতি পলনকর্তার পক্ষ থেকে যে কালাম অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর পরিবর্ধিত হবে। আমি তাদের পর¯পরের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিয়েছি। তারা যখনই যুদ্ধের আগুন প্রজ্জ্বলিত করে, আল্লাহ্ তা নির্বাপিত করে দেন। তারা দেশে অশান্তি উৎপাদন করে বেড়ায়। আল্লাহ্ অশান্তি ও বিশৃখলা সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্তদ করেন না।
৫.৬৫ ) আর যদি আহলে-কিতাবরা বিশ্বাস স্থাপন করত এবং খোদাভীতি অবল¤¦ন করত, তবে আমি তাদের মন্তদ বিষয়সমূহ ক্ষমা করে দিতাম এবং তাদেরকে নেয়ামতের উদ্যানসমূহে প্রবিষ্ট করতাম।
৫.৬৬ ) যদি তারা তাওরাত, ইঞ্জীল এবং যা প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, পুরোপুরি পালন করত, তবে তারা উপর থেকে এবং পায়ের নীচ থেকে ভক্ষণ করত। তাদের কিছুসংখ্যক লোক সৎপথের অনুগামী এবং অনেকেই মন্তদ কাজ করে যাচেছ।
৫.৬৭ ) হে রসূল, পৌÍছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌÍছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
৫.৬৮ ) বলে দিন: হে আহলে কিতাবগণ, তোমরা কোন পথেই নও, যে পর্যন্ত না তোমরা তওরাত, ইঞ্জীল এবং যে গ্রন্ত’ তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাও পুরোপুরি পালন না কর। আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে আপনার প্রতি যা অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর বৃদ্ধি পাবে। অতএব, এ কাফের সম্প্রদায়ের জন্যে দু:খ করবেন না।
৫.৬৯ ) নিশ্চয় যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, ছাবেয়ী বা খ্রীষ্টান, তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহ্র প্রতি, কিয়ামতের প্রতি এবং সৎকর্ম স¤পাদন করে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দু:খিত হবে না।
৫.৭০ ) আমি বনী-ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তাদের কাছে অনেক পয়গ¤¦র প্রেরণ করে ছিলাম। যখনই তাদের কাছে কোন পয়গ¤¦র এমন নির্দেশ নিয়ে আসত যা তাদের মনে চাইত না, তখন তাদের অনেকের প্রতি তারা মিথ্যারোপ করত এবংঅনেককে হত্যা করে ফেলত।
৫.৭১ ) তারা ধারণা করেছে যে, কোন অনিষ্ট হবে না। ফলে তারা আরও অন্ধ ও বধির হয়ে গেল। অত:পর আল্লাহ্ তাদের তওবা কবুল করলেন। এরপরও তাদের অধিকাংশই অন্ধ ও বধির হয়ে রইল। আল্লাহ্ দেখেন তারা যা কিছু করে।
৫.৭২ ) তারা কাফের, যারা বলে যে, মরিময়-তনয় মসীহ-ই আল্লাহ্; অথচ মসীহ বলেন, হে বণী-ইসরাঈল, তোমরা আল্লাহ্র এবাদত কর, যিনি আমার পালন কর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা। নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ্ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।
৫.৭৩ ) নিশ্চয় তারা কাফের, যারা বলে: আল্লাহ্ তিনের এক; অথচ এক উপাস্য ছাড়া কোন উপাস্য নেই। যদি তারা ¯¦ীয় উক্তি থেকে নিবৃত্ত না হয়, তবে তাদের মধ্যে যারা কুফরে অটল থাকবে, তাদের উপর যন্ত¿নাদায়ক শাস্তি পতিত হবে।
৫.৭৪ ) তারা আল্লাহ্র কাছে তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন? আল্লাহ্ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু।
৫.৭৫ ) মরিয়ম-তনয় মসীহ রাসুল ছাড়া আর কিছু নন। তাঁর পূর্বে অনেক রাসুল অতিক্রান্ত হয়েছেন আর তার জননী একজন ওলী। তাঁরা উভয়েই খাদ্য ভক্ষণ করতেন। দেখুন, আমি তাদের জন্যে কিরূপ যুক্তি-প্রমাণ বর্ননা করি, আবার দেখুন, তারা উলটা কোন দিকে যাচেছ।
৫.৭৬ ) বলে দিন: তোমরা কি আল্লাহ্ ব্যতীত এমন বস্তূর এবাদত কর যে, তোমাদের অপকার বা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না? অথচ আল্লাহ্ সব শুনেন ও জানেন।
৫.৭৭ ) বলুন: হে আহলে কিতাবগন, তোমরা ¯¦ীয় ধর্মে অন্যায় বাড়াবাড়ি করো না এবং এতে ঐ সম্প্রদায়ের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।
৫.৭৮ ) বনী-ইসলাঈলের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে দাউদ ও মরিয়মতনয় ঈসার মুখে অভিস¤পাত করা হয়েছে। এটা একারণে যে, তারা অবাধ্যতা করত এবং সীমা লংঘন করত।
৫.৭৯ ) তারা পর¯পরকে মন্তদ কাজে নিষেধ করত না, যা তারা করত। তারা যা করত তা অবশ্যই মন্তদ ছিল
৫.৮০ ) আপনি তাদের অনেককে দেখবেন, কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে। তারা নিজেদের জন্য যা পাঠিয়েছে তা অবশ্যই মন্তদ। তা এই যে, তাদের প্রতি আল্লাহ্ ক্রোধানি¦ত হয়েছেন এবং তারা চিরকাল আযাবে থাকবে।
৫.৮১ ) যদি তারা আল্লাহ্র প্রতি ও রসূলের প্রতি অবতীর্ণ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত, তবে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তূ তাদের মধ্যে অনেকেই দুরাচার।
৫.৮২ ) আপনি সব মানুষের চাইতে মুসলমানদের অধিক শত্রু ইহুদী ও মুশরেকদেরকে পাবেন এবং আপনি সবার চাইতে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বে অধিক নিকটবর্তী তাদেরকে পাবেন, যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্টান বলে। এর কারণ এই যে, খ্রীষ্টানদের মধ্যে আলেম রয়েছে, দরবেশ রয়েছে এবং তারা অহঙ্কার করে না।
৫.৮৩ ) আর তারা রসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা যখন শুনে, তখন আপনি তাদের চোখ অশ্রু সজল দেখতে পাবেন; এ কারণে যে, তারা সত্যকে চিনে নিয়েছে। তারা বলে: হে আমাদের প্রতি পালক, আমরা মুসলমান হয়ে গেলাম। অতএব, আমাদেরকেও মান্যকারীদের তালিকাভুক্ত করে নিন।
৫.৮৪ ) আমাদের কি ওযর থাকতে পারে যে, আমরা আল্লাহ্র প্রতি এবং যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে, তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব না এবং এ আশা করবো না যে, আমদের প্রতিপালক আমাদেরকে সৎ লোকদের সাথে প্রবিষ্ট করবেন?
৫.৮৫ ) অত:পর তাদেরকে আল্লাহ্ এ উক্তির প্রতিদান ¯¦রূপ এমন উদ্যান দিবেন যার তলদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হবে। তারা তন্মধ্যে চিরকাল অবস্থান করবে। এটাই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান।
৫.৮৬ ) যারা কাফের হয়েছে এবং আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলেছে, তারাই দোযখী।
৫.৮৭ ) হে মুমিনগণ, তোমরা ঐসব সু¯¦াদু বস্তূ হারাম করো না, যেগুলো আল্লাহ্ তোমাদের জন্য হালাল করেছেন এবং সীমা অতিক্রম করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্তদ করেন না।
৫.৮৮ ) আল্লাহ্ তা'য়ালা যেসব বস্তূ তোমাদেরকে দিয়েছেন, তন্মধ্য থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তূ খাও এবং আল্লাহ্কে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী।
৫.৮৯ ) আল্লাহ্ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তূ পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা ¯¦ীয় পরিবারকে দিয়ে থাক। অথবা, তাদেরকে বস্তূ প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে। যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা ¯¦ীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য ¯¦ীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা ¯¦ীকার কর।
৫.৯০ ) হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
৫.৯১ ) শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পর¯পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহ্র স¥রণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে?
৫.৯২ ) তোমরা আল্লাহ্র অনুগত হও, রসূলের অনুগত হও এবং আতœরক্ষা কর। কিন্তূ যদি তোমরা বিমুখ হও, তবে জেনে রাখ, আমার রসূলের দায়িত্ব প্রকাশ্য প্রচার বৈধ নয়।
৫.৯৩ ) যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে, সে জন্য তাদের কোন গোনাহ নেই যখন ভবিষ্যতের জন্যে সংযত হয়েছে, বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম স¤পাদন করেছে। এরপর সংযত থাকে এবং বিশ্বাস স্থাপন করে। এরপর সংযত থাকে এবং সৎকর্ম করে। আল্লাহ্ সৎকর্মীদেরকে ভালবাসেন।
৫.৯৪ ) হে মুমিনগণ, আল্লাহ্ তোমাদেরকে এমন কিছু শিকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন, যে শিকার পর্যন্ত তোমাদের হাত ও বর্শা সহজেই পৌÍছতে পারবে-যাতে আল্লাহ্ বুঝতে পারেন যে, কে তাকে অদৃশ্যভাবে ভয়করে। অতএব, যে ব্যক্তি এরপর সীমা অতিক্রম করবে, তার জন্য যন্ত¿নাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
৫.৯৫ ) মুমিনগণ, তোমরা এহরাম অবস্থায় শিকার বধ করো না। তোমাদের মধ্যে যে জেনেশুনে শিকার বধ করবে, তার উপর বিনিময় ওয়াজেব হবে, যা সমান হবে ঐ জন্তূর, যাকে সে বধ করেছে। দু'জন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি এর ফয়সালা করবে-বিনিময়ের জন্তূটি উৎসর্গ হিসেবে কাবায় পৌÍছাতে হবে। অথবা তার উপর কাফফারা ওয়াজেব-কয়েকজন দরিদ্রকে খাওয়ানো অথবা তার সমপরিমাণ রোযা রাখতে যাতে সে ¯¦ীয় কৃতকর্মের প্রতিফল আ¯¦াদন করে। যা হয়ে গেছে, তা আল্লাহ্ মাফ করেছেন। যে পুনরায় এ কান্ড করবে, আল্লাহ্ তার কাছ থেকে প্রতিশোধ নিবেন। আল্লাহ্ পরাক্রান্ত, প্রতিশোধ গ্রহণে সক্ষম।
৫.৯৬ ) তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও সুমুদ্রের খাদ্য হালাল করা হয়েছে তোমাদের উপকারার্থে এবং তোমাদের এহ্রামকারীদের জন্যে হারাম করা হয়েছে স্থল শিকার যতক্ষণ এহরাম অবস্থায় থাক। আল্লাহ্কে ভয় কর, যার কাছে তোমরা একত্রিত হবে।
৫.৯৭ ) আল্লাহ্ স¤মানিত গৃহ কাবাকে মানুষের স্থীতিশীলতার কারণ করেছেন এবং স¤মানিত মাসসমূকে, হারাম কোরবানীর জন্তূকে ও যাদের গলায় আবরণ রয়েছে। এর কারণ এই যে, যাতে তোমরা জেনে নাও যে, আল্লাহ্ নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের সব কিছু জানেন এবং আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী।
৫.৯৮ ) জেনে নাও, নিশ্চয় আল্লাহ্ কঠোর শাস্তি দাতা ও নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল-দয়ালূ।
৫.৯৯ ) রসূলের দায়িত্ব শুধু পৌÍছিয়ে দেওয়া। আল্লাহ্ জানেন, যা কিছু তোমরা প্রকাশ্যে কর এবং যা কিছু গোপন কর।
৫.১০০ ) বলে দিন: অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে বিসি¥ত করে। অতএব, হে বুদ্ধিমানগণ, আল্লাহ্কে ভয় কর-যাতে তোমরা মুক্তি পাও।
৫.১০১ ) হে মুমিণগন, এমন কথাবার্তা জিজ্ঞেস করো না, যা তোমাদের কাছে পরিব্যক্ত হলে তোমাদের খারাপ লাগবে। যদি কোরআন অবতরণকালে তোমরা এসব বিষয় জিজ্ঞেস কর, তবে তা তোমাদের জন্যে প্রকাশ করা হবে। অতীত বিষয় আল্লাহ্ ক্ষমা করেছেন আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, সহনশীল।
৫.১০২ ) এরূপ কথা বার্তা তোমাদের পুর্বে এক সম্প্রদায় জিজ্ঞেস করেছিল। এর পর তারা এসব বিষয়ে অবিশ্বাসী হয়ে গেল।
৫.১০৩ ) আল্লাহ্ ্ৗÍ৮২১৬;বহিরা' ্ৗÍ৮২১৬;সায়েবা' ওসীলা' এবং ্ৗÍ৮২১৬;হামী' কে শরীয়তসিদ্ধ করেননি। কিন্তূ যারা কাফের, তারা আল্লাহ্র উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে। তাদের অধিকাংশেরই বিবেক বুদ্ধি নেই।
৫.১০৪ ) যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ্র নাযিলকৃত বিধান এবং রসূলের দিকে এস, তখন তারা বলে, আমাদের জন্যে তাই যথেষ্ট, যার উপর আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে পেয়েছি। যদি তাদের বাপ দাদারা কোন জ্ঞান না রাখে এবং হেদায়েত প্রাপ্ত না হয় তবুও কি তারা তাই করবে?
৫.১০৫ ) হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের চিন্তা কর। তোমরা যখন সৎপথে রয়েছ, তখন কেউ পথভ্রান্ত হলে তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নাই। তোমাদের সবাইকে আল্লাহ্র কাছে ফিরে যেতে হবে। তখন তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন, যা কিছু তোমরা করতে।
৫.১০৬ ) হে, মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যখন কারও মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন ওছিয়ত করার সময় তোমাদের মধ্য থেকে ধর্মপরায়ন দুজনকে সাক্ষী রেখো। তোমরা সফরে থাকলে এবং সে অবস্থায় তোমাদের মৃত্যু উপস্থিত হলে তোমরা তোমাদের ছাড়াও দু ব্যক্তিকে সাক্ষী রেখো। যদি তোমাদের সন্তেদহ হয়, তবে উভয়কে নামাযের পর থাকতে বলবে। অত:পর উভয়েই আল্লাহ্র নামে কসম খাবে যে, আমরা এ কসমের বিনিময়ে কোন উপকার গ্রহণ করতে চাই না, যদিও কোন আতœীয়ও হয় এবং আল্লাহ্র সাক্ষ্য আমরা গোপন করব না। এমতাবস্থায় কঠোর গোনাহগার হব।
৫.১০৭ ) অত:পর যদি জানা যায় যে, উভয় ওসি কোন গোনাহে জড়িত রয়েছে, তবে যাদের বিরুদ্ধে গোনাহ হয়েছিল, তাদের মধ্য থেকে মৃতু ব্যক্তির নিকটতম দু'ব্যক্তি তাদের স্থলাভিষিক্ত হবে। অত:পর আল্লাহ্র নামে কসম খাবে যে, অবশ্যই আমাদের সাক্ষ্য তাদের সাক্ষ্যর চাইতে অধিক সত্য এবং আমরা সীমা অতিক্রম করিনি। এমতাবস্থায় আমরা অবশ্যই অত্যাচারী হব।
৫.১০৮ ) এটি এ বিষয়ের নিকটতম উপায় যে, তারা ঘটনাকে সঠিকভাবে প্রকাশ করবে অথবা আশঙ্কা করবে যে, তাদের কাছ থেকে কসম নেয়ার পর আবার কসম চাওয়া হবে। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং শুন, আল্লাহ্ দুরাচারীদেরকে পথ-প্রদর্শন করবেন না।
৫.১০৯ ) যেদিন আল্লাহ্ সব পয়গ¤¦রকে একত্রিত করবেন, অত:পর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে? তাঁরা বলবেন: আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে মহাজ্ঞানী।
৫.১১০ ) যখন আল্লাহ বলবেন: হে ঈসা ইবনে মরিয়ম, তোমার প্রতি ও তোমার মাতার প্রতি আমার অনুগ্রহ স¥রণ কর, যখন আমি তোমাকে পবিত্র আতœার দ্বারা সাহায্য করেছি। তুমি মানুষের সাথে কথা বলতে কোলেও এবং পরিণত বয়সেও এবং যখন আমি তোমাকে গ্রন্ত’, প্রগাঢ় জ্ঞান, তওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিয়েছি এবং যখন তুমি কাদামাটি দিয়ে পাখীর প্রতিকৃতির মত প্রতিকৃতি নির্মাণ করতে আমার আদেশে, অত:পর তুমি তাতে ফুঁ দিতে; ফলে তা আমার আদেশে পাখী হয়ে যেত এবং তুমি আমার আদেশে জন্মান্ধ ও কুষ্টরোগীকে নিরাময় করে দিতে এবং যখন আামি বনী-ইসরাঈলকে তোমা থেকে নিবৃত্ত রেখেছিলাম, যখন তুমি তাদের কাছে প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিলে, অত:পর তাদের মধ্যে যারা কাফের ছিল, তারা বলল: এটা প্রকাশ্য জাদু ছাড়া কিছুই নয়।
৫.১১১ ) আর যখন আমি হাওয়ারীদের মনে জাগ্রত করলাম যে, আমার প্রতি এবং আমার রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তখন তারা বলতে লাগল, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা অনুগত্যশীল।
৫.১১২ ) যখন হাওয়ারীরা বলল: হে মরিয়ম তনয় ঈসা, আপনার পালনকর্তা কি এরূপ করতে পারেন যে, আমাদের জন্যে আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্জা অবতরণ করে দেবেন? তিনি বললেন: যদি তোমরা ঈমানদার হও, তবে আল্লাহকে ভয় কর।
৫.১১৩ ) তারা বলল: আমরা তা থেকে খেতে চাই; আমাদের অন্তর পরিতৃপ্ত হবে; আমরা জেনে নেব যে, আপনি সত্য বলেছেন এবং আমরা সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাব।
৫.১১৪ ) ঈসা ইবনে মরিয়ম বললেন: হে আল্লাহ্ আমাদের পালনকর্তা আমাদের প্রতি আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্জা অবতরণ করুন। তা আমাদের জন্যে অর্থাৎ, আমাদের প্রথম ও পরবর্তী সবার জন্যে আনন্তেদাৎসব হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হবে। আপনি আমাদের রুযী দিন। আপনিই শ্রেষ্ট রুযীদাতা।
৫.১১৫ ) আল্লাহ্ বললেন: নিশ্চয় আমি সে খাঞ্চা তোমাদের প্রতি অবতরণ করব। অত:পর যে ব্যাক্তি এর পরেও অকৃতজ্ঞ হবে, আমি তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের অপর কাউকে দেব না।
৫.১১৬ ) যখন আল্লাহ্ বললেন: হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত কর? ঈসা বলবেন; আপনি পবিত্র! আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা ও জানেন এবং আমি জানি না যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত।
৫.১১৭ ) আমি তো তাদেরকে কিছ্ইু বলিনি, শুধু সে কথাই বলেছি যা আপনি বলতে আদেশ করেছিলেন যে, তোমরা আল্লাহ্র দাসতঁ অবল¤¦ন কর যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা আমি তাদের স¤পর্কে অবগত ছিলাম যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম। অত:পর যখন আপনি আমাকে লোকান্তরিত করলেন, তখন থেকে আপনিই তাদের স¤পর্কে অবগত রয়েছেন। আপনি সর্ববিষয়ে পূর্ণ পরিজ্ঞাত।
৫.১১৮ ) যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তারা আপনার দাস এবং যদি আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তবে আপনিই পরাক্রান্ত, মহাবিজ্ঞ।
৫.১১৯ ) আল্লাহ্ বললেন: আজকের দিনে সত্যবাদীদের সত্যবাদিতা তাদের উপকারে আসবে। তাদের জন্যে উদ্যান রয়েছে, যার তলদেশে নির্ঝরিনী প্রবাহিত হবে; তারা তাতেই চিরকাল থাকবে। আল্লাহ্ তাদের প্রতি   সন্তূষ্ট। এটিই মহান সফলতা।
৫.১২০ ) নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহ্রই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

No comments:

Post a Comment